সন্তানের জন্ম একটি অপার আনন্দের মুহূর্ত। এই আনন্দকে আরও অর্থবহ করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ হিসেবে ইসলাম আকিকার নিয়মের প্রচলন ঘটিয়েছে। আকিকা হলো নবজাতকের জন্য পশু কোরবানি করে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সন্তানের কল্যাণ কামনা। নবীজি (সা.) নিজের নাতি হাসান ও হুসাইন (রা.)–এর জন্য আকিকা দিয়েছিলেন।

আকিকার নিয়ম

নবীজি (সা.

) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নবজাতক তার আকিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা (আকিকার পশু) সপ্তম দিনে জবাই করা হয়, তার নাম রাখা হয় এবং মাথা মুণ্ডন করা হয়।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ১,৫২২)

আকিকার প্রধান নিয়মগুলো এমন—

সময়: আকিকা সাধারণত সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে করা উত্তম। তবে সপ্তম, চতুর্দশ বা একুশতম দিনেও করা যায়। পরিস্থিতির কারণে আরও দেরি হলে যেকোনো সময় আকিকা দেওয়া যায়।

আরও পড়ুনআকিকা শিশুর অধিকার২০ জানুয়ারি ২০২৫

পশু: ছেলেশিশুর জন্য দুটি এবং মেয়েশিশুর জন্য একটি ছাগল বা ভেড়া জবাই করা হয়। পশু কোরবানির মতো সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক ও নির্দোষ হতে হবে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ছেলের জন্য দুটি সমান পশু এবং মেয়ের জন্য একটি পশু।’ (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ২,৮৩৬)

তবে যদি কেউ ছেলেশিশুর জন্য একটি ছাগল দেয়, তাহলেও আদায় হবে।

নিয়ত: জবাইয়ের সময় আকিকার নিয়ত করতে হবে। উদাহরণ: ‘আমি আমার সন্তানের [নাম] জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আকিকা করছি।’

নামকরণ ও মাথা মুণ্ডন: সপ্তম দিনে শিশুর নাম রাখা এবং মাথা মুণ্ডন করে চুলের ওজনের সমপরিমাণ সোনা বা রুপা দান করা সুন্নাহ।

গোশত বিতরণ: আকিকার গোশত তিন ভাগে ভাগ করা যায়—এক ভাগ গরিবদের, এক ভাগ আত্মীয়–প্রতিবেশীদের এবং এক ভাগ নিজেদের জন্য। গোশত রান্না করে খাওয়ানো বা কাঁচা বিতরণ করা যায়।

আরও পড়ুনশিশুর অশুচি দূর করার অনুষ্ঠান আকিকা০২ নভেম্বর ২০২৩

আকিকার তাৎপর্য

আকিকা একটি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা অর্থাৎ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আকিকা শিশুর জন্য পশু জবাই করা হয়, যাতে তার রক্ত প্রবাহিত হয় এবং তার ওপর থেকে কষ্ট দূর হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৪৭২)

এটি শিশুর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া এবং সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষার প্রতীক।

 আকিকা সমাজে সৌহার্দ্য বাড়ায়। আত্মীয়–প্রতিবেশীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে আকিকার গোশত খাওয়ানো পরিবার ও সমাজের বন্ধন মজবুত করে। এ ছাড়া শিশুর নামকরণ ও মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে পরিবারে সবার কাছে শিশু মুসলিম নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুনআকিকায় নবজাতকের মঙ্গল-কামনা২৯ জানুয়ারি ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ শ র জন য ম ণ ডন তম দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই শহীদদের স্মরণে ঢাবিতে গাছ বিতরণ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে গাছের চারা বিতরণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের দুই শিক্ষার্থী। 

‘শহিদ স্মৃতি বৃক্ষায়ন’ নামে নিজস্ব উদ্যোগে এ অভিনব কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাবির সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো: আব্দুল আহাদ ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম প্রতিক।

বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে এই গাছের চারা বিতরণ করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, কিন্তু আমার লক্ষ্য কি?

গবিতে ছাত্রদলের কমিটি: ‘রাজনীতি মুক্ত’ নীতির কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক

এ কর্মসূচির আওতায় হলের প্রতিটি কক্ষে একটি করে মোট ১৩০টি গাছের চারা বিতরণ করেন তারা। প্রতিটা গাছের নাম একজন জুলাই শহীদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। 

এ কর্মসূচির উদ্যোক্তা মো. আব্দুল আহাদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ জীবন দিয়েছে। তাদের আত্মত্যাগকে বইয়ের পাতার বাইরে বাস্তব জীবনেও স্মরণীয় করে রাখতে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটা গাছই আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে।”

তিনি আরো বলেন, “জুলাইয়ে ২ হাজারের বেশি শহিদ হয়েছেন। আমরা যেহেতু মোট ১৩০ গাছ বিতরণ করছি, আমাদের পক্ষে সব শহীদের নামে গাছ দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য আমরা চেষ্টা করেছি, এখানে সব পর্যায়ের শহীদদের তুলে ধরতে। এখানে শহীদ আবু সাইদ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা শহীদ নুর মোস্তফার নামও রয়েছে।”

আরেক উদ্যোক্তা তৌফিকুল ইসলাম প্রতিক বলেন, “আমরা প্রথম পর্যায়ে শুধু হলে গাছ বিতরণের কথা চিন্তা করছিলাম। পরে ভাবলাম জুলাইয়ের শহীদদের স্মৃতিকে জীবন্ত রাখতে তাদের নামে গাছের নামকরণ করি। এখানে প্রতিটা গাছ জুলাই স্মৃতির স্মারক হয়ে থাকবে। আমরা চাই, এর মাধ্যমে আমাদের কাছে শহীদদের অবদান চিরজীবী হয়ে থাকুক।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এভারেস্ট নিয়ে কেন ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন
  • জুলাই শহীদদের স্মরণে ঢাবিতে গাছ বিতরণ