প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, মালয়েশিয়া বিষয়ে একটা হাইপ উঠছে যে মালয়েশিয়ায় ১০-১২ লাখ কর্মী নেবে। আমি সেখান থেকে ঘুরে এসেছি। মালয়েশিয়াতে আগামী এক বছরে বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি হলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার কর্মী নেবে।

বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাপানের শ্রম বাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘মালয়েশিয়ার সঙ্গে আগের সরকার চুক্তি করে রেখেছে যে, তোমরা রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দেবে, আমরা নির্ধারণ করব। এটা দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি। যেটাকে আমরা সিন্ডিকেট বলি। এখন আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন আমাদের সবাই বলছে সিন্ডিকেট করা যাবে না। আর সিন্ডিকেট না করতে হলে চুক্তি পরিবর্তন করতে হবে। সেটা তো মালয়েশিয়া সরকারকে পিটিয়ে করতে পারব না। এখন তার সঙ্গে আমাদের সমঝোতা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যদি সে চুক্তি পরিবর্তন না করে, তাহলে আমার সামনে দুইটা পথ খোলা আছে। এক হচ্ছে- তার কথা অনুযায়ী ২৫, ৫০ বা ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পাঠানো, আরেকটি হচ্ছে- তাদেরকে বলা যে আমরা লোকই পাঠাবো না। এখন আমি যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লোক পাঠাই তাহলে সবাই বলবে আমি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আবার যদি কর্মী না পাঠাই তাহলে আমার ৪০ হাজার কর্মী যেতে পারবে না। এটা মালয়েশিয়া মনে রাখবে। এর ফলে পরবর্তীতে আমার এক থেকে দুই লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

জাপানের শ্রমবাজার বিষয় উপদেষ্টা বলেন বলেন, ‘জাপানে কর্মীর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই চাহিদা পূরণের সক্ষমতা কী আমাদের রয়েছে। কারণ আমাদের অদক্ষ শ্রমিক আছে। ভাষা শিখছে, কিন্তু সে দক্ষ হতে পারছে না। এখন আমাদের সমাধান একটাই, আমাদেরকে জাপানে কর্মীর চাহিদা অনুযায়ী কর্মীকে দক্ষ করতে হবে। আমরা জাপান সেল করেছি। সেখানে একটা ডেডিকেটেড ওয়েবসাইট করা হবে। জাপানের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের দিক থেকে কোনো প্রক্রিয়া রাখব না। এর পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষ করার জন্য আমরা প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপের কথা ভাবছি।’

মন্ত্রণালয়ের নতুন পদক্ষেপ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আমরা বিভিন্ন পার্টনারশিপে যাওয়ার চিন্তা করছি। আমাদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের লোন দিচ্ছে। স্টুডেন্টদের দিচ্ছে না। যারা স্টুডেন্ট ভিসায় যাবে, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব তাদের জন্য যেন ঋণের ব্যবস্থা করা হয়।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব স আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

৮২ বছর পর গ্রন্থাগারে ফেরত দেওয়া হলো বই

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবাক করা এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে গেলেন। এই গ্রন্থাগার থেকে ধার নেওয়া একটি বই প্রায় ৮২ বছর পর ফেরত এসেছে। বইয়ের সঙ্গে পাঠানো হয়েছে একটি চিঠি। তাতে লেখা ছিল, ‘দাদি আর জরিমানা দিতে পারবেন না।’

সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বইটির নাম ইউর চাইল্ড, হিজ ফ্যামিলি, অ্যান্ড ফ্রেন্ডস। লেখক পারিবারিক ও বিবাহ-পরামর্শক ফ্রান্সেস ব্রুস স্ট্রেইন। ১৯৪৩ সালের জুলাইয়ে বইটি ধার নেওয়া হয়েছিল। গত জুনে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের এক ব্যক্তি এটি ফেরত দিয়েছেন।

বইয়ের সঙ্গে পাঠানো চিঠিতে ওই ব্যক্তি লিখেছেন, ‘সম্প্রতি বাবার মৃত্যুর পর আমি তাঁর রেখে যাওয়া কয়েক বাক্স বই পেয়েছি। বাক্সগুলোর মধ্যে এই বইটি ছিল।’ চিঠিতে তিনি নিজের নাম না লিখে শুধু আদ্যক্ষর দিয়েছেন —পি.এ.এ.জি। সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে চিঠিটি প্রকাশ করেছে।

মা-বাবার সন্তানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত—সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে এ বই লেখা হয়েছে। যে ব্যক্তি বইটি ফেরত দিয়েছেন, তাঁর বাবার বয়স যখন ১১ বছর, তখন বইটি ধার নেওয়া হয়েছিল।

ওই ব্যক্তি চিঠিতে লিখেছেন, ‘বইটি নিশ্চয়ই আমার দাদি মারিয়া দেল সকোরো আলদ্রেতে ফ্লোরেস (কর্তেজ) ধার নিয়েছিলেন। ধার নেওয়ার বছরেই তিনি মেক্সিকো সিটিতে মার্কিন দূতাবাসে কাজ করতে যান। তিনি বইটি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় ৮২ বছর পর সেটি আমার হাতে এসে পৌঁছেছে।’

লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে তারা জরিমানা তুলে দিয়েছে। যদিও বইটির ভেতরে একটি সিলমোহরে উল্লেখ আছে, সময়মতো বই ফেরত না দিলে প্রতিদিন তিন সেন্ট করে জরিমানা দিতে হবে। সে হিসাবে এ বছরের জুন পর্যন্ত জরিমানার পরিমাণ দাঁড়াত প্রায় ৯০০ ডলার। আর মূল্যস্ফীতি হিসাব করে দেখা গেছে, তিন সেন্টের বর্তমান মূল্য প্রায় ৫৬ সেন্ট। ফলে জরিমানা দাঁড়াত ১৬ হাজার ডলারের বেশি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বইটি এখনো ভালো আছে। আগস্টজুড়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে প্রদর্শিত হবে। এরপর তা বিক্রির জন্য তুলে দেওয়া হবে অলাভজনক সংগঠন ফ্রেন্ডস অব সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরির হাতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ