আবুল মনসুর আহমদ স্মরণে বক্তৃতা প্রতিযোগিতা
Published: 1st, July 2025 GMT
সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদের স্মরণে দ্বিতীয়বারের মতো বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। যৌথভাবে এই আয়োজন করেছে আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদ ও তর্কজাল।
এবারের প্রতিযোগিতার বিষয়: গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী ‘বাংলাদেশের কালচার’।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এতে অংশ নিতে হলে প্রতিযোগীর বয়স ৩০ বছরের নিচে হতে হবে। আগে যাঁরা প্রবন্ধ ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন, তাঁরা এবার অংশ নিতে পারবেন না।
দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে এই প্রতিযোগিতা। প্রথম পর্বে অংশগ্রহণকারীকে গুগল ড্রাইভ লিংক করে ই-মেইলে ৪-৫ মিনিটের একটি ভিডিও বক্তব্য পাঠাতে হবে। ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিযোগীদের [email protected] ও [email protected] ই-মেইল ঠিকানায় নিজের নাম, পরিচয়, বয়স, ফোন নম্বরসহ বক্তব্যের বিষয় উল্লেখ করে ড্রাইভ লিংক দিতে হবে। সেখান থেকে শীর্ষ ২০ জনকে নিয়ে ঢাকায় চূড়ান্ত পর্বের আয়োজন করা হবে। চূড়ান্ত পর্বে ১০ জন নির্বাচিত হবেন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম বিজয়ী পুরস্কার হিসেবে ১৫ হাজার, দ্বিতীয় ১২ হাজার, তৃতীয় ১০ হাজার, চতুর্থ ৫ হাজার, পঞ্চম ৩ হাজার টাকা পুরস্কার পাবেন। এ ছাড়া বিজয়ী প্রত্যেককে সনদ ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে। বাকি ৫ জন উপহার হিসেবে পাবেন এক হাজার টাকা, সনদ ও বই।
আগামী সেপ্টেম্বরে আবুল মনসুর আহমদের জন্মদিন উপলক্ষে পুরস্কার হস্তান্তরের বিষয়টি ফেসবুক পেজে ও ফোনে জানিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আবুল মনসুর আহমদের রচনার মধ্যে আছে ‘আয়না’, ‘আসমানী পর্দা’, ‘গালিভারের সফরনামা’ ও ‘ফুড কনফারেন্স’। বাংলাদেশের সংস্কৃতিসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের ওপর তাঁর লেখা রয়েছে। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হচ্ছে ‘আত্মকথা’ ও ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’। আবুল মনসুর আহমদ রচিত বিভিন্ন বই বাংলা একাডেমি, প্রথমা প্রকাশন ও রকমারিতে পাওয়া যায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজ্জাক-ছফার এক জীবন
মহাকবি আলাওল লিখেছেন, ‘গুরু মুহম্মদে করি ভক্তি, স্থানে স্থানে প্রকাশিত নিজ মনোউক্তি’। ‘যদ্যপি আমার গুরু’ বইটির বৈশিষ্ট্য আহমদ ছফা নিজেই শনাক্ত করেছেন আলাওলের লেখা এই পঙ্ক্তি দিয়ে। ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বইটি প্রকাশের আগে দৈনিক বাংলা বাজার পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকীতে দীর্ঘ চার মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল এই লেখা। অনেকেই সেই সময়ে লেখাটির প্রশংসা করেছিলেন। অনেকেই বলেছিলেন, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের জবানিতে লেখা কথাগুলো আহমদ ছফা নিজে বানিয়ে বানিয়ে লিখেছেন। অবশ্য মুখবন্ধে লেখক দাবি করেছেন, ‘আমার শিক্ষক অধ্যাপক রাজ্জাকের অনন্য ব্যক্তিত্বের মহিমা আমি যেভাবে অনুভব করেছি, অন্তত তার কিছুটা উত্তাপ দশজনের কাছে প্রকাশ করি।’
‘যদ্যপি আমার গুরু’ বই হিসেবে প্রকাশের সময় অধ্যাপক রাজ্জাক বেঁচে ছিলেন। ১৯৯৯ সালের ২৮ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৭০ সাল থেকে নিয়মিত অধ্যাপক রাজ্জাকের কাছে যাওয়া-আসা করতেন আহমদ ছফা। তাঁর ভাষায়, তাঁর কাছে অধ্যাপক রাজ্জাক ‘একদিনের জন্যও পুরানো হয়ে যাননি’। অধ্যাপক রাজ্জাকের বহুমাত্রিক দিক পাঠকের কাছে উন্মোচন করেছেন লেখক। সমালোচক-পণ্ডিতেরা এমনটাই মনে করেন।
অধ্যাপক রাজ্জাকের সংস্পর্শে এসে মানুষ হিসেবে চিন্তার কাঠামো-দেখার ভঙ্গি বদলে গিয়েছে—এ কথা নিঃসংকোচেই বলেছেন লেখক। অধ্যাপক রাজ্জাককে পিএইচডির সুপারভাইজার হিসেবে চেয়েছিলেন ছফা। এই অনুরোধ থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের ইতি টেনে শুরু হয় গুরু-শিষ্যের জ্ঞানজগতের সম্বন্ধ। যদিও বইটিতে ছফা উল্লেখ করেছেন, প্রচলিত নিয়ম ভেঙে সুযোগ দেওয়ার পরও তাঁর পক্ষে পিএইচডি করা সম্ভব হয়নি। পিএইডি শেষ করতে না পারার কারণ হিসেবে তিনি অধ্যাপক রাজ্জাকেই দায়ী করেছেন।
যদ্যপি আমার গুরু, আহমদ ছফা, প্রচ্ছদ: কাইয়ুম চৌধুরী, প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮