ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বামুনকান্দা জংশন এলাকায় পয়েন্টম্যানের ভুল সিগন্যালের কারণে ঢাকা থেকে খুলনাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও একটি লাগেজ বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। 

এ ঘটনায় ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বেনাপোল এবং ঢাকা-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চলাচল গত শুক্রবার (৯ মে) রাত ৯টা ১০ মিনিট থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে এ দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ভাঙ্গা জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সুমন বাড়ৈ জানান, জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা রেল জংশন থেকে বের হওয়ার কিছু দূর গিয়ে ইঞ্জিন ও লাগেজ ভ্যান লাইনচ্যুত হয়। ইঞ্জিন ও বগি এক লাইন থেকে অন্য লাইনের ওপর চলে যাওয়ায় পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনে ৬০০-৭০০ যাত্রী ছিলেন, যারা দুর্ভোগে পড়েন।

এদিকে, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী পয়েন্টম্যান নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাচিনা খাতুন বলেন, “নজরুল ইসলাম কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সিগন্যাল পরিবর্তন করেছেন, যা এ দুর্ঘটনার মূল কারণ। তার ভুলের সত্যতা পাওয়া গেছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।” 

তিনি আরও বলেন, “ঈশ্বরদী ও খুলনা থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন এবং শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। আশা করছি, আজ শনিবার দুপুরের মধ্যে লাইন সচল করা সম্ভব হবে।”

ভাঙ্গা বামুনকান্দা রেল জংশনের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খায়রুজ্জামান সিকদার জানান, দুর্ঘটনার পর রাতেই যাত্রীরা বিভিন্ন বিকল্প পরিবহনে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, “ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নতি ও কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঢাকা/তামিম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই অঙ্গীকার করেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতারা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা এবং আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল

তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদির ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বড় শক্তি কাজ করছে, যাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা। তিনি বলেন, হামলাটি ছিল প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন এবং প্রাপ্ত তথ্যে প্রশিক্ষিত শুটার ব্যবহারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পরস্পরের দোষারোপ বন্ধ করে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একযোগে আওয়াজ তুলতে হবে।”

তিনি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন।

জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নিজেদের মধ্যে দোষারোপের প্রবণতায় বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।”

ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জাতিকে বিভক্ত করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানকে খাটো করতে সুসংগঠিত অপতৎপরতা চলছে। মিডিয়া, প্রশাসন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “অনৈক্যই ষড়যন্ত্রকারীদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

তিন দলের নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ