ইরান থেকে দ্বিতীয় দফায় দেশে ফিরেছেন ৩২ বাংলাদেশি। মঙ্গলবার তারা এয়ার অ্যারাবিয়ার দুটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (কল্যাণ) তৈয়ব আহমেদ আনোয়ারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দর কর্মকর্তারা জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দেশে ফেরা এসব যাত্রী বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। বিমানবন্দর প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহেদ হোসেন সমকালকে জানান, গতকাল সকালে দুই ফ্লাইটে করে দেশে ফেরেন বাংলাদেশিরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দফায় ১ জুলাই ২৮ বাংলাদেশি দেশে ফেরেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন নারী, শিশু এবং দেশটিতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগী। তারা প্রথমে তেহরান থেকে সড়কপথে বেলুচিস্তানের তাফতান সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। পরে করাচি-দুবাই হয়ে ঢাকায় আসেন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে ফেরার জন্য ২৫০ বাংলাদেশি তেহরান দূতাবাসে নিবন্ধন করেছিলেন। তাদের ধাপে ধাপে দেশে আনার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। তবে এখন যুদ্ধ না থাকায় নিজ উদ্যোগেও তারা দেশে ফিরতে পারবেন। ইরানে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি থাকার তথ্য পাওয়া যায়। তবে সরকারের তালিকাভুক্ত আছেন ৬৭২ জন। তাদের মধ্যে ৬৬ জন শিক্ষার্থী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল
গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।
ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।
আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।
প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।
ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি