করিডোরের নামে কিছু জনগণের ওপর চাপানো যাবে না: মির্জা ফখরুল
Published: 8th, May 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানবিক করিডোরের নামে কোনো কিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। কিছু পণ্ডিত-একাডেমিশিয়ান বসে মনে করছেন, মানুষের পক্ষে যাবে না– এমন কিছু তারা চাপিয়ে দিতে পারবেন। সেটি কোনো দিনই পারবেন না।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত যিনি আছেন (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা), তিনি দেখছি অনেক কথা বলছেন। সেদিন বলেছেন– ‘সীমান্তের ওপারে যেই থাক, তার সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হবে।’ তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন; দেশের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন না। আলোচনাটা করেন। আমরা দেশ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে কখনও বাধা নই। বরং আমরা সামনে এসে দাঁড়াব। লড়াইটা আমরাই করি। সে জায়গা থেকে বলব, দয়া করে বাংলাদেশের মানুষকে আন্ডার এস্টিমেট করবেন না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য চাই_ বারবার বলছি। আমরাই তাদের বসিয়েছি। কিন্তু আপনারা এমন কোনো কাজ করবেন না, যা জাতির বিরুদ্ধে যাবে; দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যাবে। কিন্তু আপনারা আজ এমন এমন কাজ করছেন, যা মানুষের কাছে স্পষ্ট না। প্যাসেজ দেবেন, করিডোর দেবেন। অথচ এসব নিয়ে মানুষের সঙ্গে আলাপই করছেন না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি করিডোর দিচ্ছেন আরাকানে, যেখানে আরাকান আর্মি সরকারে নেই। করিডোর কী দেবেন? প্রয়োজন হলে একশ বার দেবেন। কিন্তু আপনি তো জনগণকে নিয়ে সেটি করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। কোনো আলোচনা তো নাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত পরশু আবারও প্রমাণিত হয়েছে– খালেদা জিয়া এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক; বিএনপি সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দল। প্রমাণিত হয়েছে– একমাত্র বিএনপি এবং তারেক রহমানের হাতে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র নিরাপদ।
তিনি বলেন, অনেকেই বলছে– আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারেই যদি ৫-১০ বছর লাগে, তাহলে কি এই সময়ে কোনো নির্বাচন হবে না? ১০ বছর ফ্যাসিবাদী আমলাদের হাতেই চলবে দেশ? কর্মরত আমলাদের ৯০ শতাংশই তো ফ্যাসিবাদের দোসর। মনে রাখবেন, অনির্দিষ্ট মেয়াদের অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের জন্য খুব উপকারে আসতে পারে না।
প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (সরকার) অনেক পরিবর্তন আনছেন। বলছেন– ফুট স্টেপ রেখে যাবেন। তা কী কী পরিবর্তন হয়েছে? পত্রিকায় দেখলাম, অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমেরিকার ট্যারিফ পলিসির কারণে নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করছেন না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সালাহউদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান, সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, প্রয়াত এ জে মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী ফারজানা আলী প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল আইনজ ব কর ড র ব এনপ ফখর ল সরক র করব ন করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করছি: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে, এমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি করা, যেখানে মানুষ গুম-খুনের শিকার হবেন না৷ নিজস্ব বিশ্বাসের কারণে নিপীড়নের শিকার হবেন না। কোনো নাগরিকই নিপীড়িত হবেন না৷ জনগণের একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করছি।
বুধবার (৭ মে) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আলোচনার সূচনায় জাতি, রাষ্ট্র এবং জনগণের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আশা ব্যক্ত করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব আদর্শিক পরিকল্পনা থাকে৷ তারপরও মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে একটি রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণের সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে৷
তিনি আরো বলেন, এ দেশের জনগণের চাওয়া হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা৷ কেবল কমিশনের আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য গড়ে উঠবে, তা আমি মনে করি না৷ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি।
গত ১০ এপ্রিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তাদের মতামত জমা দেয়৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে দলটির সঙ্গে আজ আলোচনায় বসে কমিশন৷
আলোচনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদের নেতৃত্বে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী ও মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
ঢাকা/এএএম/রফিক