পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে গতকাল শনিবার ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৯০ জনের বেশি। পাঞ্জাবের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) ও জরুরি উদ্ধার তৎপরতা সেবাবিষয়ক হটলাইন ১১২২ হতাহত মানুষের এ সংখ্যা জানিয়েছে।

বৈরী আবহাওয়াকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে সড়ক ও উড়োজাহাজ চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ইসলামাবাদেও ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। সেখানকার অনেক নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। একাধিক স্থানে গাছ উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে প্রচণ্ড বাতাস ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈদ্যুতিক সংযোগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেখানে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে করাচি থেকে লাহোরগামী একটি বেসরকারি উড়োজাহাজ আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার সময় তীব্র ঝাঁকুনির মুখে পড়ে এবং অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়।

পাঞ্জাব প্রদেশের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) এবং ১১২২ হটলাইন সেবা থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘরবাড়ির দেয়াল ও ছাদ ধসে পড়া এবং গাছ উপড়ে পড়ার কারণে লাহোরে ৩ জন, ঝিলামে ৩, শিয়ালকোটে ২, মুজাফফরগড়ে ২, শেখুপুড়ায় ১, নানকানা সাহিব এলাকায় ১, আটক এলাকায় ১, মুলতানে ১, রাজনপুরে ১, হাফিজাবাদে ১, মিয়াওয়ালিতে ১, ঝাং এলাকায় ১ এবং লেয়াহ এলাকায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিভিন্ন স্থানে সোলার প্যানেল ও বিলবোর্ড পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

পিডিএমএর মহাপরিচালক ইরফান আলী কাথিয়া এক বিবৃতিতে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ও ঝড়ের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে পাঞ্জাবে উপকমিশনার ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার কারণে পুলিশ বেশ কয়েকটি সড়কপথ বন্ধ করে দিয়েছে। বজ্রপাতের কারণে লাহোর থেকে মুলতান যাওয়ার বিভিন্ন মহাসড়কে চলাচল ব্যাহত হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় ১ র খবর

এছাড়াও পড়ুন:

ইলিশের দাম এত বেশি কেন, জানতে চেয়ে ‘ভালো উত্তর’ পাননি মৎস্যসচিব

ইলিশ মাছ উৎপাদনে পোনা ছাড়তে হয় না, খাবার দিতে হয় না, তা–ও এত বেশি দাম কেন—সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে কোনো ‘ভালো উত্তর’ এখনো পাননি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেছেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই আমার মনে প্রশ্ন ছিল—ইলিশের এত দাম কেন।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে বিশ্ব খাদ্য দিবসের এক অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান। কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এই সেমিনারে আয়োজন করে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ইলিশের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বলা হয় মাছ ধরতে খরচ বেশি। আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের জন্য দাম বেড়ে যায়। ঢাকা এলে দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। গবেষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব বিষয় জেনেছি। এসব নিয়ে আরও কাজ করার আছে।

আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, এখন ধানের জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে কোনো মাছ হয় না। এগুলোর ব্যবহার কমানো নিয়ে গবেষণা করা দরকার। প্রাণী খাদ্যের দামের কারণে মাছ ও দুধ ডিমের দাম বেড়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রথম আলোর সংবাদ উদ্ধৃত করে সচিব বলেন, পত্রিকায় দেখলাম এখন বিড়ালের জন্যও বছরে ৪০০ কোটি টাকার বিদেশি খাদ্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু আমাদের সময়ে বিড়ালের জন্যে বাজার থেকে খাবার আনতে হতো না। এসব খাবার এখন দেশেই তৈরি করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, দেশের কৃষি উৎপাদনের সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা কৃষক ও কৃষিবিদদের। উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বাজারের সংযোগ খুবই সামান্য। তাই কৃষকদের অবস্থা এখন এখন হাসন রাজার ‘পরের জায়গা পরের জমি’ গানের মতো।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রায় ৭৬ শতাংশ জমি মোটামুটি অনুর্বর ধরনের, যার পরিমাণ বাড়ছে। বছরে মাথাপিছু খাদ্যের অপচয় আবার গড়ে ৮২ কেজি। তাই দুর্যোগপ্রবণ এই দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সব সময় প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কোনো একক প্রতিষ্ঠান বা কারও একার পক্ষে এটা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ জন্য শিক্ষক, গবেষক, সরকার, কৃষক সবাই মিলে কাজ করতে হবে।

এর আগে সেমিনারের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এইচ এম সাইফুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দিয়া সানো। অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ