বলিউডের তারকা জুটি রণবীর কাপুর ও দীপিকা পাড়ুকোন। রুপালি পর্দার নয়, তাদের ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম বলিপাড়ায় খোলা বইয়ের মতো ছিল। সেই প্রেম ভেঙে গেছে। এরপর রণবীর সিংকে বিয়ে করেন দীপিকা, আর আলিয়াকে বিয়ে করে থিতু হন রণবীর কাপুর। তারা দুজনেই এখন বাবা-মা। 

করন জোহর সঞ্চালিত ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানের পঞ্চম সিজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন রণবীর কাপুর এবং রণবীর সিং। সেখানে সঞ্চালক রণবীর কাপুরের কাছে জানতে চান দীপিকার সঙ্গে আপনার বর্তমান সম্পর্ক কেমন?

এ প্রশ্নের জবাবে রণবীর কাপুর বলেন, “আমরা দুজনই ইতিবাচকভাবে নিজেদের জীবনে এগিয়ে গিয়েছি। আমাদের ভেতর এখন আর অস্বস্তিকর কোনো অনুভূতি নেই। আমরা এখন ভালো বন্ধু।”

আরো পড়ুন:

মেয়ের নাম ‘দুয়া’ রাখার কারণ জানালেন দীপিকা-রণবীর

বাবা হওয়ার পর বিলাসবহুল গাড়ি কিনলেন রণবীর সিং

এরপর দীপিকার স্বামী-অভিনেতা রণবীর সিং সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলেন সঞ্চালক। উত্তরে রণবীর কাপুর বলেন, “আমি চাই, ওদের ঘরজুড়ে সুন্দর সুন্দর বাবু আসুক। ওরা (দীপিকা–রণবীর সিংয়ের সন্তানেরা) আমার মতো অভিনেতা হোক এবং অভিনেতা হিসেবে আমাকে পছন্দ করুক।”

ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর দীপিকার প্রেমে মজেন রণবীর কাপুর। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সম্পর্কে ছিলেন এই জুটি। দীপিকার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানার পর আলিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। মূলত, আয়ান মুখার্জি নির্মিত ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ সিনেমায় কাজ করতে গিয়েই তাদের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তা প্রেমে রূপ নেয়।

২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান আলিয়া-রণবীর। তারপর দীর্ঘ দিন চুটিয়ে প্রেম করেন। তাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল মুম্বাইয়ের পালি হিলসের রণবীরের ‘বাস্তু’ বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তারা। ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর কন্যাসন্তান জন্ম দেন আলিয়া।

রণবীরের কাপুরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দীপিকার জীবনে আসে রণবীর সিং। সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ‘রাম-লীলা’ সিনেমার শুটিং সেটে একে অপরের কাছে আসেন এই জুটি। এরপরে বলিপাড়ায় রণবীর সিং ও দীপিকা পাড়ুকোনের প্রেম ও বিয়ের গুঞ্জন চাউর হয়। যদিও তারা শুরুতে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। ২০১৮ সালের নভেম্বরে বিয়ে করেন এই জুটি। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর কন্যাসন্তান জন্ম দেন দীপিকা পাড়ুকোন।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রণব র স রণব র ক প র আল য় ভ ট রণব র ক প র রণব র স ন রণব র

এছাড়াও পড়ুন:

৪১ বছর ধরে হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিলি করেন গাইবান্ধার রহিম

গাইবান্ধার পত্রিকা বিক্রেতা আবদুর রহিম। বাড়ি পলাশবাড়ী পৌরসভার নুনিয়াগাড়ি এলাকায়। বয়স ৭১ বছর। এই বয়সেও তিনি ঘুমভাঙা চোখে একনজর পত্রিকার শিরোনাম দেখে নেন। পত্রিকা গুছিয়ে বগলে চেপে ছুটে চলেন পাঠকের কাছে। ‘ভাই, আজকে গরম খবর আছে’ বলেই পাঠকের হাতে এগিয়ে দেন পত্রিকা।

এক পাঠক থেকে আরেক পাঠকের কাছে যান আবদুর রহিম। পত্রিকা বিলি করেন সকাল ৬টা থেকে টানা ৭ ঘণ্টা। বিকেল ৫টা থেকে ৪ ঘণ্টা বিলি করা পত্রিকার টাকা সংগ্রহ করেন। ১১ ঘণ্টার বেশির ভাগ সময় হেঁটে পত্রিকা বিলি ও টাকা সংগ্রহ করেন। দূরের পাঠকের কাছে যান বাইসাইকেলে। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার হেঁটে বিলি করেন পত্রিকা। এভাবেই দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে গাইবান্ধায় পত্রিকা বিলির কাজ করছেন তিনি।

আবদুর রহিম বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে পত্রিকা বিলির কাজ শুরু করি। বেলা ১টার দিকে শেষ হয়। উপজেলা সদরে হেঁটে বিলি করি। তবে সদর থেকে ৬-৭ কিলোমিটার দূরে জুনদহ, কালীতলা, ঢোলভাঙ্গা, হোসেনপুর এলাকায় সাইকেলে যাই। এসব জায়গায় সাইকেল রেখে হেঁটে পত্রিকা বিলি করি। দুপুরে বাড়িতে বিশ্রাম নিই। এরপর পত্রিকা বিক্রির টাকা তোলা শুরু করি। টাকা তুলতে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময় লাগে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার হাঁটাহাঁটি হয়ে যায়। এ রকম ব্যস্ততায় কীভাবে ৪১ বছর কেটে গেল, টেরই পেলাম না! তবে পত্রিকা বিলি করে আনন্দ পাই। অনেক পাঠক আমাকে ভালোবাসেন, খোঁজখবর নেন।’

দীর্ঘ সময় পত্রিকা বিলি করতে সমস্যা হয় কি না, তা জানতে চাইলে আবদুর রহিম বলেন, ‘আমার কোনো অসুখবিসুখ নেই। যত দিন শরীর ভালো থাকবে, তত দিন এই কাজ চালিয়ে যাব।’

ব্যবসার শুরু

রহিমের পৈতৃক বাড়ি রংপুর শহরের আরাজি গুলাল বুদাই এলাকায়। সেখানে তাঁর বাবার ৩ শতাংশ জমিতে বসতভিটা ছিল। এ ছাড়া কোনো সম্পদ ছিল না। বাবা আবেদ আলী অনেক আগেই মারা গেছেন। তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। লেখাপড়া করেছেন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। ছোটবেলা থেকেই কৃষিকাজ করতেন। ১৯৭৫ সালে বিয়ে করেন একই এলাকায়। তাঁর ছয় মেয়ে ও এক ছেলে। দারিদ্র্যের কারণে সংসার চালানো একসময় কঠিন হয়ে পড়ে।

রহিমের খালাতো ভাই রংপুর শহরে পত্রিকা বিলি করতেন। তাঁর পরামর্শে ১৯৮৪ সাল থেকে রংপুরে স্থানীয় পত্রিকা দিয়ে আবদুর রহিমের এই ব্যবসার যাত্রা শুরু। এরপর তিনি বাসে ফেরি করে বিক্রি করতে থাকেন পত্রিকা। প্রতিদিন রংপুর থেকে বাসে উঠে পলাশবাড়ী পর্যন্ত আসেন। এভাবে তিন বছর কেটে যায়। এরপর পলাশবাড়ীর স্থানীয় এক সাংবাদিকের বাড়িতে থেকে পত্রিকা বিক্রি শুরু করেন। ছয় মাস থাকেন সেখানে। এরপর জমানো ও ঋণের টাকায় নুনিয়াগাড়ি এলাকায় সোয়া ৮ শতাংশ জমি কিনে টিনশেড ঘর বানান। বাড়ি থেকে ব্যবসা করতে থাকেন। পলাশবাড়ী চারমাথা এলাকায় বসে ঢাকা, রংপুর ও বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা সংগ্রহ করে পলাশবাড়ী উপজেলা সদরে বিক্রি করতে থাকেন।

হকার থেকে এজেন্ট

কয়েক বছর পর আবদুর রহিম নিজের নামে বেশ কিছু পত্রিকার এজেন্সি নেন। পত্রিকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় একা সামলাতে পারছিলেন না। তাই চারজন লোক নিয়োগ করেন। তাঁরা এখনো রহিমের কাছে কমিশনে পত্রিকা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ব্যবসা শুরুর সময় প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ কপি পত্রিকা বিলি করতেন। মাসিক আয় ছিল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। কয়েক বছর পর পাঠকের চাহিদা বেড়ে যায়। সে সময় মাসিক আয় হতো ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে ছাপা পত্রিকার পাঠক কমে গেছে। এখন প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৬০ কপি পত্রিকা বিলি করছেন। বর্তমানে তাঁর মাসিক আয় গড়ে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা।

আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পত্রিকার ব্যবসা করে রংপুর থেকে এসে পলাশবাড়ীতে বাড়ি করতে পেরেছি, মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। সততার সঙ্গে চলছি। এতেই আমি সন্তুষ্ট।’

পলাশবাড়ী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ান সরকার বলেন, ‘আবদুর রহিমকে বহু বছর ধরেই পত্রিকা বিক্রি করতে দেখছি। তাঁকে দেখে মনে হয় না ৭১ বছর বয়স হয়েছে। তাঁর মধ্যে ক্লান্তি দেখা যায় না। দিন-রাত পরিশ্রম করেন। কখনো তাঁকে মিথ্যা বলতে শুনিনি। এলাকার মানুষ তাঁকে ভালোবাসেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা তৃতীয়বার বিশ্বকাপ না খেলার শঙ্কায় ইতালি, ২৮ বছর পর নরওয়েকে বিশ্বকাপে ফেরালেন হলান্ড
  • রেলের ৭ লাখ টাকার যন্ত্র ২৭ হাজারে বানালেন তিনি
  • রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
  • জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণাই তাঁর নেশা 
  • ইমরান খানকে ‘শান্তির জন্য বড় হুমকি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন জেফরি এপস্টেইন
  • ইডেনে স্পিন বিষ, ১৫ উইকেটের দিনে উড়ছে ভারত
  • বিচারকের ছেলে হত্যা মামলার আসামি লিমন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
  • বিচারকের ছেলে হত্যা: লিমন ৫ দিনের রিমান্ডে
  • ‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব’
  • ৪১ বছর ধরে হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিলি করেন গাইবান্ধার রহিম