জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও  সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

রবিবার (৪ মে) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

জামায়াত আমির
নারী‌দের ঘর থে‌কে বের হ‌তে দেওয়া হ‌বে না ব‌লে অপবাদ ছড়া‌নো হ‌চ্ছে 

‘অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন’, জামায়াত আমিরের দুঃখ প্রকাশ

১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। লন্ডনের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আইন পেশায় যুক্ত হন। ১৯৯০ সালে ‘দ্য ল কাউন্সেল’ নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।

২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামী নেতাদের পক্ষে আইনজীবী প্যানেলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেশত্যাগ করেন এবং দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন তিনি।

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলা: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি ৬ মে

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত দুটি মামলায় বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অন্য আসামিদেরকে হাইকোর্টের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ৬ মে তারিখ নির্ধারণ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের একটি তিন সদস্যের বেঞ্চে আজ দুটি লিভ টু আপিল পিটিশনের শুনানির জন্য নির্ধারিত ছিল। পরে আদালত সেগুলোর শুনানির জন্য ৬ মে তারিখ ধার্য করেন।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ, যিনি আজ বেঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না, পিটিশনগুলোর শুনানি নিয়ে নিষ্পত্তি করবেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

১ ডিসেম্বর এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। সে রায়ে উচ্চ আদালত বলেন, যে চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচারিক আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না। তাই বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হলো।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও কয়েকশো মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায়’ ওই হামলা ছিল একটি দলকে ‘নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা’। আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন: আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেয় আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ‘লিভ টু আপিল’ করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অর্থ লেনদেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
  • আইনজীবী হত্যাসহ চার মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন
  • আইনজীবী হত্যাসহ চার মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন আদালতে
  • বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্মে দণ্ডের বিধান প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
  • ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক মারা গেছেন
  • ২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলা: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি ৬ মে
  • জামায়াতের নিবন্ধন: আপিল শুনানির জন্য চলতি সপ্তাহে কার্যতালিকায় উঠছে
  • আ.লীগ নিষিদ্ধ, নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ১২ দফা
  • সোহরাওয়ার্দীতে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ শুরু