মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন জারু মিয়া অফিসে আসেন না প্রায় ৬ মাস ধরে। নেই প্যানেল চেয়ারম্যানও। তাদের অনুপস্থিতির কারণে ভুগতে হচ্ছে বাঘাসুরা ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে।
ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান না থাকায় জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। জন্ম-মৃত্যু, নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদ পাচ্ছেন না তারা। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজ থমকে আছে। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষকে মাশুল দিতে হচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলে তা অবগত করতে হয়। সেটুকুও করেননি তিনি। এছাড়া এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব থেকে নির্ধারিত প্যানেল চেয়ারম্যান চলতি দায়িত্ব পালন করার কথা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্যানেল চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মহালদার ও শামসুল ইসলামের কেউই এলাকায় নেই। এই তিনজনের অনুপস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। এলাকাবাসী জানান, চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদে কম আসেন। নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে তিনি বেশি ব্যস্ত। মাঝে মধ্যে অফিসে ও বাড়িতে বসে সই-স্বাক্ষর করেন।
বাঘাসুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আক্তার হোসেন জানান, জনসেবা করার জন্য জনগণ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। বাঘাসুরা ইউপি চেয়ারম্যান এবং তাঁর অনুগত মেম্বাররাও অনুপস্থিত।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেন, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন ও মেম্বার তাজুল ইসলাম মহালদার ও শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তারা এলাকায় নিয়মিত আসতে পারেন না। এখন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে সরকারের উন্নয়নকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বলেন, জনগণের দেওয়া দায়িত্ব তিনি পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। চলমান পরিস্থিতিতে মানুষের সেবা করতে চেষ্টা করছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কাজে অবহেলা করছেন না।
ইউএনও জাহিদ বিন কাশেম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন ম্যানুয়ালের বাইরে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই: বাম গণতান্ত্রিক জোট

চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা বলেছে, জনগণের মতামত ছাড়া বন্দর পরিচালনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নির্বাচিত বা অনির্বাচিত কোনো সরকারই নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। সরকার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে দেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সারা দেশে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে।

আজ সোমবার বিকেলে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোটের অস্থায়ী কার্যালয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ২৭ ও ২৮ জুন দেশপ্রেমিক জনগণের ব্যানারে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চে চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশবাসী অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছে। দেশের সচেতন মানুষ সরকারের যেকোনো গণবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এখনো পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। আমরা আশা করেছিলাম, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সরকার বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার বন্দর ইজারা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা থেকে সরে আসবে। কিন্তু সরকার জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বন্দর বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। যা নৌপরিবহন উপদেষ্টার বক্তব্যে ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।’

দেশের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। দেশের স্বার্থবিরোধী এ ধরনের সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। ইতিমধ্যে নির্বাচনের সময় ঘোষিত হয়েছে। জনগণের মতামত ছাড়া বন্দর পরিচালনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নির্বাচিত বা অনির্বাচিত কোনো সরকারই নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না।’

জাতীয় স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিল করার দাবি জানানো যাচ্ছে। একই সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু সরকার ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণ–আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সব বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো যাচ্ছে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শামীম ইমাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণ প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তন চাইছে: তারেক রহমান
  • সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে: ফরহাদ মজহার
  • স্লোগাননির্ভর রাজনীতির যুগ শেষ: তারেক রহমান
  • ‘আমাদের অনুমতি ছাড়া ওই এলাকায় কেউ এমপি হতে পারেন না’
  • ১৬ বছরে যারা মজলুম ছিল, আজকে অনেকেই জালেম হয়ে উঠছে: নুরুল হক নুর
  • অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই: বাম গণতান্ত্রিক জোট
  • নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হবে: তারেক রহমান
  • ‘অধিকাংশ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে’
  • ‘কৃত্রিম’ বন্যা রোধ: বক্তব্যের ফাঁপা প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতার নির্মম চিত্র
  • ‘১৪ সালে বিএনপির কারণে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জোট হয়নি’