আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে কোন রাজনৈতিক দলের কী অবস্থান
Published: 11th, May 2025 GMT
জুলাই গণহত্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।
এর পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর গত রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই অভ্যুত্থানের নেতাকর্মীর নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনে বিএনপি দূরত্ব বজায় রাখলেও, চরমোনাইর পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল, এবি পার্টি, লেবার পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ জুলাই অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠন খোলাখুলি সমর্থন দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়। এনসিপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা গণঅধিকার পরিষদ পল্টন মোড়ে গতকালও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
জামায়াতে ইসলামীর মধ্যম সারির নেতা এবং কর্মী-সমর্থক ব্যাপক সংখ্যায় অংশ নিলেও, দলটি আগের দু’দিন আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানায়নি। গতকাল রাত ১০টার দিকে দলটির আমির ডা.
আগের রাতে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল বিকেলে শাহবাগে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে হয় গণজমায়েত। একই দাবিতে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় একই কর্মসূচি পালন করা হয়। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি আদায়ে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করতে এলাকায় আগের রাতে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করা হলেও, এনসিপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের আহ্বানে তা তুলে নেওয়া হয়।
নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধের বিরোধী বিএনপির সমমনা দলগুলোও সরাসরি শাহবাগে যোগ দেয়নি। গত আগস্ট থেকেই বিএনপি আইন সংশোধনের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেন, এখন যারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলছে, কয়েক দিন পর তারাই যে বিএনপিকে নিষিদ্ধের দাবি করবে না, নিশ্চয়তা কী! তবে চট্টগ্রামে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৮ কোটি মানুষের কেউ আওয়ামী লীগকে চায় না।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি যতটা না আইনগত, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক বিষয়। তাই রাজনৈতিক দল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের মতৈক্য প্রয়োজন। নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সংকটের সমাধান করবে না।
জানা যায়, এর আগে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণা এসেছিল। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার পর দলটিকে নিষিদ্ধ করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এবারই প্রথম আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এলো।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ জ ম য় ত ইসল ম এনস প র জন ত ন ষ দ ধ কর উপদ ষ ট গতক ল আওয় ম ব এনপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
রাস্তার গর্ত ভরাটের নাম করে অবৈধ বালু ব্যবসা
কলমাকান্দা উপজেলার পাহাড়ি নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু রাস্তার পাশে ফেলে গর্ত ভরাটের নাম করে এখন তা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে একটি চক্র। খারনৈ ইউনিয়নের গজারমারি এলাকার ভেলুয়াতলিতে এই ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, কিছু দিন আগে এলাকাবাসীর সামনে রাস্তার গর্ত ভরাটের অজুহাতে পাহাড়ি নদী ডেনকি থেকে উত্তোলিত বালু ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল সেই বালু লুকিয়ে রাখা এবং পরে তা বিক্রি করা। অভিযোগ রয়েছে, এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাদেক মিয়া নামে এক ব্যক্তি, যার সঙ্গে আরও অন্তত চারজন জড়িত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরাসরি ভেকু দিয়ে বালু তুলে ট্রলিতে করে বিক্রি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দিও হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ডে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় একজন বলেন, প্রথমে বলেছিল রাস্তার গর্ত ভরাট করবে। এখন দেখা যাচ্ছে সেই বালুই বিক্রি করছে ট্রলিতে করে। প্রশাসন যেন দেখেও না দেখার ভান করছে।
বালু বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাদেক মিয়া। তিনি বলেন, ‘রাস্তার পাশে আমাদের নিজ নামে জমি রয়েছে। অনেক আগেই আমরা সেই গর্তে ডেনকি নদীর বালু ফেলেছিলাম। এখন এলাকার উন্নয়নের কাজে সেই বালু নেওয়া হচ্ছে।’
তবে সাদেক মিয়ার দাবি মানতে নারাজ স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্য, এটি অবৈধ বালু ব্যবসার একটি কৌশল। তারা দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, ‘খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’