জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসনের সম্পূরক ভাতা হিসেবে ‘বিশেষ বৃত্তি’ দেওয়ার জন্য তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন। ৯ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে এ আবেদন আহ্বান করা হয়েছে।

বুধবার রেজিস্ট্রার শেখ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটিতে ‘বিশেষ বৃত্তি নীতিমালা’ পাস হয়েছে। শিক্ষার্থীরা— https://scholarship.

jnu.ac.bd লিংকে গিয়ে সংযুক্ত ফরম অনুযায়ী তথ্য পূরণ করে ৯ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর তারিখের মধ্যে এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

কোন বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তি পাবেন, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাজাম্মুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তির আওতাধীন থাকবে। সে হিসেবে পয়লা জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত যাদের ছাত্রত্ব ছিল, তারা বিশেষ বৃত্তি পাবে।

বেসরকারি উদ্যোগে শায়েখ আহমাদুল্লাহর প্রতিষ্ঠান আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘মেধাবী’ প্রকল্পের আওতায় কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩–২৪ ও ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আস-সুন্নাহ হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী আবাসন নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তি পাবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আস-সুন্নাহ হল ও ফয়জুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীদের আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব দিক বিবেচনা করে নির্ধারণ করবে কারা বিশেষ বৃত্তি পাবে।’

স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আবাসন ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ১৭ মে টানা তিন দিনের অবস্থান কর্মসূচির পর সরকার শিক্ষার্থীদের আবাসন বৃত্তিসহ তিন দফা দাবি মেনে নেয়। সেই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ বৃত্তির জন্য আবেদন আহ্বান করে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধ বিরতি নিয়ে আলোচনা সফল হওয়ার ‘আশাবাদ’ হামাসের

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা সফল হওয়া নিয়ে এখনো ‘আশা’ রয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে তালিকা বিনিময় করেছে। তালিকায় থাকা ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চায় তারা। বিনিময়ে তাদের কাছে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। গতকাল বুধবারও পরোক্ষ আলোচনা শুরু হওয়ার কথা।

আলোচনায় অগ্রগতি প্রসঙ্গে গতকাল হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু শারম আল শেখ থেকে এএফপিকে বলেছেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে যেকোনো ধরনের বাধা দূর করতে ব্যাপক চেষ্টা করছেন। সব পক্ষের মধ্যে আশাবাদী মনোভাব বিরাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, পরোক্ষ অস্ত্রবিরতির প্রথম ধাপে ইসায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের একটি তালিকা জমা দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে হামাসের কাছে থাকা ৪৭ জন জিম্মিকে (জীবিত ও মৃত) মুক্তি দেওয়া হবে।

মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসি বলেছেন, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জেরাড কুশনার এখন শারম আল শেখে অবস্থান করছেন। তাঁরা আসার পর থেকে তিনি যেসব খবর পেয়েছেন, তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো গেলে তিনি ট্রাম্পকে মিসরে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন।

গত মঙ্গলবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, হামাস ও ইসরায়েল অস্ত্রবিরতিতে রাজি হলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা আছে।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল-থানি ও তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিনের গতকালের আলোচনায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, শান্তিচুক্তি মেনে নিতে হামাসকে রাজি করাতে তুরস্ককে অনুরোধ করেছেন ট্রাম্প। ইসরায়েলকে শান্তির মূল বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। শান্তির সব দায় শুধু হামাস ও ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপানো অন্যায্য ও অবাস্তব।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।

যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক প্যারিসে

রয়টার্স জানায়, গাজায় যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয়, আরব ও অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা আজ প্যারিসে এক বৈঠকে মিলিত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৈঠকে যোগ দেবেন।

বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিসরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার সমান্তরালে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা–সংক্রান্ত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো ওই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা নির্ধারণ করা এবং প্রক্রিয়াটিতে বিভিন্ন দেশের যৌথ অঙ্গীকার মূল্যায়ন করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ