দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সংকট ও প্রশাসনিক উদাসীনতার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৭ মে) কলেজ চত্বরে প্ল্যাকার্ড হাতে সাত দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের জরাজীর্ণ ছাত্রাবাস, শ্রেণিকক্ষের চরম সংকট, পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থার অভাব, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস, শিক্ষক সংকট ও জায়গার স্বল্পতার মতো বহু পুরনো সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
আরো পড়ুন:
বই দেখে পরীক্ষা দেওয়ায় ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
পুকুরে কুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু, বাবা জানেন ছেলে অসুস্থ
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। তারা চান, এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মানবেতর পরিস্থিতিতে শিক্ষা নিতে বাধ্য না হয়।
কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইরফান আহমেদ ফাহিম বলেন, “বছরের পর বছর ধরে আমরা এই সমস্যাগুলো সহ্য করে আসছি। দাবি জানিয়েছি বারবার, কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই। এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দল-মত নির্বিশেষে এক হয়ে দাবিগুলো আদায়ের জন্য মাঠে নামব।”
কলেজ বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি আজম খান বলেন, “১৫৩ বছরের গৌরবময় ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও এই কলেজ আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত অবহেলিত, অবকাঠামোগত সংকটে জর্জরিত। আমরা আর চুপ থাকব না।”
শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পড়ি, যেটা রাজধানীর অন্যতম প্রাচীন কলেজ। অথচ বাস্তবে এখানে মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নেই। শিক্ষা নিতে গিয়ে যেন সংগ্রাম করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।”
তাদের দাবিগুলো হলো- দীর্ঘদিনের অব্যবহৃত ছাত্রাবাস সংস্কার ও হলের জন্য নতুন জায়গা বরাদ্দ; ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক নতুন হল নির্মাণ; শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত বাস ও পরিবহন ব্যবস্থা; শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনে বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণ; কলেজ ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য নতুন জায়গা বরাদ্দ; ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ এবং শিক্ষক সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিলুপ্ত ঘোষণার ৩ দিন পর খুলনা মহানগর মহিলা দলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল খুলনা মহানগরের ১২ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা নার্গিস আলীকে আহ্বায়ক এবং হালিমা আক্তার খানমকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
নবগঠিত কমিটির অন্যান্য সদস্য হলেন মোসাম্মাৎ আনজিরা খাতুন, শাহানা সরোয়ার, নাসরিন শ্রাবণী, হাসনা হেনা, নিঘাত সীমা, কাওসারী জাহান মঞ্জু, মিসেস মনি বেগম, জাহানারা পারভীন, মোসাম্মাৎ সালমা বেগম ও শাম্মী চৌধুরী মলি।
আহ্বায়ক কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে ৩ মে খুলনা মহানগর জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। মহানগর বিএনপির নেতারা জানান, মহিলা দলের এক নেত্রীর ওপর হামলার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২ মে বিকেলে নগরের কেডি ঘোষ রোডের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দা আরিফা আশরাফিকে (চুমকি) মারধর করেন প্রতিপক্ষের নারী কর্মীরা। চুমকির অভিযোগ, হামলাকারী ব্যক্তিরা নগর মহিলা দলের সভানেত্রী আজিজা খানমের (এলিজা) অনুসারী। এই ঘটনায় তিনি খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অভিযোগ করেন। তবে আজিজা খানম এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মে কেন্দ্রীয় কমিটি খুলনা মহানগর মহিলা দলের ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ৪ মে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে খুলনা মহানগর মহিলা দলের তিনজন নেত্রীকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করে মহানগর বিএনপি।