খরা ও অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে বরিশালে আমড়া চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সদ্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ঐতিহ্যবাহী এ ফলের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক হাজার চাষি।

আমড়াচাষিরা বলছেন, জিআই স্বীকৃতি পাওয়া আনন্দের হলেও ফলনহানির শঙ্কায় এখন তাঁরা উদ্বিগ্ন। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি হয়নি। তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক বেশি। এতে আমড়ার ফুল ঝরে গেছে। বৈশাখে সামান্য বৃষ্টি হলেও মে মাসের শুরু থেকে তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। এমন প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ফলের গোটা (গুটিযুক্ত ছোট ফল) ঝরে পড়বে।

গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বরিশালের আমড়াসহ দেশের কয়েকটি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই স্বীকৃতি ঘিরে গর্ব ও উৎসাহের আবহ থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ চাষি জিআই স্বীকৃতির বিষয়টি জানেন না।

বরিশালের আমড়া শুধু একটি ফল নয়; দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ স্বাদ, পুষ্টিগুণ ও বহুমুখী ব্যবহারের কারণে দেশের নানা অঞ্চলে বরিশালের আমড়ার চাহিদা অনেক। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাস করা আত্মীয়স্বজনের কাছে এই আমড়া পাঠান বরিশালবাসী। অন্য অঞ্চলের মানুষও বরিশালের আমড়াকে স্বাদ ও গুণগত মানে আলাদা করে চেনেন।

বিভাগের ছয় জেলাতেই কমবেশি আমড়া চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় ঝালকাঠি সদর ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া, মদরা, ঈদেলকাঠি, কুড়িয়ানা, সোহাগদল, জলাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায়। এসব অঞ্চলে শত শত আমড়াবাগান আছে। স্থানীয় চাষিরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাণিজ্যিকভাবে আমড়া চাষ করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগে ১ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ হয়। বার্ষিক গড় উৎপাদন ২৪ হাজার ৬৮৪ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় পিরোজপুরে (৮ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন), এরপর ঝালকাঠিতে (৪ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন) এবং বরিশালে (৩ হাজার ৩৮৪ মেট্রিক টন)। চাষের জমির পরিমাণে অবশ্য শীর্ষে আছে ঝালকাঠি—৬০২ হেক্টর। চাষিরা জানান, পেয়ারার মৌসুম শেষে আমড়ার মৌসুম শুরু হয়, সাধারণত ভাদ্র মাস থেকে শুরু হয়ে চলে দুই মাস।

বাঁশের মাথায় জাল বেঁধে আমড়া পাড়ছেন এক চাষি।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ট র ক টন

এছাড়াও পড়ুন:

গভর্নরের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়লেন চাকরিচ্যুত নারী কর্মী

চাকরি ফেরতের দাবিতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএমএসএমই নারী উদ্যোক্তা মেলার সামনে আন্দোলন করেছেন ব্র্যাক ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এই মনসুর অনুষ্ঠান শেষ করে বের হওয়ার সময় তার গাড়ি আটকিয়ে অবরোধ করেন তারা। এ সময় একজন নারী কর্মী গভর্নরের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। পরে নিরাপত্তা সদস্যরা তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে বাংলা একাডেমির গেটে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্র্যাক ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কয়েকজন জানান, ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীরা সকাল থেকে বাংলা একাডেমির সামনে অবস্থান করেন। গভর্নর বের হওয়ার সময় তারা তার গাড়ির চারদিকে ঘিরে চাকরি ফিরিয়ে দিতে স্নোগান দেয়। এ সময় চাকরিচ্যুত একজন নারী কর্মী গভর্নরের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। এ সময় অন্যান্য নারীর সহায়তায় নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে সরিয়ে নেন। পরে গভর্নর বাংলা একাডেমি এলাকা ত্যাগ করেন।

আরো পড়ুন:

এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন এমডি ড. তৌহিদ

এপ্রিলে রেমিট্যান্স এলো ২৭৫ কোটি ডলার

আন্দোলনরত কর্মীদের একজন বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ব্র্যাক ব্যাংকের সেবা দিয়ে আসছি। আমাদের পরিশ্রমের কারণে ব্র্যাক ব্যাংক আজ এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। অথচ আমাদের কোনো নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করেছে। আমরা আমাদের চাকরি ফেরত চাই।”

ব্র্যাক ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীরা জানান, করোনা ও করোনা পরবর্তী সময়ে আড়াই হাজারের বেশি কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে ব্রাক ব্যাংক। ওই সময় কোনো নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। 

এর আগে, চাকরি ফেরতের দাবিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে আসছেন ব্র্যাক ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনেও আন্দোলন করেন তারা। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ব্র্যাক ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত ২ হাজার ৬৬৮ জন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন হয়।

ঢাকা/এনএফ/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ