পাকিস্তানে ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বললেন, এটা দুঃখজনক
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানে ভারতের হামলা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “এটা দুঃখজনক।”
ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “আমরা ঠিক ওভাল অফিসে প্রবেশ করার সময় এই খবর পেলাম।”
ট্রাম্প বলেন, “আমি শুধু আশা করি, এটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাক।”
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে: ভারত
ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের
৭ মে রাতে বিবিসির খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করে হামলায় হতাহতের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে দুই দেশ যুদ্ধে জড়াক, তা তিনি চাননি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেজন্য দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্পের প্রতিনিধি। অবশেষে পাকিস্তানে হামলা চালাল ভারত।
বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে অবশ্য বলা হয়েছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের ৫টি স্থানে আঘাত করেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন লিখেছে, ৭ মে গভীর রাতে ভারতের এই হামলায় পাকিস্তানের অন্তত তিনজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও হামলা পরিচালিত হচ্ছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এই হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয় ইসলামাবাদ। এর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সেই থেকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যেই ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা করল ভারত। এখন পাকিস্তান কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় বা জবাব দেয়, তারপর ওপর নির্ভর করছে বাকিটা।
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
র্যাঙ্কিং অবনমনে দুশ্চিন্তায় বিসিবি
আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবনমন হওয়ার খবর শুনে আঁতকে ওঠেন সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না বাংলাদেশ ১০ নম্বরে নেমে গেছে। জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটও অবাক হয়েছেন। বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ র্যাঙ্কিংয়ে অবনমনের বার্তা। র্যাঙ্কিংয়ে অবনমনে ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের এ রকম প্রতিক্রিয়ার কারণ আছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রিয় সংস্করণ এটি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত যা সাফল্য, তা ওয়ানডে সংস্করণ থেকে পাওয়া। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনালে উন্নীত হওয়া এবং এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ ৫০ ওভারের গেমে। ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টে যে শিরোপা জিতেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজারা, তাও ওয়ানডে ক্রিকেটে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে সেরা চারে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সেই দলের ১০ এ নেমে যাওয়া যেন সেই স্বপ্নের মৃত্যু ঘটা। তবে বিসিবি-সংশ্লিষ্টরা মনে করেন ওয়ানডে ক্রিকেটে শিগগিরই পুনরুত্থান হবে। ২০২৭ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ের সেরা আটে থেকে সরাসরি বিশ্বকাপও খেলবে।
২০২৩ সালের বিশ্বকাপ দিয়ে পতন শুরু বাংলাদেশের। বিশ্বকাপ-পরবর্তী দল গোছাতে না পারায় মাঠের পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে বলে মনে করা হয়। আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা শেষ আট ওয়ানডের সাতটিতে হেরেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ফলে র্যাঙ্কিংয়ের এ অবনমনকে হতাশার বলে মনে করছেন নাজমুল আবেদীন, ‘র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়া দুশ্চিন্তার বিষয়। আমাদের সব থেকে শক্তির জায়গায় ছিল ওয়ানডে সংস্করণ। ২০১৫ সাল থেকে যে উত্থান ছিল, খুবই দুঃখজনক তা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটের অস্বচ্ছতার কারণে যে ক্রমাগত অবনতি হয়েছে, আমরা কেউ তা অস্বীকার করতে পারব না। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের হাতে যে সময় আছে এবং সামনে যে সংখ্যক ওয়ানডে ম্যাচ খেলব, আমাদের সুযোগ থাকবে এটাকে অতিক্রম করার। বিশ্বকাপে সরাসরি কোয়ালিফাই করা সম্ভব হবে।’
জাতীয় দলের সাফল্য-ব্যর্থতার সঙ্গে নির্বাচক প্যানেল অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক বাস্তবতা মেনে নিয়ে উত্তরণের পথ খোঁজার কথা বলছেন, ‘ফল ভালো না হলে তো র্যাঙ্কিং পেছাবেই। তবে ২০২৭ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সেরা আট দলে থাকা সম্ভব। সামনে অনেক খেলা আছে, এই দলটিকেই গড়ে তুলতে হবে। পুরোনো যারা ছিলেন, তারা থাকাতে অনেক ম্যাচ জিতেছি। এখন যারা এসেছে, তারাও জিতবে। আমরা ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ সরাসরি খেলব।’
সাবেক প্রধান নির্বাচক নান্নুর মতে, ‘আমরা সাতে রেখে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ১০ নম্বরে অবনমিত হওয়া দুঃখজনক। যেভাবেই হোক এখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। কী কারণে পিছিয়ে যাচ্ছি, তা খতিয়ে দেখে উত্তরণের পথ বের করতে হবে। বাংলাদেশের মান খারাপ হয়ে গেছে। ৫০ ওভারের ম্যাচে যে মানের ক্রিকেট আমরা খেলছি, তা গ্রহণযোগ্য না।’
আরেক সাবেক অধিনায়ক পাইলট বলছেন, ‘র্যাঙ্কিং এক ম্যাচ দিয়ে হয় না। ছয় মাস থেকে এক বছরের ম্যাচের গড় করা হয়। সেই মূল্যায়নে পিছিয়ে পড়ার অর্থ হলো আমরা মান হারিয়েছি।’