ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল
Published: 8th, May 2025 GMT
ময়মনসিংহে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠানকে লাঠি দিয়ে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বুধবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক অজ্ঞাত যুবক তাঁর দুই হাত চেপে ধরে রেখেছেন। এ সময় মাক্স পরে থাকা অপর এক যুবক তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন।
১৩ সেকেন্ডের এ ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নেটিজেনরা বলেন, একজন প্রবীণ শিক্ষক ও রাজনীতিককে এভাবে হেয় করা ঠিক হয়নি।
অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, লাঠি দিয়ে পেনোর ভিডিওটি ঢাকার কোনো একটি এলাকার। কিছুদিন আগে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে এই আওয়ামী লীগ নেতার পরিচয় প্রকাশ হলে তারা তাকে আটক করেন। এ সময় তাঁকে লাঠিপেটা করে মধ্যস্থতার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার সত্যতার বিষয়ে দায়িত্বশীল কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
নগরীর মহারাজা রোড এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত ৫ আগস্ট থেকে ইউসুফ খান পাঠান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম খান বলেন, এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ আওয় ম ল গ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহের আ.লীগ নেতাকে পেটানোর ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠানকে কয়েকজন তরুণ একটি কক্ষের মধ্যে পেটাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লেও ঘটনাটি প্রায় এক মাস আগের বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
১৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে তিনজন তরুণের মধ্যে একজন চেয়ারে বসে আছেন। একজনের হাতে কাঠের একটি খাপ ও মুখে মাস্ক পরা। কক্ষের টেবিলটির দিকে ইউসুফ খানের হাত রেখে এক তরুণ চাপ দিয়ে ধরে রেখেছেন। উল্টো দিকে ইউসুফ খানের নিতম্বে কাঠ দিয়ে আঘাত করছেন মুখে মাস্ক পরা তরুণ।
অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। জেলার নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে শিক্ষকতা করে অবসরে যান। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন। তিনি নগরের মহারাজা রোডের বাসিন্দা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিওটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন ময়মনসিংহের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান। পরে সেটি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
মোহিত উর রহমান ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখেন, ‘অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, একজন নির্বিবাদী মানুষ। বাকিটা আপনাদের বিবেকের কাছে ছেড়ে দিলাম।’
ভিডিওটি আওয়ামী লীগের পেজে পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘চাঁদা না দেওয়ায় ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠানকে তুলে নিয়ে মারধর ও অমানবিক নির্যাতন করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।’
আজ দিনভর ইউসুফ খানের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি বারবার কেটে দেন। তবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যে ব্যক্তিকে পেটানো হচ্ছে, তিনি ইউসুফ খান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী আজাদ জাহান (শামীম)।
ইউসুফ খান ও তাঁর পরিবারের বরাতে আজাদ জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্টের পর ইউসুফ খান রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ১৬ এপ্রিলের। ইউসুফ খান ধানমন্ডি লেকের কাছে একটি চায়ের দোকানে নিয়মিত চা খেতে যেতেন। তাঁর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার বিষয়টি বুঝে যায় একটি চক্র। ১৬ এপ্রিল বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে ধানমন্ডি লেকের দিকে যাওয়ার পথে ৬-৭টি মোটরসাইকেলে এসে সমন্বয়ক পরিচয়ে একটি দল তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর একটি বাসায় নিয়ে আটকে ব্যাপক মারধর করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু ইউসুফ খান এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে তারা থানায় ফোন করে মামলার ব্যাপারে জানতে চায়। পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার ভয় দেখালে ৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হন ইউসুফ খান এবং কয়েক দিনের সময় চান। এরপর ইউসুফ খানকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্নজনের সঙ্গে পরামর্শ করে বাসা পরিবর্তন করেন ইউসুফ খান। তিনি বলেন, ‘যে বাসায় ইউসুফ খান থাকতেন, সেখানে গিয়ে চক্রটি তাঁকে না পেয়ে তাঁদের করে রাখা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে। বর্তমানে ইউসুফ খান নিরাপদে আছেন।’
ময়মনসিংহে কর্মরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মাসখানেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া একটি দল ইউসুফ খানকে আটক করেছিল। তখন পুলিশের কাছে ইউসুফ খানের মামলাসংক্রান্ত তথ্যও নেওয়া হয়। মামলা আছে জানানোর পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেনি। হয়তো কোনো সিস্টেম করেছে।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, ইউসুফ খান বিস্ফোরক মামলার আসামি। পুলিশ তাঁকে আটক করেনি। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির বিষয়ে তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না।