চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাকিব উদ্দিন ভূঁইয়ার ভাড়া বাসা থেকে সরকারি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও ১৬ রাউন্ড গুলি চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার ফরিদগঞ্জ থানার ১০০ গজ দূরে আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলায় এ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে (থানার উপপরিদর্শক) সাসপেন্ড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ রকিব উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পিস্তল গুলি উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত আটক হয়নি বলে তিনি জানান।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমানসহ সিআইডির পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সরকারের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা।

এদিকে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম সমকালকে জানান, রাকিব উদ্দিন গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফরিদগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। তিনি ওই বাসায় একাই থাকতেন। দুর্বৃত্তরা তার ওই বাসার তালাটি কৌশলে খুলে ফেলেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের অভিযুক্ত করে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পিস্তল ও গুলি এবং অন্যান্য মালামাল উদ্ধারে জোর তল্লাশি চলছে। তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এসআই মো.

রাকিব উদ্দিন তার সহকর্মী পুলিশ এবং সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন দুপুরে তিনি বাসা থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বের হন। বিকেলে বাসায় ফিরে দেখেন দরজা খোলা ও আসবাবপত্র এলোমেলো। দুর্বৃত্তরা তার বাসার ভেতরে একটি ব্রিফকেসে থাকা সরকারি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিনসহ ১৬টি গুলি এবং নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। 

এদিকে যে ভবনে ওই পুলিশ কর্মকর্তা থাকেন সেটির কাছেই থানা ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পসহ নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা রয়েছে। এছাড়া ভবনটির অন্যান্য ফ্ল্যাটেও থানার সদস্যরা ভাড়া থাকেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

জয়পুরহাটে রিমান্ডে নিয়ে আসামিকে নির্যাতন, এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) নির্যাতনের ঘটনায় চিকিৎসক দিয়ে আসামির শরীর পরীক্ষা করে আঘাতসংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং সিভিল সার্জনকে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন।

আক্কেলপুর থানার উপপরির্দশক (এসআই) গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে পুলিশি হেফাজতে থাকা ওই আসামিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের আদেশের পর গোলাম রব্বানীকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আক্কেলপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত মার্চে ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট শাখায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় থানা ও আদালতে পৃথক আটটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়। তাঁরা হলেন এজেন্ট শাখার মালিক জাহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক রিজওয়ানা ফারজানা ও ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা। তিন আসামি কারাগারে ছিলেন। ৪ আগস্ট তিন আসামিকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সোহেল রানা পুলিশি হেফাজতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম রব্বানী গতকাল আদালতে মাসুদ রানাকে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রের্কডের আবেদন করেন এবং আরও পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতের নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। তবে আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করে একটি আদেশ দেন।

আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি জাহিদুল ইসলাম ও রিজওয়ানা ফারজানাকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন বলে দোষ স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান। অপর আসামি মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ৪ আগস্ট তাঁকে পুলিশি হেফাজতে এনে এসআই গোলাম রব্বানী জানালার সঙ্গে হাতকড়া লটকায়ে বেধড়ক মারপিট করেছেন। তাঁর শরীরের ক্ষতচিহ্ন আদালতের পরীলক্ষিত হয়। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক নন। এ ছাড়া পুলিশি হেফাজতে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করায় তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আইনগত সুযোগ নেই।

আদালত একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দিয়ে মাসুদ রানার দেহ পরীক্ষা করে শরীরের আঘাতসংক্রান্ত প্রতিবেদন জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে আগামী ১০ আগস্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি মাসুদ রানার জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসামির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ না করেই পুলিশের কথা শুনে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এটি দায়িত্বের চরম অবহেলা। ঘটনাটি তদন্ত করে ১৭ আগস্ট সিভিল সার্জনকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে এসআই গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তিনজন আসামির কাউকেই পুলিশি হোফাজতে নির্যাতন করিনি। আসামি মাসুদ রানা টাকা আত্মসাতের কথা গ্রাহকদের সামনে স্বীকার করেছেন। এখন মামলাগুলো অভিযোগপত্র প্রস্তুতের পর্যায়ে রয়েছে। মাসুদ রানা মামলা থেকে বাঁচতে কৌশল খুঁজছেন।’

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এসআই গোলাম রব্বানী পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করেছেন। এ কারণে তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমরা শিক্ষকেরা সঠিক থাকলে, শিক্ষার্থীরা উন্নতি করবেই’
  • জয়পুরহাটে রিমান্ডে নিয়ে আসামিকে নির্যাতন, এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার
  • খুলনায় অস্ত্র ও গুলিসহ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার
  • ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৫ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
  • থানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি জামায়াত নেতার, গ্রেপ্তারের পর জামিন
  • ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
  • কেশবপুরে থানায় ঢুকে হুমকি, জামায়াতের পেশাজীবী সংগঠনের নেতা গ্রেপ্তার