দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, ৩ কিশোর গ্রেপ্তার
Published: 4th, October 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক নারীকে (২১) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তিন কিশোরের বিরুদ্ধে। ওই নারীর মা বাদী হয়ে নাসিরনগর থানায় মামলা করার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিন কিশোর অপরাধ স্বীকার করেছে।
গৃহবধূর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী গ্রামে ছাগল লালন-পালন করেন। গত বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল চারটার দিকে তিন কিশোর ওই নারীর কাছে গিয়ে বলে, তাঁর (নারী) ছাগল চুরি হয়েছে। ছাগল পেতে হলে গৃহবধূকে তাদের সঙ্গে যেতে বলে। এরপর তারা ওই নারীকে একটি পুকুরপাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ওই নারী তাঁর মাকে জানান। মা শুক্রবার রাতেই নাসিরনগর থানায় মামলা করেন। মামলা আমলে নিয়ে নাসিরনগর থানা–পুলিশ শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের আদালতের মাধ্যমে টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
ওই নারীর মা বলেন, এক মাস আগে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক সপ্তাহ না যেতেই দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী তাঁকে ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। এর পর থেকে মেয়ে তাঁর বাড়িতে থাকেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তিন কিশোরের পরিবারের সদস্যদের দাবি, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁদের ছেলেরা কোনোভাবেই জড়িত নয়। কী কারণে তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে, সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
নাসিরনগর থানার ওসি মাকছুদ আহাম্মদ শনিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কাছের জিনিস কিছুটা ঝাপসা দেখতে পেলেও দূরের কিছুই দেখতে পারেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স রনগর থ ন ওই ন র র
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অর্থ সহায়তা
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলা সদরের স্টেডিয়াম মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পরিবারের মাঝে ৫০ কেজি করে চাল ও সাড়ে সাত হাজার টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।
আরো পড়ুন:
‘খাগড়াছড়িবাসী ইউপিডিফের অপরিপক্ক আন্দোলনের মাশুল গুনছে’
গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করবে: সেতু উপদেষ্টা
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ত্রাণ ও অনুদানের চেক বিতরণ করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি বলেন, “সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে প্রশাসন সবসময় আছে। আপনাদের ক্ষতি পুরোপুরি পুষিয়ে দেওয়া না গেলেও এই অনুদানের মাধ্যমে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস জোগাবে।’’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ হাসান প্রমুখ
২৩ সেপ্টেম্বর জেলা সদরের সিঙ্গিনালায় রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
পাহাড়ি এই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা জেলায় অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তারা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুর করা হয়। এরপর সদর উপজেলা, পৌরসভা এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
এই সহিংসতার মধ্যে পাহাড়ি ও স্থানীয়দের বাড়িঘর, দোকান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া হয়।
ঢাকা/রূপায়ন/বকুল