রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকার সজ্জনকান্দায় অবস্থিত ডা. রতন ক্লিনিকে সাময়িকভাবে অস্ত্রোপচার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হয়।

সিভিল সার্জন স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ক্লিনিকটিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অপারেশন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপারেশন চালুর বিষয়ে পরবর্তী সময়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিদর্শন কমিটির মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নোটিশের অনুলিপি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক এবং বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন এস এম মাসুদ আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ২৩ এপ্রিল রাতে ডা.

রতনের ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসূতি শাহানা খাতুনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ২৭ এপ্রিল তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট রত্না পোদ্দার। অন্য দুই সদস্য ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট প্রদীপ কান্তি পাল এবং সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার সোহেল শেখ। তাঁদের প্রতিবেদনে ক্লিনিকের নোংরা পরিবেশ, অনুন্নত অপারেশন থিয়েটারসহ নানা অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়।

প্রসূতি শাহানা খাতুন রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের বেথুলিয়া মুন্সিপাড়ার খালেক সরদারের মেয়ে এবং পাবনার আমিনপুর থানার ঢালারচর ইউনিয়নের খদ্দেরকান্দি গ্রামের ফারুক মণ্ডলের স্ত্রী। শাহানার স্বামী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলেছেন।

এর আগেও এই ক্লিনিকে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আম্বিয়া আক্তার বীণা নামের এক অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যু হয়। সেই অস্ত্রোপচার করেন ক্লিনিকের মালিক চিকিৎসক রইসুল ইসলাম। ২০২২ সালের ৮ জুলাই টনসিলের অস্ত্রোপচারের পর ফিরোজ কাজী নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পরদিন ফিরোজের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ক্লিনিক মালিকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসব ঘটনায় একাধিকবার ক্লিনিকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ভ ল স র জন কম ট র প রস ত উপজ ল ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

জামিন পেলেন বেরোবি শিক্ষক মাহমুদুল হক

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ‘হার্ট অ্যাটাক’ করে মারা যাওয়া ছমেছ উদ্দিন (৬৫) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হককে জামিন দিয়েছেন আদালত। রোববার বিকেলে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতে শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক মোছা. মার্জিয়া খাতুন। 

এর আগে দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. সোয়েবুর রহমানের আদালতে জামিন আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে তিনি আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছিলেন। পরবর্তীতে মাহমুদুল হকের আইনজীবীরা রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের জন্য শরনাপন্ন হলে বিচারক মোছা. মার্জিয়া খাতুন শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন। এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ জুলাই হাজিরার দিন ধার্য রয়েছে।

মাহমুদুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম আল মামুন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যে মামলায় মাহমুদুল হককে আসামি করা হয়েছে মামলার বাদী এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমনকি আসামিকে চেনেনও না। আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পর যে শিক্ষক প্রতিবাদ জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে মামলা এবং তাকে গ্রেপ্তার করা জুলাই চেতনার পরিপন্থি। তিনি জানান, প্রথমে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাহমুদুল হকের জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত বক্তব্য শোনার পর পরবর্তী শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন। পরবর্তীতে আমরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন জানালে বিচারক আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন।

এদিকে জামিন আবেদনের আগে ও পরে আদালত চত্বরে জড়ো হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তারা মাহমুদুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান এবং এই মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দেন। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ছমেছ উদ্দিন হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। তারা অবিলম্বে মাহমুদুল হকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান এবং ঘটনাটিকে স্বাধীন চিন্তার ওপর আঘাত হিসেবে আখ্যা দেন।

পুলিশের ধাওয়া খেয়ে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মৃত্যুর ১০ মাস পর দায়ের করা হত্যা মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে তারা এর নেপথ্যে জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তির দাবি জানান।

মাহমুদুল হক রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত বছরের আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে এ বছরের ৩ জুন রংপুর নগরের হাজীরহাট থানায় ৫৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নগরের রাধাকৃষ্ণপুর মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা আমেনা বেগম। এ মামলার ৫৪ নম্বর আসামি মাহমুদুল হক। 

অন্যদিকে ওই মামলায় বেরোবি শিক্ষককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শনিবার হাজীরহাট থানার ওসি আব্দুল আল মামুন শাহকে বদলি করা হয়েছে।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আবদুল আল মামুন শাহ রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তাঁকে রংপুর মহানগর পুলিশের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রংপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক রাজিবুল ইসলামকে হাজীরহাট থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাহানারার সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক
  • যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্য রুটের ফ্লাইটে বিলম্ব: বেবিচক
  • শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান কামালের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের সিদ্ধান্ত
  • কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে মোশাররফের এইচএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত
  • আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাডোবির নতুন ক্যামেরা অ্যাপ
  • আকাশসীমা বন্ধ করায় ঢাকা থেকে ৪ দেশে ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা
  • স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিমানবাহিনী শুরু থেকেই ফেনীবাসীর পাশে ছিল
  • প্রেমিককে পরিচয় করালেও মাহি কেন বিয়ে করছেন না?
  • সংবিধানে ‘গণতন্ত্র’ থাকলে আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাসও থাকতে হবে: ইসলামী আন্দোলন
  • জামিন পেলেন বেরোবি শিক্ষক মাহমুদুল হক