লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধে ধস নেমেছে। অতি ভারী বৃষ্টিপাত ও অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রবল চাপে এ ঘটনার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা অতিদ্রুত বাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে উপজেলা সদর আলেকজান্ডার এবং বড়খেরীর বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। বাঁধগুলো এখনও ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি স্থানীয়দের। এ বাঁধগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে আশপাশের এলাকাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ঝুঁকি এড়াতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধগুলো মেরামত করা হবে।
সরেজমিন উপজেলা সদর আলেকজান্ডার ও রামগতি মাছঘাট তীর রক্ষা বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আসলপাড়া লঞ্চঘাট থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার মেঘনা নদীর তীর রক্ষায় বেড়িবাঁধের ছোট-বড় ১০-১২টি স্থানে সিসি ব্লকের (সিমেন্ট কংক্রিটের ব্লক) নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ব্লকগুলো দেবে গেছে। এদিকে উপজেলার বড়খেরী এলাকায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ব্লকের নিচ থেকে মাটি সরে আট থেকে দশটি স্পটে সিসি ব্লকগুলো দেবে গেছে। বাঁধটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। এ বাঁধটির বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হলে রামগতি বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলো চরম ঝুঁকিতে পড়বে।
আলেকজান্ডার বেড়িবাঁধ এলাকার চা দোকানি দুধা মিয়া জানান, ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে নদীতে প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাঁধটির কয়েকটি জায়গায় নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সিসি ব্লক দেবে গেছে। এতদিনেও তা ঠিক করা হয়নি, বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলোর দ্রুত মেরামত জরুরি।
বড়খেরী বেড়িবাঁধ এলাকার বাদাম বিক্রেতা সুকুন্দু দাস জানান, নদীর প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাঁধটির কয়েকটি জায়গায় দেবে গেছে। এতে করে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ঝুঁকি এড়াতে বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন।
পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আ ম ম নঈম বলেন, এলাকাগুলো আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। আশা করি, আগামী অর্থবছরে তা সমাধান হয়ে যাবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি টিম ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। লঘুচাপের প্রভাবে নদীতে তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে এমনটা হয়েছে। এতে আলেকজান্ডার ও বড়খেরী এলাকায় তীর রক্ষা বাঁধে কিছু কিছু সিসি ব্লক ধস দেখা দিয়েছে। জরুরিভাবে বাঁধটি সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাব ও ভারী বর্ষণে বেড়িবাঁধের কয়েক জায়গায় ধস ও বেড়িবাঁধের ওপরে গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে বাঁধের ক্ষতি হয়। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে সরেজমিন দেখতে আসেন। আসা করছি, পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুতই ব্যবস্থা নেবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র রক ষ ধ এল ক বড়খ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সেই খাদিজাতুলকে জিএস প্রার্থী করে জকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের সমন্বিত প্যানেল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে সমন্বিত প্যানেল ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। এতে জিএস পদে মনোয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাইবার নিরাপত্তা মামলায় কারাগারে থাকা খাদিজাতুল কুবরাকে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং ক্যাম্পাসে পরিচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’। প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়বেন ছাত্র অধিকার পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি এ কে এম রাকিব। এজিএস পদে লড়বেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আতিকুর রহমান তানজীল।

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মুনতাসির মুকুল।

ঘোষিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে। এজিএস পদপ্রার্থী আতিকুর রহমান তানজীল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

সমন্বিত প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক পদে অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মাশফিকুল ইসলাম রাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আল শাহরিয়ার শাওন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে অর্ঘ্য শ্রেষ্ঠ দাস, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে অপু মুন্সী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে তাকরিম আহমেদ ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কামরুল হাসান নাফিজ মনোনয়ন পেয়েছেন। এ ছাড়া পরিবহন সম্পাদক পদে মাহিদ হাসান, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক পদে আনন বিন রহমান এবং পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে রিয়াসাল রাকিব মনোনয়ন পেয়েছেন।

এ ছাড়া সাতটি সদস্য পদের মধ্যে ছয়টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আরেকটি সদস্যপদের প্রার্থী পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে। সদস্য পদে লড়বেন ইমরান হাসান ইমন, সাদমান সাম্য, সুলতান মাহমুদ শুভ, মনিরুজ্জামান মনির, তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও আরিফুল ইসলাম আরিফ।

প্যানেল ঘোষণার পর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব অধিকার বাস্তবায়নে আমাদের এই প্যানেলে যে নাম ঘোষণা করলাম, সেই মনোনীত সদস্যরা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রচেষ্টা চালাবে। আমরা যাদের প্যানেলে রেখেছি, বিগত সময়ে তারা শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ, আন্দোলনসহ সকল কর্মকাণ্ডে মেধা-মনন দিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা তাদের মূল্যায়ন করবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২২ ডিসেম্বর। কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের পাশাপাশি একই দিন একটি ছাত্রী হল সংসদের নির্বাচনও হবে। ফলাফল ঘোষণা হবে ২২-২৩ ডিসেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ