বর্ষায় চুলের যত্নে চা ব্যবহার করতে পারেন। চুলের যত্নে দীর্ঘদিন ধরেই চা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে চুলের জন্য গ্রিন টি বা চায়ের লিকার ব্যবহার করা হয়। 

গ্রিন টি হোক বা কালো চা— যেকোন চাই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে এঅ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে এতে। চায়ে রয়েছে অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান।

আমেরিকার কেশচর্চা শিল্পী গ্রিচেন ফ্রিজ বলেন, ‘‘কালো চা এবং গ্রিন টি দুই-ই চুলের পরিচর্যায় ব্যবহার হয়। কোনটি চুলের জন্য বেশি ভালো কাজ করবে তার ফলাফল কিছুটা নির্ভর করে কোন ধরনের চা বেছে নেওয়া হচ্ছে সেটির গুণমানের ওপর।’’

চা চুলের স্বাস্থ্য  ভালো রাখতে এবং মাথার ত্বকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।  চুল বৃদ্ধিতে কার্যকর।

আরো পড়ুন:

রুনা লায়লার সারাদিন যেভাবে কাটে

বর্ষায় ত্বকের যত্নে তিন ধাপ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘‘গ্রিন টি-তে থাকে বি ভিটামিন, পেন্থানল (বি৫)। পেন্থানল চুল মজবুত এবং আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এই উপাদানের প্রভাবে চুল মসৃণ হয়। কেউ কেউ কালো চা বেছে নেন চুল প্রাকৃতিক ভাবে কালো রাখার জন্যই। যাঁদের চুলে পাক ধরতে শুরু করেছে তাঁদের জন্য এই কৌশল কাজের। গ্রিন টি-তে থাকা পলিফেনল এবং ক্যাফিন চুল মজবুত করে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মাথার ত্বকের ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান জ্বালা, চুলকানির সমস্যা কমায়।’’

কীভাবে ব্যবহার করবেন?
নিয়মিত নয়, সপ্তাহে এক বার ব্যবহারই যথেষ্ট। ২ কাপ জলে চা-পাতা ভিজিয়ে রাখুন। সেই জল ছেঁকে বোতলে ভরে দিন। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। তারপর চা স্প্রে করুন। ঘণ্টাখানেক সেটি মাথায় রেখে জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

মাথার ত্বক যদি স্পর্শকাতর হয়, তখন গ্রিন টি বা কালো চা বেছে নিতে পারেন। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল র যত ন ব যবহ র র জন য উপ দ ন র ত বক র যত ন

এছাড়াও পড়ুন:

জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।

একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?

চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।

আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।

বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।

লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা

সম্পর্কিত নিবন্ধ