স্বাভাবিক প্রসব বা নরমাল ডেলিভারি অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। মায়ের ও গর্ভে থাকা সন্তানের শারীরিক অবস্থা নির্দেশ করে প্রসব স্বাভাবিক হবে নাকি অস্ত্রোপচার দরকার হতে পারে। তবে সবকিছু স্বাভাবিক ও মা–শিশু সুস্থ থাকলে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য চেষ্টা করা হয়। গর্ভাবস্থায় সঠিক ব্যায়াম এই প্রক্রিয়াকে সহজ, নিরাপদ ও আরামদায়ক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ব্যায়ামের উপকারিতা

ব্যায়াম শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করে। পেট, পিঠ, পেলভিস ও ঊরুর পেশিকে শক্তিশালী করে। গর্ভধারণ ও প্রসবের সময় যেসব পেশি বেশি ব্যবহৃত হয়, সেগুলো সুসংহত হয়ে ওঠে।

ব্যায়াম প্রসবকালীন ব্যথা সহ্য করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়ামে শরীরের সহনশক্তি বাড়ে, ফলে প্রসবের সময় ব্যথা সহজে সহ্য করা যায়।

শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষ কিছু ব্যায়াম, যেমন ডিপ ব্রিদিং ও ল্যামাজ পদ্ধতি প্রসবের সময় শান্ত থাকতে সাহায্য করে।

শিশুর সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করে। কিছু ব্যায়াম, যেমন ‘পেলভিক টিল্ট’ বা ‘ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ’ গর্ভের ভেতরে শিশুকে সঠিক অবস্থানে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।

প্রসবকালীন সময়ক্ষেপণ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়ামে পেশি নমনীয় ও সচল থাকে। ফলে প্রসবকাল দ্রুত ও সহজ হয়।

কবজি, কোমর ও মেরুদণ্ডের চাপ কমায়। ব্যায়াম করলে পিঠে ব্যথা কমে ও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা হয়।

গর্ভাবস্থায় যেসব ব্যায়াম করবেন

হাঁটা: রোজ হালকা হাঁটাহাঁটি পায়ের রক্তসঞ্চালন উন্নত করে, ক্লান্তি কমায় ও মন ভালো রাখে।

কেগেল ব্যায়াম: মাংসপেশি শক্তিশালী করে, প্রসব সহজ হয় এবং প্রসব–পরবর্তী প্রস্রাব ধরে না রাখতে পারার সমস্যাও কমায়।

স্কোয়াটস: পেলভিক অঞ্চল খুলে দেয়, শিশুকে নিচে নামতে সাহায্য করে।

ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ

মেরুদণ্ড নমনীয় রাখে, শিশুর অবস্থান ‘হেড ডাউন’ করতে সাহায্য করে।

পেলভিক টিল্ট: কোমরব্যথা কমায় ও মাংসপেশিকে সচল রাখে।

ডিপ ব্রিদিং: মানসিক চাপ কমায়, প্রসবের সময় মনোযোগ ও নিয়ন্ত্রণ বাড়ায়।

সতর্ক থাকতে হবে যেসব বিষয়ে

গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম শুরুর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা (উচ্চ রক্তচাপ, প্লাসেন্টার, প্রি–টার্ম কনট্রাকশন ইত্যাদি) থাকলে ব্যায়াম নিষিদ্ধ। ব্যায়াম করার সময় যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করতে হবে। যেমন বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরা। বুক ধড়ফড় বা শ্বাসকষ্ট। তলপেটে বা পিঠে তীব্র ব্যথা। রক্তপাত বা পানি বের হওয়া।

প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর শারীরিক অবস্থা আলাদা। তাই ব্যায়াম শুরুর আগে অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এম ইয়াছিন আলী: চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রসব র সময় স হ য য কর ক অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যায়াম কি স্বাভাবিক প্রসবে সহায়ক

স্বাভাবিক প্রসব বা নরমাল ডেলিভারি অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। মায়ের ও গর্ভে থাকা সন্তানের শারীরিক অবস্থা নির্দেশ করে প্রসব স্বাভাবিক হবে নাকি অস্ত্রোপচার দরকার হতে পারে। তবে সবকিছু স্বাভাবিক ও মা–শিশু সুস্থ থাকলে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য চেষ্টা করা হয়। গর্ভাবস্থায় সঠিক ব্যায়াম এই প্রক্রিয়াকে সহজ, নিরাপদ ও আরামদায়ক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ব্যায়ামের উপকারিতা

ব্যায়াম শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করে। পেট, পিঠ, পেলভিস ও ঊরুর পেশিকে শক্তিশালী করে। গর্ভধারণ ও প্রসবের সময় যেসব পেশি বেশি ব্যবহৃত হয়, সেগুলো সুসংহত হয়ে ওঠে।

ব্যায়াম প্রসবকালীন ব্যথা সহ্য করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়ামে শরীরের সহনশক্তি বাড়ে, ফলে প্রসবের সময় ব্যথা সহজে সহ্য করা যায়।

শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষ কিছু ব্যায়াম, যেমন ডিপ ব্রিদিং ও ল্যামাজ পদ্ধতি প্রসবের সময় শান্ত থাকতে সাহায্য করে।

শিশুর সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করে। কিছু ব্যায়াম, যেমন ‘পেলভিক টিল্ট’ বা ‘ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ’ গর্ভের ভেতরে শিশুকে সঠিক অবস্থানে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।

প্রসবকালীন সময়ক্ষেপণ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়ামে পেশি নমনীয় ও সচল থাকে। ফলে প্রসবকাল দ্রুত ও সহজ হয়।

কবজি, কোমর ও মেরুদণ্ডের চাপ কমায়। ব্যায়াম করলে পিঠে ব্যথা কমে ও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা হয়।

গর্ভাবস্থায় যেসব ব্যায়াম করবেন

হাঁটা: রোজ হালকা হাঁটাহাঁটি পায়ের রক্তসঞ্চালন উন্নত করে, ক্লান্তি কমায় ও মন ভালো রাখে।

কেগেল ব্যায়াম: মাংসপেশি শক্তিশালী করে, প্রসব সহজ হয় এবং প্রসব–পরবর্তী প্রস্রাব ধরে না রাখতে পারার সমস্যাও কমায়।

স্কোয়াটস: পেলভিক অঞ্চল খুলে দেয়, শিশুকে নিচে নামতে সাহায্য করে।

ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ

মেরুদণ্ড নমনীয় রাখে, শিশুর অবস্থান ‘হেড ডাউন’ করতে সাহায্য করে।

পেলভিক টিল্ট: কোমরব্যথা কমায় ও মাংসপেশিকে সচল রাখে।

ডিপ ব্রিদিং: মানসিক চাপ কমায়, প্রসবের সময় মনোযোগ ও নিয়ন্ত্রণ বাড়ায়।

সতর্ক থাকতে হবে যেসব বিষয়ে

গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম শুরুর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা (উচ্চ রক্তচাপ, প্লাসেন্টার, প্রি–টার্ম কনট্রাকশন ইত্যাদি) থাকলে ব্যায়াম নিষিদ্ধ। ব্যায়াম করার সময় যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করতে হবে। যেমন বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরা। বুক ধড়ফড় বা শ্বাসকষ্ট। তলপেটে বা পিঠে তীব্র ব্যথা। রক্তপাত বা পানি বের হওয়া।

প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর শারীরিক অবস্থা আলাদা। তাই ব্যায়াম শুরুর আগে অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এম ইয়াছিন আলী: চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ