রপ্তানিমুখী খাতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দাবি
Published: 9th, May 2025 GMT
রপ্তানিমুখী খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া এবং নতুন শিল্পে জ্বালানির নিশ্চয়তাসহ টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাতে সমস্যা নিরসনে ১৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে দি ইন্সটিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টস (আইটিইটি)। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রাক-বাজেট আলোচনা উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা। শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় আইটিইটির সদস্যসচিব ইঞ্জিনিয়ার এনায়েত হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে সম্ভাবনাময় টেক্সটাইল খাতে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকার উৎপাদনমুখী শিল্পে যে কোনো পরিমাণ বিনিয়োগে প্রশ্ন ছাড়াই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিয়েছিল। সে সময় তার সুফলও পাওয়া গিয়েছিল। শিল্পে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ হয়েছিল। এছাড়া কালো বা অপ্রদর্শিত টাকা শিল্পে বিনিয়োগের ফলে টাকা পাচারকে অনুৎসাহিত করা গেছে। আসন্ন বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এই খাতের সমস্যা নিরসনে ১৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়ে বলা হয়, নতুন শিল্প স্থাপনে গ্যাসের পূর্ব মূল্য ফিরিয়ে আনা, পোশাক রপ্তানিতে শুল্কহার কমানো, বস্ত্র খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সঠিকতা যাচাই, খুচরা যন্ত্রাংশ ও ডাইং কেমিক্যাল আমদানিতে শুল্ক কমানো, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসনে ৫০ একর নতুন জমি বরাদ্দ দেওয়া, তুলা ডাম্পিংয়ের জন্য ফ্রি-জোন প্রতিষ্ঠা, শিল্পের জন্য বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা রাখা, বন্ডেড ওয়্যারহাউজ নীতিমালার পরিবর্তন, শিল্প কারখানায় সোলার সিস্টেম স্থাপনে কর কমানো, বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে কমার্শিয়াল উইংয়ে ন্যূনতম একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া এবং সরকারি উদ্যোগে ডাইস-ক্যামিক্যাল ও মেশিন ম্যানুফেকচারিং প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং নতুন কর্মস্থান সৃষ্টি হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইটিইটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এহসানুল করিম কায়সার, যুগ্ন আহ্বায়ক এটিএম শামসুদ্দিন খান, সদস্য সাইদুর রহমান, রৌশন জামিল টিপু প্রমুখ।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় ড. ইউনূস ও দুদক
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। গতকাল সোমবার ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিশে তিনি বলেছেন, তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।
সে সঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা, বিশেষ করে তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা, রাজনৈতিক দল এবং দেশসেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন টিউলিপ, যেখানে আগের কোনো চিঠির জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করে দুদক। কোনো কোনো মামলায় তাঁর ভাগনি টিউলিপের নামও রয়েছে। এসব মামলার বিষয়ে দুদক ও টিউলিপের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। তবে টিউলিপের অভিযোগ, ড. ইউনূস বা দুদক এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো চিঠির জবাব দেয়নি।
সবশেষ উকিল নোটিশে টিউলিপ বলেন, গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় ড. ইউনূসকে।
গত ৯ জুন চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যান প্রধান উপদেষ্টা। সেই সফরের আগে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি পাঠানোর কথা জানান টিউলিপ। চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলের চা পানের আমন্ত্রণ জানান। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সেই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও টিউলিপকে সাক্ষাৎ দেননি ড. ইউনূস। গতকালের উকিল নোটিশে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার যে কারণ ড. ইউনূস তুলে ধরেন, তার সমালোচনাও করা হয়েছে নোটিশে।
বলা হয়, বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে দুটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। প্রথমত, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে তিনি হতাশ কিনা। দ্বিতীয়ত, টিউলিপের সঙ্গে তিনি কেন সাক্ষাৎ করেননি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অবাক করার মতো অবস্থান নিয়েছিলেন। তিন সেদিন বলেছিলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া এবং তিনি তাতে হস্তক্ষেপ করতে চান না।
টিউলিপ মনে করেন, তাঁর সঙ্গে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা। দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরতে গিয়ে ড. ইউনূসের একাধিক সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যেগুলোতে তিনি টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলেছিলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ নোটিশের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকেও পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। নোটিশে টিউলিপ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। দয়া করে এখন এটি নিশ্চিত করুন, দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসংগতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।