এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বে চার দলেরই পয়েন্ট সমান ১। গ্রুপ ‘সি’তে বাংলাদেশ, ভারত, হংকং ও সিঙ্গাপুর নিজেদের প্রথম ম্যাচে ড্র করেছিল। আগামী ১০ জুন চার দলই মাঠে নামবে। এদিন ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। হামজা চৌধুরী-শমিত সোম খেলবেন বলে সেই ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ এখনই শুরু হয়ে গেছে। টিকিট নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ দেখে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়ালও। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দলের জয়ে আশাবাদী বাফুফে সভাপতি।
গতকাল সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এই ম্যাচ নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস এভাবেই প্রকাশ করেন তাবিথ, ‘আমি আশাবাদী এখনও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে। আমাদের গ্রুপটি বেশ কঠিন। প্রতি দলেরই এক পয়েন্ট এবং গোলও শূন্য। সিঙ্গাপুর ম্যাচের পর টেবিলের অবস্থান নিশ্চয়ই বদলাবে। আমি সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী।’
সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট নিয়ে ভজঘট পাকিয়ে ফেলেছে টিকিটিং পার্টনার টিকিফাই। শনিবার রাত ৮টার পর অনলাইনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরুর ৩ ঘণ্টার মধ্যে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয় টিকিফাই। সাইবার আক্রমণের শিকার হয়ে আপাতত টিকিট কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাফুফে থেকে জানানো হয়েছে রোববার রাতে আবার টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হবে। কিন্তু সোমবার সারাদিনেও টিকিট বিক্রি শুরু করেনি টিকিফাই। অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে টিকিট বিক্রির পার্টনার করায় সমালোচনা হচ্ছে ফুটবলাঙ্গনে।
বাফুফে সভাপতিও তাদের ভুলগুলো স্বীকার করেছেন, ‘বাফুফে সব সময় ইনোভেটিভ কাজ করে থাকে। প্রথমবার ভুলত্রুটি হতে পারে। এটা স্বীকার করে নিয়েছি। দুটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে সাইবার আক্রমণ হয়েছে। এজন্য সার্ভার ডাউন ছিল। টিকিট সংগ্রহ থেকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ পর্যন্ত আমরা নজরদারি রাখব। ১০ জুন ম্যাচ; এখনও অনেক সময় আছে।’
জাতীয় স্টেডিয়ামে সাধারণ গ্যালারির আসন সংখ্যা ১৮ হাজার তিনশর মতো। ভিআইপিসহ অন্যান্য মিলিয়ে আরও ৪ হাজার আসন আছে। সবমিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে সব ফুটবলপ্রেমী টিকিট পাবেন না, এটা নিশ্চিত। তাই বাফুফের পক্ষ থেকে আটটি বিভাগীয় শহরে ফ্যান জোন করা হবে বলে জানিয়েছেন তাবিথ, ‘স্টেডিয়াম গ্যালারি ১৮ হাজার, এর বাইরে হাজার দুয়েক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাস্তবতা, অনেক সমর্থককে সীমিত আসনের জন্য স্টেডিয়াম বাইরে থাকতে হবে। তাদের জন্য আমরা বাইরে ব্যবস্থা করব। আটটি বিভাগীয় শহরে ফ্যান জোন করা হচ্ছে।’
দর্শকদের আগ্রহতেই বোঝা যাচ্ছে দেশের ফুটবলে সুবাতাস বইছে। অনেকের মতে হামজা চৌধুরীর কারণেই ফুটবল নিয়ে এত উচ্ছ্বাস। বাফুফে সভাপতি তাবিথ এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার ফল বলে মনে করছেন, ‘বাফুফে ফুটবল নিয়ে ধারাবাহিক কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় পুরুষ দলের পাশাপাশি নারী, কোচিং, রেফারি, টেকনিক্যাল– সব বিভাগেই আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ