সুন্দরবনের বনজীবীদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। এর মাধ্যমে বনজীবীদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখাসহ অপরাধ দমন সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বন কর্মকর্তারা বলেন, ডিজিটাল পরিচয়পত্রটির মাধ্যমে কোনো জেলে বা বনজীবী সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করলে বনরক্ষীরা খুদে বার্তার মাধ্যমে সহজেই তা জানতে পারবেন।

আজ বৃহস্পতিবার সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বর্তমানে বনজীবীদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র তৈরির জন্য পরামর্শক নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। আমরা আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সুন্দরবনের সম্পদ সংগ্রহকারীদের ডেটাবেজ তৈরি শেষে বনজীবীদের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দিতে পারব।’

সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বন বিভাগকে। মন্ত্রণালয়টির উপসচিব কামরুল ইসলামের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সুন্দরবন–সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় জনসাধারণ বনের মাছ ও কাঁকড়া আহরণ, মধু সংগ্রহ ও গোলপাতা সংগ্রহের ওপর নির্ভরশীল। বনের সুরক্ষার জন্য এই নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে তাঁদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র প্রদান করে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। বনজীবী ছাড়াও পর্যটনসংশ্লিষ্ট ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইডদের পৃথক ডেটাবেজ তৈরির বিষয়েও বলা হয়েছে।

এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে জেলেরা বন বিভাগের কার্যালয়ে না গিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে রাজস্ব জমা দিয়ে সুন্দরবনে ঢুকতে পারবেন। আর কার্ডধারী কোনো জেলে সুন্দরবনের নিষিদ্ধ অভয়ারণ্যে প্রবেশ করলে বনরক্ষীদের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেসেজ চলে যাবে। সেখানে স্পষ্ট বোঝা যাবে, কোন জেলে নিষিদ্ধ এলাকায় যাচ্ছেন।

স্মার্টকাডটি কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, ওই স্মার্ট কার্ডে একটি কিউআর কোড থাকবে। ওই কিউআর কোড দিয়ে বনজীবীদের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। তাদের ছবি, ঠিকানা, কবে বনে ঢুকেছেন, কবে বের হবেন, কোন জাল দিয়ে মাছ শিকার করবেন, কত টাকা রাজস্ব দিয়েছেন—সব তথ্য ডিভাইসের মাধ্যমে দেখা যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দরবন র বনজ ব দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিলুপ্তির মুখে থাকা বাটাগুর বাসকার ৬৫টি নতুন প্রাণ সুন্দরবনে

প্রকৃতিতে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা বা কালি কাইট্টা প্রজাতির ৬৫টি কচ্ছপ জন্ম নিয়েছে সুন্দরবনে। রোববার থেকে বনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রে ডিম ফুটে কচ্ছপছানাগুলো বেরিয়ে আসতে শুরু করে। বিশেষ ইনকিউবেটরের সাহায্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিম থেকে ফোটা বাচ্চাগুলোকে কেন্দ্রের কচ্ছপ লালন-পালনকেন্দ্রের সংরক্ষিত প্যানে রাখা হয়েছে।

গেল ১৫ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের পুকুরপাড়ে তিনটি বাটাগুর বাসকা মোট ৮২টি ডিম দেয়। পরে সেগুলো সংগ্রহ করে বিশেষ ইনকিউবেটরে (পুকুরপাড়ের বালুর চর) রাখা হয়। রোববার থেকে বাচ্চাগুলো ফুটে বের হতে শুরু করে। সব মিলিয়ে সোমবার সকাল পর্যন্ত ৬৫টি বাচ্চা হয়। অবশিষ্ট ডিমগুলো নষ্ট হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের করমজল বন্য প্রাণী ও প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, করমজল কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৫২১টি ডিম থেকে ৪৭৫টি বাচ্চা ফুটেছে। এ বছর তিনটি বাটাগুর বাসকা মোট ৮২টি ডিম দিয়েছিল। নিবিড় পরিচর্যা ও বিশেষ ইনকিউবেটরে বালুর মধ্যে রেখে বাচ্চা ফোটানোর চেষ্টা করা হয়। মোট ৬৫টি বাচ্চা ফুটেছে। বাচ্চাগুলোকে কচ্ছপ লালন-পালনকেন্দ্রর সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়েছে। বড় হলে এগুলো সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হবে।

ডিম ফুটে বেরিয়ে এসেছে কচ্ছপের বাচ্চাগুলো। সোমবার সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবন থেকে নৌকাসহ ৪২ কেজি হরিণের মাংস জব্দ
  • সঞ্চয়পত্র কেনায় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখানোর বাধ্যবাধকতা থাকছে না
  • সীমান্তে পরিচয়পত্রহীন ৯৬ জনকে পুশইন
  • ‘বাঘ-কুমিররে ভয় পাইনি, মানুষের ভয়ে আমাগের সুন্দরবন ছাড়তি হলো’
  • সমাবর্তন ঘিরে চবিতে নিরাপত্তা জোরদার, পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার নির্দেশ
  • সুন্দরবনের দস্যু বাহিনীর ২ সদস্য আটক, অস্ত্র জব্দ
  • বিলুপ্তির মুখে থাকা বাটাগুর বাসকার ৬৫টি নতুন প্রাণ সুন্দরবনে
  • সুন্দরবনে অসুন্দর মাছ শিকার