গাড়ির জন্য ব্যতিক্রমী ডিসপ্লে তৈরি করেছে এলজি
Published: 7th, May 2025 GMT
গাড়ির অভ্যন্তরীণ নকশায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এলজি। গত মঙ্গলবার গাড়িতে ব্যবহার-উপযোগী নতুন প্রযুক্তির ব্যতিক্রমী এক ডিসপ্লে প্রদর্শন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন প্রযুক্তির ডিসপ্লেটি প্রয়োজনে সমতল স্ক্রিন থেকে বাটনে রূপান্তরিত হতে পারে। গাড়ির জন্য বিশেষভাবে তৈরি এই ডিসপ্লে প্রযুক্তিকে ‘ড্রাইভিং দ্য ফিউচার’ বলে অভিহিত করেছে এলজি।
নতুন প্রযুক্তির ডিসপ্লেটি গাড়িতে সহজেই স্থাপন করা যায় এবং এটি কাজের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রসারিত করা সম্ভব। প্রসারিত হলেও ডিসপ্লেটির পর্দার রেজল্যুশন ও রঙের মান পরিবর্তন হয় না। এতে রয়েছে প্রতি ইঞ্চিতে ১০০ পিক্সেলের রেজল্যুশন এবং পূর্ণ আরজিবি মানের রং প্রদর্শন সক্ষমতা। ব্যবহারকারীর স্পর্শ পেলে এই ডিসপ্লের নির্দিষ্ট অংশ উঁচু হয়ে উঠে যায় এবং সেটি বাটনের মতো ব্যবহার করা যায়। ফলে সমতল স্ক্রিনই হয়ে ওঠে একটি পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট।
এলজির দাবি, নতুন প্রযুক্তির ডিসপ্লে ব্যবহার করলে গাড়ির ভেতরে আলাদা কোনো স্ক্রিন বা বাটনের প্রয়োজন হবে না। এক স্ক্রিনেই গাড়ির ভেতরে থাকা সব সুবিধা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। বর্তমানে ডিসপ্লে প্রযুক্তিটির উন্নয়নে ‘সুইচেবল প্রাইভেসি মোড’ নিয়ে কাজ চলছে। নতুন এ সুবিধা যুক্ত হলে গাড়ির সামনে থাকা যাত্রীরা যেসব ভিডিও বা অ্যাপ ব্যবহার করবেন, তা চালক স্পষ্টভাবে দেখতে পারবেন না। এর ফলে চালকের মনোযোগ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা কমবে, বাড়বে সড়ক নিরাপত্তা।
নতুন প্রযুক্তির ডিসপ্লের পাশাপাশি গাড়ির পেছনের যাত্রীদের জন্য ১৮ ইঞ্চি পর্দার স্লাইডযোগ্য ওএলইডি স্ক্রিন তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এলজি। নতুন প্রযুক্তির ওএলইডি স্ক্রিনটি মাইনাস ৪০ থেকে ৮৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় সচল থাকবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
আদিবাসী দিবসে স্বীকৃতি চান পাহাড়িরা
দীর্ঘ বছর ধরে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশ পাহাড়ের আদিবাসীরা। তারা মনে করেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে। তাই দ্রুত পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ পাহাড় আর সমতলের সকল আদিবাসীদের, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন পাহাড়ের আদিবাসীরা।
৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবসকে ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমার দল ও বিভিন্ন সংগঠন খাগড়াছড়িতে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সেসব কর্মসূচি উপলক্ষ্যে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন পাহাড়িরা।
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলের সকল আদিবাসীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘদিনের কিন্তু এতদিন পরেও সেই স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশার কথা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসকৃত বিভিন্ন জাতিস্বত্তার মানুষ।
তারা জানিয়েছেন, আদিবাসী হিসেবে তাদের নিজস্ব ঐহিত্য, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচারসহ সবকিছু থাকা সত্ত্বেও বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকার তাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের ভূমি অধিকারও হরণ করা হয়েছে।
আদিবাসী বিষয়ক জাতীয় কোয়ালিশন, জেলা সমন্বয়কারী, নমিতা চাকমা বলেন, “পাহাড়ের ১৯০০ সালের আইন অনুসারে প্রথাগত আইনের মাধ্যমে ভূমির দখলি সত্ত্বটা বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাই তাদের অনেকের ভূমির কোনো দলিল বা কাগজপত্র নেই। আর এই সুযোগে আমাদের ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৭৪ সালের পর পাহাড়ে বাঙ্গালী পুর্নবাসন শুরু করার পর থেকে পাহাড়ের ভূমি বেদখল হয়ে গেছে, এখনো যাচ্ছে। বেদখলকৃত ভূমি উদ্ধার করার জন্য ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশন করা হয়, সেই কমিশনে প্রায় ১৬ হাজার আবেদন জমা পড়লেও কমিশনের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেই।”
ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীর সভাপতি অজিত বরণ চাকমা বলেন, “ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীদের সাথে সরকারের যে ২০ দফা প্যাকেজ চুক্তি ছিল, তাও বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই পাহাড়ের আদিবাসীরা মনে করেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিলে পাহাড়ের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত হবে আর স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির এমএন লারমা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, “আদিবাসী স্বীকৃতির দাবিটা দীর্ঘ বছরের। পাহাড়-সমতল মিলিয়ে ৪৪/৪৫টি জাতিসত্ত্বা আছে বাংলাদেশে। বিগত সরকারের কাছে জোর দাবি ছিল, দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল- সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের কাছে দাবি দাওয়া পেশ করে আসছি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হলেও আমাদের দাবি সরকারের কাছেই। দেশে যে সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকুক বা যে সরকার আসুক, আমাদের দাবি আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি।”
তিনি আরো বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমরা আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের দাবি নিয়ে যথেষ্ট নমনীয় হবেন, আন্তরিক হবেন কিন্তু সে ধরনের কোন আলামত দেখছি না। আগামীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসুক, আদিবাসী হিসেবে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে আদিবাসীরা যেসব অধিকার ভোগ করে, বাংলাদেশের আদিবাসীরাও যেন সেসব অধিকার ভোগ করতে পারেন।”
ঢাকা/রূপায়ন/এস