পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানও। এর জের ধরে এ দুই প্রতিবেশী দেশের উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোসহ আন্তর্জাতিক কয়েকটি বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট বাতিল করেছে অথবা গন্তব্য পাল্টেছে।

বেশ কয়েকটি ভারতীয় উড়োজাহাজ সংস্থা ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে তাদের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। রাজস্থান, পাঞ্জাবসহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি নগরেও উড়োজাহাজ চলাচল বাতিল করা হয়েছে।

এক্সটার্নাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ফিনএয়ার, এমিরেটস, টার্কিশ কার্গো ও সাউদিয়ার ফ্লাইটের গন্তব্য পরিবর্তনের তথ্য তুলে ধরেছে।

স্পাইসজেট বলেছে, ধর্মশালা, লেহ, জম্মু, শ্রীনগর, অমৃতসরসহ ভারতের উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু অংশে বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই সব গন্তব্য থেকে তাদের ফ্লাইট চলাচলে এর প্রভাব পড়েছে।

ইন্ডিগো এয়ারলাইনস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে ওই সব নগর থেকে তাদের ফ্লাইট চলাচল প্রভাবিত হয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়া স্থানীয় সময় আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, যোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় ও রাজকোটে চলাচল করা তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।

আরও পড়ুনভারতের হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বললেন ট্রাম্প, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ৪ ঘণ্টা আগে

উড়োজাহাজ সংস্থাটি আরও বলেছে, তারা তাদের অমৃতসরগামী দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের পথ পরিবর্তন করে সেগুলো রাজধানী দিল্লিতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

এদিকে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ লাহোর, করাচিসহ তাদের কয়েকটি বড় শহরের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে।

ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ পাকিস্তানের বড় কয়েকটি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ফ্লাইটরাডার২৪–এর তথ্য অনুযায়ী, অনেক উড়োজাহাজ পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়াতে অন্য পথে ঘুরে গেছে।

এক্সটার্নাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ফিনএয়ার, এমিরেটস, টার্কিশ কার্গো ও সাউদিয়ার ফ্লাইটের গন্তব্য পরিবর্তনের তথ্য তুলে ধরেছে।

আরও পড়ুনপারমাণবিক অস্ত্রে এগিয়ে পাকিস্তান, সার্বিক সক্ষমতায় ভারত২৬ এপ্রিল ২০২৫

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে এয়ার ফ্রান্স বলেছে, পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের ওপর দিয়ে তাদের সব ফ্লাইট চলাচল স্থগিত থাকবে। নির্দিষ্ট কয়েকটি গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচলের সূচি ও পরিকল্পনা সামঞ্জস্য করার কথাও জানিয়েছে তারা।

জার্মান উড়োজাহাজ সংস্থা লুফথান্সা রয়টার্সকে বলেছে, পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের উড়োজাহাজগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলবে।

আরও পড়ুনতিন রাফাল, এক মিগসহ ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান ‘ভূপাতিত’১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত দ র ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

চবিতে শিবিরকে নিয়ে ছাত্রদলের মিথ্যাচারের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে শাখা ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের মিথ্যাচার ও অপবাদের অভিযোগ তুলে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চবি শিবির।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে শাখা শিবিরের প্রচার সম্পাদক ইসহাক ভূঁঞা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) চাকসু নির্বাচন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে শাখা ছাত্রদল। সেখানে লিখিত ও মৌখিকভাবে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ শাখা শিবিরের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ করেন।

আরো পড়ুন:

ক্লাস ফাঁকি দিয়ে দেয়াল টপকাতেই হাতে ঢুকল রড

৬ ঘণ্টা পর রেলপথ ছাড়লেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) চাকসু নির্বাচন ও ক্যাম্পাস পরিস্থিতি বিষয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চবি ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে নানান অপবাদ এবং সুস্পষ্ট মিথ্যাচার করেছে। এসব ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে শাখা ছাত্রশিবির।

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর আলোচনায় শিবির এমফিল-পিএইচডির পক্ষে ও বয়স ৩০ এর কথা বলাই প্রশাসন সেটা নির্ধারণ করেছে বলে জানায়।

এর জবাবে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ছাত্রশিবির এমফিল, পিএইচডির পক্ষে ছিল মর্মে ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়ের দেওয়া উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, এমফিল-পিএইচডিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবেই পরিগণিত হয়। এজন্য সে সভায় উপস্থিত ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ এই বিষয়ে নীরব থেকে অন্যদের মতামতকে সম্মান জানিয়েছে।

এমফিল ও পিএইচডিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ এবং বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয়ে পরবর্তীতে গৃহীত সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একান্ত নিজস্ব। এতে ছাত্রশিবিরের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে হলে আসন বরাদ্দ এবং ডাইনিং পরিচালনা নিয়ে শাখা ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিনের বক্তব্যের জবাবে বলা হয়েছে, চবির হল ও ডাইনিং পরিচালনা প্রশাসনের নির্ধারিত নিয়ম ও নীতিমালার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী তারা মেধার ভিত্তিতেই সবগুলো হলে আসন বরাদ্দ দিয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রশিবির কোনোভাবেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ বা মতপ্রকাশে বাধা প্রদান করে না। বরং শিবির সর্বদা শিক্ষার্থীদের জন্য স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত ব্যবস্থাপনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা চবি ছাত্রদল সভাপতির এমন মিথ্যাচার ও অপবাদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

কমিটি নিয়ে চবি ছাত্রদল সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমানের বক্তব্যের উত্তরে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অজ্ঞতাবশত অথবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন। চবি ছাত্রশিবির প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও প্রত্যেকটি হল ও অনুষদে বছরের শুরুতেই কমিটি নবায়ন করেছে এবং সেটা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয়েছে। 

কমিটি ঘোষণার পর থেকে বিগত ৭ মাস যাবত প্রকাশ্যেই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন, কল্যাণমূলক কার্যক্রম এবং নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অপরদিকে, শাখা ছাত্রদল হল কমিটি দূরে থাক, ২০২৩ সালে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি দিলেও লোকবল সংকট বা গুপ্ত রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে অথবা অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ সন্ত্রাসী হানিফ ও ইকবাল কর্তৃক ককটেল বিস্ফোরণ এবং দোকান ভাঙচুরের পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যেখানে সরাসরি আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয় এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। উক্ত ঘটনাকে মব বলে সন্ত্রাসীদের পক্ষপাতীত্ব করা এবং হামলাকে সহজিকরণ করার হীন চেষ্টার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

গত ৬ আগস্ট জীববিজ্ঞান অনুষদের একটি কক্ষে কিছু শিক্ষার্থীর মাঝে কুরআন বিতরণ করে জীববিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রশিবির। যা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে, শ্রেণী কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক সম্প্রীতি নষ্টের উদ্দেশ্যেই ছাত্রদের জন্য কল্যাণমূলক এই কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে জলঘোলা করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে চবি ছাত্রদলের দেওয়া লিখিত বক্তব্যের ৩ নং পয়েন্টে শাখা ছাত্রশিবিরের তৎকালীন অফিস সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন রনিকে নিয়ে মিথ্যা দোষারোপ করা হয়েছে। বর্ণিত ঘটনার প্রকৃত রূপ সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। ৫ আগস্টের পর চবির বন্ধ হল থেকে গার্ডদেরকে ধাক্কা দিয়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী দাউদ সালমানকে সনদ এবং অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যাগভর্তি নেশাজাতীয় দ্রব্য এবং শটগানসহ হাতেনাতে আটক হয়।

পরবর্তীতে তাকে শটগানসহ সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী উপস্থিত সাংবাদিক এবং বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতার উপস্থিতিতে গুলিসহ সন্ত্রাসী আটক হয়েছে মর্মে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনাকে ভিন্নভাবে বর্ণনা দিয়ে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে শাখা ছাত্রশিবির।

বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “চবি ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শাখা ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের এমন মিথ্যাচার ও অপবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ৫ আগস্ট পরবর্তী এ দেশে আমরা এমন অপরাজনীতি আশা করিনি।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: ফলপ্রসূ দাবি, অর্জন নিয়ে প্রশ্ন
  • আলাস্কা শীর্ষ বৈঠক ট্রাম্প-পুতিন ও ইউক্রেনের জন্য কী বার্তা আনল
  • সোনারগাঁয়ের আলোচিত চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল গ্রেপ্তার
  • ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের
  • বাহাত্তরের ‘সরব কণ্ঠ’ বীর উত্তম জিয়াউদ্দিন, নীরবেই চলে গেলেন
  • চবিতে শিবিরকে নিয়ে ছাত্রদলের মিথ্যাচারের অভিযোগ
  • গণতন্ত্রে উত্তরণে আমরা কেন বারবার হোঁচট খাচ্ছি