সিদ্ধিরগঞ্জে আব্দুল্লাহ খান রায়হান (১৬) নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

শনিবার (২৪ মে) নিহতের বাবা মো. সামিম খান (৪২) বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এরআগে শুক্রবার (২৩ মে) রাতে গোদনাইলের ধনকুন্ডা এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। 

এদিকে র‌্যাব-১১ ও থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ২ জনকে গোদনাইল ও ২ জনকে মিজমিজি পাইনাদী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা হলো- মো.

হৃদয় (৩০), সাব্বির (১৮), আল-আমিন (২০) ও জাহিদ (১৮)। পুলিশ ৭ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে গ্রেপ্তারকৃত ৩ জনকে আদালতে পাঠিয়েছে।

অপর ১ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। নিহত আব্দুল্লাহ খান রায়হান পরিবারের সাথে গোদনাইল উত্তর ধনকুণ্ডা এলাকার আতাবর শিকদারের ভাড়া বাড়িতে থাকতো।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত আব্দুল্লাহ খান রায়হান পিতার সঙ্গে স্থানীয় একটি এসি সার্ভিসিং দোকানে কাজ করতো। ছুটির দিন থাকায় শুক্রবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ডিএনডি লেকপাড় এলাকায় ঘুরতে যায়।

এক পর্যায়ে  আসামি মেহেদী ও শুভ সেখানে গিয়ে পূর্বের একটি মারামারির ঘটনার জেরে রায়হান ও তার বন্ধুদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক এবং হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। তখন শুভ মোবাইল ফোন করে পাইটু হৃদয়, আতিক ও আল-আমিনকে ডেকে আনে। 

এসময় রায়হান ও তার বন্ধুরা স্থান ত্যাগ করতে চাইলে হৃদয়, সাব্বির ও জাহিদ  তাদেরকে ধরে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে হৃদয়ের ক্লাবের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়েই এলোপাথারী মারপিট শুরু করে।

এক পর্যায়ে পাইটু হুদয় তার সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে আব্দুল্লাহ খান রায়হানের বুকের বাম পাশে আঘাত করে। এতে সে গুরুতর জখম হলে ঘটস্থলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। 

তখন রায়হানের সঙ্গে থাকা বন্ধুদের ডাক চিৎকারে লোকজন ছুটে এসে রায়হানকে উদ্ধার করে স্থানীয় সুফিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ খাঁনপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া গেলে সেখানকার কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিদ্ধিরগঞ্জর থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ