হোয়াটসঅ্যাপে ছবি বিনিময়, জিম্মি করে কলেজছাত্রী থেকে স্বর্ণালংকার, টাকা আদায়
Published: 23rd, May 2025 GMT
আড়াই মাস আগে নগরের একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পরিচয় হয় শাফায়েত উল্লাহ নামের এক কলেজছাত্রের। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠলে পরস্পরের ছবি বিনিময় করেন। এরপর কলেজছাত্রীর ছবি সম্পাদনা করে অশ্লীলভাবে তৈরি করেন ওই ছাত্র। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আদায় করা হয় ২১ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এরপরও থেমে থাকেননি শাফায়েত। আরও টাকা চাইলে বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের চকবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নগর–পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ছবি আদান–প্রদানের পর কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেন শাফায়েত। প্রথমে কলেজছাত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। তখন টাকা দিতে না পারায় তাঁর কাছে স্বর্ণালংকার চান। বাধ্য হয়ে মায়ের দুই ভরি ওজনের দুটি সোনার চুড়ি গত ৫ মার্চ নগরের দিদার মার্কেট এলাকায় শাফায়েতের হাতে তুলে দেন কলেজছাত্রী। কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার টাকা দাবি করেন। টাকা না থাকায় দফায় দফায় কানের দুল, নেকলেস, আংটিসহ মোট ২১ ভরি স্বর্ণালংকার তুলে দেন শাফায়েতের হাতে, যার মূল্য সাড়ে ৩১ লাখ টাকা।
পুলিশ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ২১ ভরি স্বর্ণালংকার পেয়েও ক্ষান্ত হননি শাফায়েত। তিনি আবারও ওই কলেজছাত্রীকে চাপ দিতে থাকেন। দাবি করেন দুই লাখ টাকা। গত ১৫ এপ্রিল নগরের চেরাগী মোড় এলাকায় ৩০ হাজার টাকাসহ দফায় দফায় মোট ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা তুলে দেন শাফায়েতের হাতে। কিন্তু আরও টাকা দাবি করতে থাকেন। শেষমেশ কলেজছাত্রী বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন।
ছবি আদান–প্রদানের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য আহ্বান জানান নগর পুলিশের উপকমিশনার আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ছবি যত কম শেয়ার করা যায়, তত নিরাপদ।
গ্রেপ্তার শাফায়েতকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
জিসানের মুক্তির দাবিতে যুব ফেডারেশন’র মানববন্ধন
‘আদালত প্রাঙ্গনে মব নিয়ে সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাকে 'মিথ্যা' আখ্যা দিয়ে এবং তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায়, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা।
শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে জেলা যুব ফেডারেশন আহ্বায়ক সাকিব হোসেন হৃদয়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম ইফতির সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জাহিদ সুজন।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব নারায়ণগঞ্জ এর দপ্তর সম্পাদক হারুন অর রশিদ আকাশ, মুখপাত্র গাজি রাকিবুল ইসলাম হিমেল, শ্রমিক সংহতি নারায়ণগঞ্জ এর সদস্য সচিব মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ এর সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, যুব নারায়ণগঞ্জ এর যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল মোল্লা এবং গণসংহতি জেলার অন্যতম নেতা আলমগীর ইসলাম আলম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে জাহিদ সুজন বলেন, "নারায়ণগঞ্জের ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সদস্য ও সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানকে ভুয়া মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।"
তিনি পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, "আমরা পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম জিসানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের প্রমাণ থাকলে হাজির করুন। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।"
তার দাবি, পুলিশ জানিয়েছে জিসানের গ্রেপ্তারের পেছনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রয়েছে। সুজন অভিযোগ করেন, "স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে একই রকমভাবে প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা হতো। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ বনাম ইসলামের নামে ভূয়া দ্বন্দ্ব তৈরি করে মানুষকে বিভাজিত করে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছিলো।"
জাহিদ সুজন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা গত ১৭ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে বলেছি, বাংলাদেশের মানুষ যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে।"
তিনি আন্তর্জাতিক প্রভাবের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, "একদিকে আমাদের পাশের দেশ ভারত অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বার্থে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করছে।"
২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে আলমগীর হোসেন আলম বলেন, "২৪'এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলাম। ন্যায় বিচার ব্যবস্থা দেখতে চেয়েছিলাম।"
তবে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের পরে আদালত-প্রশাসনে মব হাজির করে কিছু গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ আদায় করেছে।"
তিনি আরও দাবি করেন, "আমরা জানতে পেরেছি ১৮ নং ওয়ার্ডের এক মাদকাসক্ত ব্যক্তি বিএনপির নেতা বন্যায় ত্রাণ দুর্নীতি করেছিল, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণে জিসানকে প্রতিহিংসাবশত মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।"
এদিকে সভাপতির বক্তব্যে জেলা যুব ফেডারেশন আহ্বায়ক সাকিব হোসেন হৃদয় বলেন, আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানের পক্ষে। জিসানকে যে কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এটা একেবারে একটি বানোয়াট।
মেয়র আইভীকে গ্রেপ্তারের সময় জিসান নাকি পুলিশকে অবরুদ্ধ করেছে। আদতে সে সেদিন সেখানে ছিলোই না।
প্রশানকে বলতে চাই আপনাদের উপর নাগরিকদের অনাস্থা তৈরী হয়েছিলো, কিন্তু আপনাদের ক্ষমা করে নাগরিকরা আপনাদের প্রতি আস্থা তৈরী করেছে।
আপনারা পুনরায় আবার অনাস্থা ফিরিয়ে আনবেন না। আবার যদি আনেন তাহলে মাফ তো পাবেই না। আমরা সাংবাদিক ও আমাদের সবযোদ্ধা জান্নাতুল ফেরদৌস জিসানের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।