এক জোড়া দিয়ে শুরু, এখন ৭০০ পাখির এক খামারে সাবলম্বী দম্পতি
Published: 25th, May 2025 GMT
এক জোড়া দিয়ে শুরু, এখন ৭০০ পাখির এক খামারে সাবলম্বী দম্পশখ করে এক জোড়া পাখি কেনা থেকে শুরু। সেখান থেকেই ভাগ্য বদলেছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার সুলতান নগর গ্রামের সালমা সুলতানা ও লোমান রেজা দম্পতির। এখন তাঁদের খামারে আছে ২৫ প্রজাতির প্রায় ৭০০ পাখি। এই খামার থেকেই সংসারের অভাব দূর করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। গড়ে তুলেছেন গরুর খামার, ফলের বাগান, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ও দুই তলা বাড়ি।
জামালপুর সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বামুনজী বিলের পাশের গ্রাম সুলতান নগরে এই দম্পতির বাড়ি। গ্রামে ‘পাখির খামার’ বললেই সবাই সালমা ও লোমানকে চেনেন। অনেকে সালমাকে ‘পাখির মা’ বলেও ডাকেন। বাড়িতে ঢোকার পর চোখে পড়ে ফলের বাগান, পাশে গরুর খামার। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় আছে পাখির খামার। সম্প্রতি নিচতলা থেকে খামারটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
খামারে লাভবার্ড, বাজেরিগার, টিয়া, গিরিবাজ, ককটেল, নাইটিঙ্গেল, জেব্রা ফিঞ্চ, কবুতরসহ বর্তমানে আছে ২৫ প্রজাতির পাখি। আগে এই সংখ্যা ছিল ৪০ প্রজাতির এবং প্রায় তিন হাজার পাখি।
খামার দেখতে দেখতে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প শোনালেন এই দম্পতি। সালমা ও লোমান বলেন, বেকারত্বে হতাশ হয়ে ২০১২ সালে লোমান বিদেশ পাড়ি জমিয়েছিলেন। চার বছর পর ফিরে এসে শখের বসে এক জোড়া পাখি পালতে শুরু করেন। সেই এক জোড়া পাখি থেকেই গড়ে ওঠে বাণিজ্যিক খামার। ইউটিউব দেখে শিখেছেন পাখি পালনের কৌশল। মাস শেষে খরচ বাদে আয় হয় প্রায় এক থেকে দুই লাখ টাকা।
বর্তমানে খামারে আছে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা দামের জোড়া জাপানি বাজেরিগার, ৬০ হাজার টাকার কবুতর এবং সর্বনিম্ন এক হাজার টাকার লাভবার্ড। খামারের আয় দিয়েই দুই তলা বাড়ি করেছেন, যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫৫ লাখ টাকা। বাড়ির পাশে ২২ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন ফলের বাগান। এ ছাড়া জামালপুর শহরের দিগপাইত এলাকায় দুটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসাতেও যুক্ত হয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মানি লন্ডারিং মামলায় সেই পাপিয়ার চার বছরের কারাদণ্ড
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর বিচারক মঞ্জুরুল হোসেন আজ রোববার এই রায় দেন। রায় ঘোষণার পর পলাতক পাপিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
পাপিয়ার আইনজীবী সাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, একই মামলায় খালাস পেয়েছেন পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী এবং পাপিয়ার সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তাইবা নূর ও জুবায়ের আলম।
আরও পড়ুনজামিনে মুক্তি পেলেন যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী পাপিয়া২৪ জুন ২০২৪এর আগে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর অস্ত্র আইনের মামলায় পাপিয়া ও তাঁর স্বামীকে সর্বোচ্চ ২০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার পাঁচ তারকা একটি হোটেলে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন পাপিয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে আঁচ পেয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে পাপিয়ার বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল স্যুট ও ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে বিদেশি একটি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পিস্তলের ২০টি গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার নগদ টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, কিছু বিদেশি মুদ্রা ও এটিএম কার্ড জব্দ করেছিল র্যাব।
আরও পড়ুনপাপিয়া আবিষ্কার-কাহিনি২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০র্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় রাজধানীর ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট, ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ, নরসিংদী জেলায় কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড অটো সলিউশন নামে প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করে র্যাব। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অবৈধ পাঁচ কোটি টাকার খোঁজ পেয়ে পাপিয়া ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা করে। গত বছরের জুনে জামিনে ছাড়া পান পাপিয়া।
আরও পড়ুনকারাগারেও অপরাধে সেই পাপিয়া২০ জুলাই ২০২৩