চেয়ারম্যান-প্যানেল চেয়ারম্যান নেই, সেবা কার্যক্রম বন্ধ ৬ মাস
Published: 10th, May 2025 GMT
মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন জারু মিয়া অফিসে আসেন না প্রায় ৬ মাস ধরে। নেই প্যানেল চেয়ারম্যানও। তাদের অনুপস্থিতির কারণে ভুগতে হচ্ছে বাঘাসুরা ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে।
ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদ পাচ্ছেন না তারা। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজ থমকে আছে। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষকে মাশুল দিতে হচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলে তা অবগত করতে হয়। সেটুকুও করেননি তিনি। এছাড়া এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব থেকে নির্ধারিত প্যানেল চেয়ারম্যান চলতি দায়িত্ব পালন করার কথা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্যানেল চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মহালদার ও শামসুল ইসলামের কেউই এলাকায় নেই। এই তিনজনের অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। এলাকাবাসী জানান, চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে কম আসেন। নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে তিনি বেশি ব্যস্ত। মাঝে মধ্যে অফিসে ও বাড়িতে বসে সই-স্বাক্ষর করেন।
বাঘাসুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আক্তার হোসেন জানান, জনসেবা করার জন্য জনগণ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। বাঘাসুরা ইউপি চেয়ারম্যান এবং তাঁর অনুগত মেম্বাররাও অনুপস্থিত।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেন, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন ও মেম্বার তাজুল ইসলাম মহালদার ও শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তারা এলাকায় নিয়মিত আসতে পারেন না। এখন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে সরকারের উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বলেন, জনগণের দেওয়া দায়িত্ব তিনি পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। চলমান পরিস্থিতিতে মানুষের সেবা করতে চেষ্টা করছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কাজে অবহেলা করছেন না।
ইউএনও জাহিদ বিন কাশেম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন ম্যানুয়ালের বাইরে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।