আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে অবরোধ
Published: 10th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সব সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দলগত বিচার এবং জুলাই ঘোষণাপত্র জারির তিন দফা দাবিতে ৩৭ ঘণ্টা ধরে চলছে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টার দিকে শুরু হওয়া কর্মসূচি এখনো চলছে। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ জুলাই অভ্যুত্থানে যুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নিয়েছেন।
এছাড়া, শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩টায় শাহবাগসহ সারা দেশে জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন পয়েন্টে সমাবেশ করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
আজ বেলা ১১টায় দেখা যায়, ছাত্র-জনতা শাহবাগ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এসময় আন্দোলনকারীদের ‘ব্যান করো, ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘একটা একটা লীগ লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর’, ‘ ‘লীগ ধর, জেলে ভর’ ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘খুনি লীগের ঠিকানা এ বাংলায় হবে না’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এদিকে, ছাত্র জনতার অবস্থানের কারণে গতকালের মতো আজও বন্ধ রয়েছে শাহবাগে যান চলাচল।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা জানান, যতক্ষণ না ঘোষণা আসবে ততক্ষণ শাহবাগ ছেড়ে কেউ যাবে না।
এর আগে গতকাল বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার কাছে মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন।
সমাবেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হাসনাত নিজের ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেওয়ার পর সেখানে বিক্ষোভ করা হয়।
শুক্রবার জুমার পর তারা মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে তাতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এরইমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
সকলকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সে পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ষ দ ধ কর অবস থ ন শ হব গ সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।