চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে আইনি নোটিশ
Published: 20th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের খুলশীতে নালায় পড়ে ছয় মাসের শিশু সেহেরিজের মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে সেহরিজের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে অবিলম্বে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া নগরীর সব খোলা নালা ও খাল চিহ্নিত করে ঢেকে ফেলার সময়বদ্ধ নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন, সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিন্ন ড্রেনেজ নিরাপত্তা মানদণ্ড প্রণয়ন এবং স্বাধীন তদারকি কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। সেহেরিজের মৃত্যুর ঘটনায় দায় স্বীকার করে জনসমক্ষে কর্তৃপক্ষকে বিবৃতি দেওয়ার জন্য বলা হয় নোটিশে।
ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সেহেরিজের মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা নয়; এটি চসিকের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির প্রতিফলন। সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে জীবনের নিরাপত্তা ও আইনের সুরক্ষার কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। ২০০৯ সালের স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনের ৫০ ও ৫২ ধারায় জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা পালন করতে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার কারণেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রাস্তার পাশে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যারিকেড বা সতর্কীকরণ ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খোলা ড্রেনে পড়ে যায়। এ সময় শিশুটি তার মায়ের কোল থেকে ছিটকে পানির স্রোতে ভেসে যায়। দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা পর প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের চকবাজার খাল থেকে সেহেরিজের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর অরক্ষিত খাল-নালা চিহ্নিত করে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন চসিক মেয়র ডা.
রোববার নগরের টাইগার পাসের নগর ভবনে প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সঙ্গে আয়োজিত বিশেষ সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সভায় মেয়র বলেন, খালে পড়ে ছয় মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর দায় আমরা কেউ এড়াতে পারি না। একজন নগরবাসী ও মেয়র হিসেবে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
তামাক নিয়ন্ত্রণে বিনোদন সাংবাদিকদের ওরিয়েন্টেশন
নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েব সিরিজে ধূমপানসহ সকল নেতিকবাচক দৃশ্য বন্ধে আইন ও নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও কলা-কুশলীদেরকে প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে তথ্য ভবনে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) যৌথ আয়োজনে ‘ওরিয়েন্টেশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল ল ফর জার্নালিস্ট: রোল অব এন্টারটেইনিং মিডিয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উক্ত আহ্বান জানান তারা। নাটক, চলচ্চিত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং ওটিটি নীতি দ্রুত চূড়ান্তকরণ ও একটি গাইডলাইন প্রণয়নের সুপারিশ তুলে ধরেন বক্তারা।
আরো পড়ুন:
মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় হামলা: চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহলের মৃত্যু
জবিতে উদীচীর কর্মীদের সঙ্গে সাংবাদিকদের বাকবিতণ্ডা
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল জলিল। তিনি গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের নানামুখী প্রচারণায় তামাকের নেতিবাচক প্রভাববিষয়ক প্রচারণা যুক্ত করার আশ্বাস দেন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা এবং নাটক-চলচ্চিত্রে আইন লঙ্ঘণের চিত্র ও করণীয় বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে মানস-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসর টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার আমিনুল ইসলাম সুজন ও মানসের প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার অ্যাড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম ও ম্যানেজার (তামাক নিয়ন্ত্রণ) ফাহমিদা ইসলাম, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান দর্পন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রোগ্রাম অফিসার ডা. ফরহাদুর রেজা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানসের সিনিয়র প্রজেক্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন অফিসার মো. আবু রায়হান। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “বর্তমানে কিশোর-তরুণসহ প্রায় সব বয়সিদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম নাটক, চলচ্চিত্র ও ওটিটি কনটেন্ট। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতার কারণে ‘কাহিনির প্রয়োজন’ এর দোহাই দিয়ে অযাচিতভাবে চলচ্চিত্রে, নাটকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধূমপানের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ সমাজকে টার্গেট করে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতেও তামাকের নেশায় উৎসাহিত করছে। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বিনোদন মাধ্যমে যাতে নেতিবাচক বিষয়গুলো ফলাও করে প্রচার না করা হয়, সে বিষয়ে অভিনয়শিল্পী ও সংশ্লিষ্টদেরকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড, চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক নিয়ম মেনে চলচ্চিত্র অনুমোদন, আইন লঙ্ঘণ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।”
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি ধূমপান বিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে বলেও জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি। এ সময় বক্তারা আরো বলেন, “সাংবাদিকরাও তামাকের সার্বিক ক্ষতি নিয়ে জনসচেতনতামূলক প্রতিবেদন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘণ চিহ্নিত করে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন, ফলোআপ এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আইন প্রতিপালনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। সর্বোপরি, সুস্থ বিনোদন মাধ্যমের জন্য, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিপালন এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা চূড়ান্ত এবং আলাদা একটি গাইডলাইন প্রণয়নের দাবি জানান তারা।”
অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মতিহার, দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমিন ভূঁইয়া, কার্যনিবাহী সদস্য সাজু আহমেদ, নিয়াজ শুভ। এছাড়া দুলাল খান, সুমন মোস্তফা, মাজহার বাবু, এমদাদুল হক মিল্টন, আশরাফুল আলম আসিফ, সুকন্যা আমীর, মো. মনিরুল ইসলাম সরকার (রঞ্জু), নাজমুল আহসান তালুকদার, শাহিন আলম শুভ, এ আর এম শাদাত, সাজিয়া ইসলাম স্বর্ণা, লিটন মাহমুদ, হিমু সুলতানা, মো. হোছাইন রুহানীসহ বিনোদন সংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত