এসবির সাবেক রিপোর্টার রাজুর ২৪ লাখ টাকার গাড়ি জব্দের আদেশ
Published: 5th, May 2025 GMT
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) সাবেক রিপোর্টার মো. শামসুল হক রাজু ওরফে রাজু আহমেদের গাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। যার বাজার মূল্য ২৪ লাখ টাকা।
আজ সোমবার দুদকের উপসহকারী পরিচালক আহাম্মেদ আশরাফ চৌধুরীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে দুই কোটি তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপনপূর্বক কমিশনে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। নিজ নামে, স্ত্রী ও সন্তানদের নামে তিন কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনপূর্বক তা দখলে রাখেন তিনি, যা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। এ ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। তদন্তকালে অপরাধলব্ধ অর্থ দিয়ে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদসমূহ বিক্রয়/হস্তান্তর বা বেহাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের মালিকানাধীন স্থাবর সম্পদসমূহ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদসমূহ অবরুদ্ধ করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে আদালত তার স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদসমূহ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। আদালতের আদেশ মোতাবেক জব্দকৃত স্থাবর সম্পদ এবং অবরুদ্ধকৃত অস্থাবর সম্পদের সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা, তদারকি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগে পুনরায় আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন আদালত।
আবেদনে আরও বলা হয়, আসামি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর অস্থাবর সম্পদ অংশে গাড়ি নং ঢাকা মেট্রো-ঘ-৩৫৩৭০৭ উল্লেখ করেছিল। তবে অধিকতর তদন্তে দেখা যায় যে, রাজু আহমেদের গাড়ির নম্বর হচ্ছে ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫৩৭০৭। অর্থাৎ দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে গাড়ির নম্বর ভুল দিয়ে কমিশন ও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা সঠিক মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে পারি না: ইমরুল
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে ১২ হাজার টাকায় দুই রুমের বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। যদিও শুরুর দিকে বিসিবি আমিনুলকে নিজেদের ব্যবস্থায় একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রেখেছিল। পরবর্তীতে বিদেশি কোচরা যেখানে থাকেন সেখানে থাকার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
কিন্তু আমিনুল নিজের ইচ্ছাতে বিসিবির কোনো ব্যবস্থায় না থাকার সিদ্ধান্ত নেন। অস্ট্রেলিয়ায় থাকে তার পুরো পরিবার। ঢাকার গেণ্ডারিয়াতে তার বেড়ে ওঠা। এখন সেখানে থাকার সুযোগ নেই। ঢাকায় অল্প কয়েকদিনের জন্য এলে আত্মীয়দের বাসাতেই উঠেন। এবার দেশে আসার পর তাকে দেওয়া হয় বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব। ফলে স্থায়ীভাবেই তাকে কয়েকমাস কাটাতে হচ্ছে বাংলাদেশে।
বিসিবি তার আবাসনের ব্যবস্থা করছে, এমন কথা শোনার পর নিজ থেকে সরে আসেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কম কথা হয়নি। পরবর্তী ১২ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপাক সাড়া ফেলেছে।
তবে এসবের আড়ালে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে অসম্মান করা হয়েছে বলে মনে করছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে ইমরুল নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ইমরুল লিখেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরে একটা বিষয় হয়তো আপনারা অনেকেই দেখেছেন—যে বিসিবি সভাপতি বর্তমানে মাত্র ১২ হাজার টাকার ভাড়ার একটি বাসায় থাকছেন। এই ব্যাপারটা আমার কাছে কোনোভাবেই স্বাভাবিক মনে হয়নি।’’
‘‘একজন মানুষ, যিনি নিজের স্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসে, শুধুমাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন, তাঁকে যদি এমন একটি বাসায় থাকতে হয়—তাহলে সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।’’
‘‘আমার জানা মতে, বিসিবি শুরুতে তাঁকে ভালো মানের একটি থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ এবং কিছু দুষ্টচক্র সেই বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি শুরু করে, যা তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করে। আর সেই সম্মানের খাতিরেই তিনি আজ এত সাধারণভাবে থাকছেন।’’
‘‘আমরা দেখে থাকি বিসিবি কত টাকা খরচ করে বিদেশি স্টাফ এবং কোচদের পেছনে, যার হিসাব কোটি টাকায় গড়ায়। অথচ, অন্যদিকে একজন সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান বোর্ড সভাপতিকে মাত্র ১২ হাজার টাকার একটি হোটেলে রাখা হচ্ছে। আমরা না হয় ব্যক্তি বুলবুলকে মূল্যায়ন না-ই করলাম, কিন্তু তাঁর মেধাকে তো অন্তত মূল্যায়ন করা উচিত, তাই না? নাকি আগের মতো যেভাবে সব কিছু চলেছে, সেভাবেই চলবে?’’
‘‘আসলে আমরা কবে শিখব একজন ভালো মানুষ কিংবা ভালো কিছুর সঠিক মূল্যায়ন করতে? কবে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেশের উন্নয়নে যারা কাজ করছে, তাদের পাশে দাঁড়াব?’’
‘‘এমন কিছু সংখ্যালঘু মানুষ সব সময়ই থাকে—যারা শুধু দেশের ক্রিকেট নয়, বরং গোটা দেশেরই ক্ষতি করে। যেমনি করে বুলবুল ভাই নিজেই বলেছেন, কিছুদিন পর তিনি চলে যাবেন।’’
‘‘দুঃখের বিষয়, আমরা অনেক সময় সঠিক মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে পারি না।’’
ঢাকা/ইয়াসিন