আদান-প্রদান করা তথ্যসহ ব্যবহারকারীদের সাইবার হামলা থেকে রক্ষার জন্য একাধিক নিরাপত্তা–সুবিধা রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। এসব সুবিধা ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট অনেকটাই সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। নিচে হোয়াটসঅ্যাপে গোপনীয়তা রক্ষায় কার্যকর ৬ সুবিধা দেখে নেওয়া যাক।

১. চ্যাট এক্সপোর্ট নিয়ন্ত্রণ

ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তায় ‘অ্যাডভান্সড চ্যাট প্রাইভেসি’ নামের একটি সেটিংস রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। অ্যাডভান্সড চ্যাট প্রাইভেসি সুবিধা চালু থাকলে একক বা গ্রুপ চ্যাটের বার্তা হোয়াটসঅ্যাপের বাইরে শেয়ার, সংরক্ষণ বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। এর ফলে চ্যাট অপশনে আদান-প্রদান করা তথ্য বর্তমানের তুলনায় আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। শুধু তা-ই নয়, পাঠানো কোনো ছবি, ভিডিও বা অডিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপকের যন্ত্রে সংরক্ষণ হবে না।

২.

চ্যাট লক

হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট লক-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীরা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে আদান-প্রদান করা তথ্য ‘লক’ করে রাখা যায়। ফলে ব্যবহারকারীদের অজান্তে অন্য কেউ ফোন ব্যবহার করলেও সেই বার্তা বা ছবি দেখতে পারে না। চ্যাট লক করার জন্য যে চ্যাটটি লক করতে হবে, সেটির ওপরে ট্যাপ করে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। এরপর তিনটি ডট মেনুতে ট্যাপ করে লক চ্যাট অপশন নির্বাচন করলেই সেটি লক হয়ে যাবে। পরবর্তী সময়ে আঙুলের ছাপ বা চেহারা চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তির (ফেসিয়াল রিকগনিশন) মাধ্যমে সহজেই চ্যাটটি আনলক করা যাবে।

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হতে পারে যে ৫ কারণে০৩ এপ্রিল ২০২৫৩. বায়োমেট্রিক

স্মার্টফোন চুরি হলে বা অন্য কেউ ব্যবহার করলে সহজেই হোয়াটসঅ্যাপে থাকা সব তথ্য জানতে পারে। তবে বায়োমেট্রিক-সুবিধা ব্যবহার করলে আঙুলের ছাপ ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করা যায় না। এ সুবিধা চালুর জন্য হোয়াটসঅ্যাপের সেটিংস থেকে প্রাইভেসি অপশনে যেতে হবে। এরপর নিচে স্ক্রল করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক নির্বাচনের পর আনলক উইথ ফিঙ্গারপ্রিন্ট টগল অপশন চালু করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হোয়াটসঅ্যাপের পর্দা লকের সময় নির্বাচন করতে হবে।

৪. এন্ড–টু–এন্ড এনক্রিপশন

হোয়াটসঅ্যাপে এন্ড–টু–এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা চালু থাকলে পাঠানো বার্তা প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারেন না। ফলে আদান-প্রদান করা সব তথ্য নিরাপদ থাকে। হোয়াটসঅ্যাপে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা চালুর জন্য হোয়াটসঅ্যাপের সেটিংসে প্রবেশ করে চ্যাটস অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর চ্যাট ব্যাকআপে গিয়ে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপটেড ব্যাকআপ অপশনে ক্লিক করতে হবে।

৫. টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন

অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়াতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা জরুরি। এটি চালু থাকলে নতুন কোনো যন্ত্রে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে ছয় সংখ্যার একটি গোপন পিন দিতে হয়। এর ফলে ফোন হারিয়ে বা চুরি হলেও অন্য কেউ সহজে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করতে পারে না।

৬. ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ

গোপনীয়তা বজায় রাখতে ডিজঅ্যাপিয়ারিং মেসেজ সুবিধা বেশ কার্যকর। এটি চালু থাকলে নির্দিষ্ট সময় পর হোয়াটসঅ্যাপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আদান-প্রদান করা বার্তা ও মাল্টিমিডিয়া ফাইল মুছে যায়। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ১ দিন, ৭ দিন বা ৯০ দিন আগে নির্দিষ্ট বার্তা বা ফাইল মুছে যাওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা যায়।

সূত্র: দ্য ভার্জ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প র ব যবহ র কর অন য ক উ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

স‌চিবাল‌য়ে কর্মচারী‌দের বি‌ক্ষোভ, চল‌বে মঙ্গলবারও 

ঈদের ছুটির পর সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আবারও আন্দোলন শুরু ক‌রে‌ছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ক‌রে‌ছে। দা‌বি আদা‌য়ে একজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি শে‌ষে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সচিবালয়ে বি‌ক্ষোভ কর্মসুচী ঘোষণা ক‌রে‌ছেন তারা।

এদিকে, আন্দোলন কর্মসূচি থে‌কে বিরত থাক‌তে অনু‌রোধ জা‌নি‌য়ে‌ছেন এ সংক্রান্ত ক‌মি‌টির আহ্বায়ক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

আরো পড়ুন:

গুম বিষ‌য়ে আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠন কর‌বে সরকার: আইন উপদেষ্টা

সচিবালয় ও যমুনার পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

অন‌্যদি‌কে নেতারা অভিযোগ ক‌রে‌ছেন, আধ‌্যা‌দেশ বা‌তিল না ক‌রে সরকার তা‌দের স‌ঙ্গে সাপ লুডু খেলা খেল‌ছে। দা‌বি মানা না হ‌লে আন্দোলন কর্মসূচি আরো ক‌ঠোর হ‌বে। দা‌বি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা মা‌ঠে থাক‌বে।

ঈদের ছু‌টির পর সোমবার (১৬ জুন) বেলা ১১টার পর সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের সামনে বাদাম তলায় কর্মচারীরা জ‌ড়ো হন। সেখান থে‌কে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

মি‌ছি‌লে নেতৃত্ব দেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির ও মো. নুরুল ইসলাম।

তারা এ সময় ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানব না’, ‘ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানব না, অবৈধ কালো আইন’, ‘ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান ধ‌রেন।

এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে এসে সমাবেশ ক‌রেন।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরতেছি। অনেক ক্যাডার সার্ভিস থেকে অনেকেই আন্দোলনে নেমে গেছে। আমরা একটা জিনিস বুঝে গেছি সরকার আমাদের সঙ্গে সাপ-লুডু খেলা খেলছে। আমরা চাইলাম মহার্ঘ ভাতা, পদ-পদবি পরিবর্তন, সচিবালয় ভাতা। সেটা ঠেকানোর জন্য সরকার করল অভিন্ন নিয়োগবিধি। তারপর এটা নিয়ে সচিবালয়ে বিশাল হুলুস্থুল শুরু হলে সেটা আমরা থামিয়ে দিলাম।”

তিনি বলেন, “যদি আমাদের কথায় কান না দেন তাহলে আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন ডাকতে বাধ্য হব। প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, অধ্যাদেশ জারির আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এ পর্যন্ত আমরা কেউ কোনো আলোচনার প্রস্তাব পাইনি। তাহলে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্যেও লুকোচুরি আছে। আজ আমরা রোদে পুড়ে আন্দোলন করছি, আপনারা এসিতে বসে আছেন। আমার এক বন্ধু বলেছে উপদেষ্টার দপ্তর, সচিবের দপ্তর, প্রশাসনের শাখায় খবর নেবেন তারা আমাদের মিটিংয়ে আসে কিনা। যদি না আসে আমরা তাদের আসতে বাধ্য করব। আমরা ধরে নেবে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আইন প্রণেতাদের সহযোগী।”

নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা এগুলো দেখতে, শুনতে ও বুঝতে চাই না। আমরা শুধু দেখতে চাই এই অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। আমরা সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বুঝি না। আমরা শুধু বুঝি এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। আমাদের পিছু হঠার কোনো সুযোগ নেই।”

তি‌নি ব‌লেন, “মঙ্গলবার সচিবালয়ের বাদাম তলায় বেলা ১১টায় জমায়েত হব। প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে ধরে নেব তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। এরপর যদি আমরা আলোচনার আমন্ত্রণ না পাই, তাহলে আমাদের দাবির সঙ্গে নতুন নতুন দাবি যুক্ত হবে।”

নুরুল ইসলাম বলেন, “এই অধ্যাদেশ বাতিল করলে আমরা নীরবে ঘরে ফিরে যাব। যদি আমাদের আগুনে জ্বালিয়ে আপনারা খেলা করতে চান, তাহলে আমরা এমন খেলা খেলব আপনারা ঘরে ঢুকতে পারবেন না। আপনারা সে কাজ করতে বাধ্য করবেন না।”

এ সময় ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির, কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম, নিজাম উদ্দিন আহ‌মেদসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব‌্য রা‌খেন। 

এরপর নেতারা আধ‌্যা‌দেশ বা‌তি‌লের দা‌বি‌তে দুপুর পৌঁনে ১টার দিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকে স্মারকলিপি দেন।

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।

আন্দোলন চলাকা‌লে গত ৪ জুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি সোমবার বিকেলে প্রথম বৈঠকে বসছে। কমিটির সুপারিশ দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।

এর আগে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।

অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সর্বশেষ ঈদের ছুটির আগে তিন জুন পর্যন্ত সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সরকারের সাতজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। ১৫ জুনের মধ্যে চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না করলে ১৬ জুন থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকিও দিয়েছিলেন কর্মচারী নেতারা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মডেল শীতলকে হত্যার বর্ণনা দিলেন প্রেমিক সুনীল
  • মডেলকে হত্যার বর্ণনা দিলেন প্রেমিক
  • শান্ত-মুশফিকে দ্বিতীয় সেশন বাংলাদেশের
  • শান্ত-মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরি, জুটির একশ
  • মডেলের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার, হত্যার বর্ণনা দিলেন প্রেমিক
  • শান্ত-মুশফিকের ব্যাটে ১০০ পেরিয়ে বাংলাদেশ
  • স্পেন থেকে ঘোড়ায় চড়ে মক্কায় গিয়ে হজ আদায়
  • হোটেলে তল্লাশি চালানো সেই সাংবাদিক গ্রেপ্তার
  • সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেলে তল্লাশি চালানো যুবক গ্রেপ্তার 
  • স‌চিবাল‌য়ে কর্মচারী‌দের বি‌ক্ষোভ, চল‌বে মঙ্গলবারও