বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৯তম ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪’। আগামী ১৯ মে হোটেল সোনারগাঁওয়ে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংগীতের বিভিন্ন শাখায় এ সম্মাননা প্রদান করা হবে। এবার আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন প্রখ্যাত নজরুলসংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা।
এ উপলক্ষে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চ্যানেল আই। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, ইমপ্রেস চ্যানেল আই-এর পরিচালক জহিরউদ্দিন মাহমুদ মামুন, সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা। মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ব্যাংক পিএলসির পক্ষে রায়হান কাওসার, দেশবন্ধু বেভারেজের সিইও মো.
সংবাদ সন্মেলনে শাইখ সিরাজ বলেন, ‘দেশের সুস্থধারার সংগীত এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ২০০৪ সালে শুরু হয়েছিল চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস। প্রতি বছরই সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যদিও বর্তমানে আমরা কঠিন সময় পার করছি, এর পরেও এ আয়োজনটি সুন্দরভাবে পালনে ব্যতিক্রম হচ্ছে না।’ জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুনের কথায়, সংগীত সবার মনের কথা প্রকাশ করে। সংগীত সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায়। চ্যানেল আই সব ক্ষেত্রে সংগীত, সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্যকে সবার কাছে তুলে ধরতে নিয়োজিত থাকে। চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস তেমনই একটি বিশেষ আয়োজন।
অনুষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালক রাজু আলীম জানান, চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসের প্রতিটি আয়োজনে নতুন কিছু সংযোজনের চেষ্টা থাকে। সেই কারণে এবার এই সংগীত মহা-উৎসবে যুক্ত হচ্ছে ফ্যাশন শো।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত