সীমান্ত দিয়ে আরো ১২১ জনের প্রবেশ, ডাকা হয়েছে স্বজনদের
Published: 25th, May 2025 GMT
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা নারী ও শিশুসহ ১২১ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
রবিবার (২৫ মে) ভোরে তাদের আটক করা হয়। বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আটককৃতদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আরো ২০ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
শিবচরে র্যাব পরিচয়ে প্রতারণা: বরখাস্ত হওয়া সেনা সদস্য আটক
বিজিবি সূত্র জানায়, রবিবার ভোরে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে দেশে প্রবেশের সময় নারী ও শিশুসহ ১২১ জনক আটক করা হয়। বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন লাতু বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা ৭৯ জনকে এবং পাল্লাথল বিজিপি ক্যাম্পের সদস্যরা ৪২ জনকে আটক করেন। পরিচয় যাচাই-বাছাই শেষে আটককৃতদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
এছাড়াও সিলেটের বিয়ানীবাজার সীমান্তের নয়াগ্রাম বিওপি দিয়ে অনুপ্রবেশ করা আরো ৩২ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
বড়লেখা থানার ওসি আবুল কাশেম সরকার বলেন, “বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের সময় নারী ও শিশুসহ ১২১ জনক আটক করেছে বিজিবি। সকালে তাদের বড়লেখা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। স্বজনরা এলে তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হবে।”
গত ৯ মে ভোরের দিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ জন বাংলাদেশি এবং তিনজন ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করে। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাস করছিলেন। তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
এর আগে, গত ৭ মে ভোরের দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী ও ভূরুঙ্গামারী সীমান্তে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পুশইন করা ৮ বাংলাদেশিসহ ৪৪ জনকে আটক করে বিজিবি। তাদের মধ্যে রৌমারী সীমান্তে ৩০ জন ও ভূরুঙ্গামারী সীমান্ত থেকে ১৪ জনকে আটক করা হয়।
সেসময় রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান জানান, ভোররাতে রৌমারী বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ৩০ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এদের মধ্যে ২২ জন রোহিঙ্গা। আটককৃতদের পরিচয় যাছাই করছে বিজিবি।
কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবি ব্যাটারিয়নের অধিনায়ক লে.
সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ১৬ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তাদের মধ্যে আটজন পুরুষ, ছয়জন নারী ও দুইজন শিশু। গত ১৪ মে সকালে বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের একটি টহল দল তাদের আটক করে। বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুবায়ের আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক র বড়ল খ প রব শ শ শ সহ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, নারীসহ আহত ৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির সময় চাহিদামতো অর্থ ও মালামাল না পেয়ে সশস্ত্র ডাকাতরা মরদেহের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় ডাকাতের হামলায় নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনদের চোখের সামনে মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাতের এই দৃশ্য এলাকাজুড়ে সৃষ্টি করেছে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক। স্থানীয়দের দাবি, এমন জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ আগে কখনো দেখেননি তারা।
ডাকাতের হামলায় আহতরা হলেন- গাড়ির চালক মো. ফিরুজ মিয়া, গাড়ির মালিক মো. খলিল মিয়া, নিহতের স্বজন রাসেল মিয়া, ছালেক মিয়া, নাহিদ মিয়া, মো. আলমগীর মিয়া, মো. সালাউদ্দিন, আলেয়া বেগম ও আলী নেওয়াজ মিয়া।
ভুক্তভোগীদের স্বজনদের ভাষ্যমতে, পূর্বভাগ ইউনিয়নের মুকবুলপুর গ্রামের ছবদর আলী নামে এক ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার মিরপুর আহসানিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মারা যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে ফেরার পথে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় আসলে সশস্ত্র ডাকাতরা সড়কে গাছ ফেলে পথ রোধ করে গাড়ি আটক করেন। এরপর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে ৯টি মুঠোফোন ও নগদ অর্ধলাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ডাকাত দল।
ডাকাতদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ ও মালামাল না পাওয়ায় মরদেহের ওপরও হামলা করা হয় বলে দাবি করেন নিহতের ছেলে মো. আলমগীর মিয়া।
আলমগীর মিয়া বলেন, টাকা পয়সা নিছে সেটা এতোটা কষ্টদায়ক না। কিন্তু আমার বাবা একটি মৃত লাশ। তার ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বাবার লাশ দাফন করে আইনগত পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হব।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুসলে উদ্দিন বলেন, ভোর সকাল এবং সন্ধ্যায় এই রাস্তাটি ভুতুড়ে জায়গায় পরিণত হয়। এই সড়কে কিছুদিন পরপর ডাকাতি হয়। রাতের চেয়ে বেশি দিনে হয়।
আজহারুল ইসলাম দুর্জয় বলেন, ঢাকা থেকে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারলেও এই সড়কটিতে আসার পর আতঙ্কে সময় কাটে।
স্থানীয় আইনজীবী মো. রেজাউল হক আমজাদ বলেন, এটি কেবল ডাকাতি নয়, লাশবাহী গাড়িতে হামলা। যেখানে মর্যাদার শেষ চিহ্নটুকুও রক্ষা পায়নি। স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়া একটি পরিবারের ওপর এমন ডাকাতির হামলা খুবই ন্যক্কারজনক।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, এ এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগেও একাধিকবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, লাশবাহী গাড়িতে ডাকাতি খুবই পীড়াদায়ক।