রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তানজীদ হোসেন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মুল্লুক মোল্লার মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউপি সদস্যসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় সাবেক সেনা কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমানের বাড়ির প্রধান ফটকেও হামলা চালানো হয়। ঘটনার পর পাংশা মডেল থানার পুলিশ ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের বাসিন্দা ওহিদুর রহমান ওরফে মুক্তি (৪৫) নামের একজনকে আটক করেছে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তানজীদ হোসেন (৪৫), লক্ষীপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে তছির আহম্মেদ (২৯), লুৎফর মোল্লার ছেলে আশিকুর রহমান ওরফে তন্ময় (১৭), মুল্লুক মোল্লার ছেলে ইসমাইল মোল্লা (১৫), প্রয়াত সমসের আলীর ছেলে তাওহীদ হোসেন (৫০) এবং স্থানীয় লুৎফর রহমান মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামির হোসেন (৪৫)। আহত ব্যক্তিদের পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ইউপি সদস্য তানজীদ হোসেনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন জানান, কসবামাজাইল ইউনিয়নের তানজীদ হোসেনের কেয়াগ্রাম সমাজ থেকে সম্প্রতি মুল্লুক মোল্লাসহ কয়েকজন আলাদা হয়ে যান। এ নিয়ে গতকাল সকালে তানজীদ হোসেনের লোকজন মুল্লুক মোল্লার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে আবার আগের সমাজে ফিরে আসাতে ‘শাসান’। এরপর মুল্লুক মোল্লার মুদিদোকানের সামনে তানজীদ ও মুল্লুকের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। মুল্লুক মোল্লার দোকানসহ উভয় পক্ষের ১৪ থেকে ১৫টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর হয়। এর জেরে সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) এস এম মতিউর রহমানের বাড়ির প্রধান ফটকে হামলা চালানো হয়।

ইউপি সদস্য তানজীদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুল্লুক মোল্লার নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫ জন আমাদের এলাকার বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় এখন আমি অন্যত্র চিকিৎসা নিচ্ছি।’ তিনি জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সাবেক সেনা কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমানের ভাতিজা ও কসবামাজাইল ইউপির চেয়ারম্যান শাহরিয়ার সুফল মাহমুদ বলেন, ‘সমাজভিত্তিক সমস্যা নিয়ে ইউপি সদস্য তানজীদ হোসেন ও মুল্লুক মোল্লার মধ্যে প্রথমে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়, পরে সংঘর্ষ বাধে। এর জেরে তানজীদের ভাই ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি করিম হাসান এবং স্থানীয় ফারুক খানের নেতৃত্বে আমাদের বাসভবনের প্রধান ফটকে হামলা চালানো হয়। তারা ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আমরা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। এ ঘটনায় তানজীদ হোসেনের সমর্থক ওহিদুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন স ঘর ষ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিতর্কিত’ বিচারকদের অপসারণ চায় সুপ্রিমকোর্ট বার

সারাদেশে বিচারাঙ্গন থেকে অবিলম্বে ‘বিতর্কিত ও পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকদের অপসারণের আহ্বান জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে শফিউর রহমান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ. এম. মাহবুব উদ্দিন খোকন। এ সময় সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর কতজন বিতর্কিত, দলকানা, ফ্যাসিস্ট রেজিমের আজ্ঞাবহ বিচারককে অপসারণ করা হয়েছে- তা অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত এক যুগ ধরে দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে রায় প্রদানকারী বিচারকদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখাসহ দলীয় বিবেচনায় রিমান্ড প্রদানকারী, ভিত্তিহীন চার্জশিট, রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলায় নেতাকর্মীদের জামিন না দিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রায় দানকারী বিচারকদের অতি দ্রুত অপসারণ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে জোরালো আহ্বান- দেশের বিচার বিভাগের পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। অবিলম্বে বিতর্কিত, পক্ষপাতদুষ্ট ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিচারকদের অপসারণ করতে হবে।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ