মুক্ত আকাশের স্বাদ পেল খাঁচাবন্দি চার টিয়া
Published: 23rd, May 2025 GMT
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা গোপনে সংবাদ পেয়ে খাঁচাবন্দি চারটি টিয়া পাখি অবমুক্ত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নাটোরের সিংড়া উপজেলার কালিনগর গ্রামের দুটি বাড়ি থেকে পাখিগুলো উদ্ধার করা হয়।
এদিন নানা আয়োজনে বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস পালন করে চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি ও বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ)।
টিয়া পাখি অবমুক্ত করার সময় সিংড়ার ইউএনও মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন কুণ্ডু, চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটি এক যুগ ধরে চলনবিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে জানিয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্গম বিলের পাখি, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তারা ছুটে চলেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সংগঠনের চলনবিল গেট কার্যালয়ে বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়। বেলা ১১টায় কলম ইউনিয়নের নুরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ করা হয়। দুপুরে কালিনগরের দুটি বাড়ি থেকে খাঁচাবন্দি চারটি টিয়া পাখি উদ্ধারের পর জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়।
ইউএনও মাজহারুল ইসলাম বলেন, চলনবিলের পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এই পরিবেশকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। জীববৈচিত্র্য ও সরকারি জলাভূমি রক্ষায় প্রশাসনও তৎপর।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম চলনব ল রক ষ য়
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজগঞ্জের গ্রামটি শত শত পাখিতে মুখর
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উলিপুর গ্রাম। চলনবিলের শান্ত এ গ্রামে বহু শতাব্দী প্রাচীন শত বিঘা আয়তনের একটি দিঘির চারপাশে গড়ে উঠেছে মানুষের ঘরবসতি। এখানকার প্রাচীন একটি বটগাছসহ বিভিন্ন গাছে বাসা করেছে শত শত শামুকখোল পাখি। পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে গ্রামটি।
আলো ফুটতে না ফুটতেই অবারিত চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় খাবারের খোঁজে যেতে থাকে পাখির দল। তাদের এই ওড়াউড়ি মুগ্ধ করে আশপাশের বাসিন্দাদের।
গতকাল শনিবার পাখিদের গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, শামুকখোল পাখিদের কোনোটি বটগাছের কচি পাতায় ঠোকর দিচ্ছে, আবার কোনোটি ছানাদের আগলে রাখছে। এক ডাল থেকে আরেক ডালে ওড়াউড়ি করছে।
উলিপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আরশেদ আলী বলেন, প্রায় এক যুগ আগে শামুকখোল পাখিরা এখানে এসে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে বাচ্চা ফোটায়। ফলে তাদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকায় গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা কেউ পাখিদের বিরক্ত করবেন না। অন্যরা যেন না করেন, সেটাও নিশ্চিত করবেন। দর্শনার্থীরা এলে তাঁরা নিজেরাই মানুষকে সচেতন করেন।
মাহফুজা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, আগে শুধু তাঁদের আত্মীয়রা এ গ্রামে বেড়াতে আসতেন। এখন পাখি দেখতে অনেক মানুষ আসেন। পাখিদের বিশ্রামের জন্য গ্রামের মানুষ দিঘির পানিতে বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে গড়ে তুলেছেন আবাস। মাঝেমধ্যে খাবারও দেওয়া হয়।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’–এর পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ মৌসুমে তিনি একাধিকবার পাখি দেখতে উলিপুর গ্রামে গেছেন। শামুকখোলের দুটি প্রজাতির মধ্যে একটি এশীয়, আরেকটি আফ্রিকান। এই গ্রামে আসা শামুকখোল পাখিগুলো এশীয় প্রজাতির। এই শামুকখোল পাখি সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায় আছে।
শামুকখোল পাখিদের যাতে কেউ বিরক্ত না করেন, সেটা নিশ্চিত করেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার উলিপুর গ্রামের বাসিন্দারা