বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, “স্বাধীনতার পর থেকে যারা এ দেশে দুঃশাসন, দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদ তৈরি করেছিল, গুম-খুন ও গণহত্যা করেছে অবশ্যই তাদের বিচার করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে ৯৬ ও বিগত ১৬-১৭ বছর হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ যেসব অপকর্ম করেছে তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে আইন ও বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়া উচিত।”

রবিবার (১১ মে) সকালে লক্ষ্মীপুর সদরের হাজির পাড়ায় দলীয় ওয়ার্ড প্রতিনিধি নির্বাচন পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এ্যানি বলেন, “এ সরকার আন্দোলনের ফসল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের উদ্যোগটি আরো আগেই নেওয়া উচিৎ ছিল। সেটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে টেবিল বৈঠকের মাধ্যমে মতামতের ভিত্তিতে হতে পারতো।” 

আরো পড়ুন:

রাজশাহী নগর বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে আ.

লীগ নেতাদের প্রশ্রয়ের অভিযোগ

জরুরি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটি

বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচনমুখী হওয়ার দাবি জানিয়ে এ্যানি বলেন, “বিএনপি গণমানুষের দল। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি। খালেদা জিয়ার আপোসহীন সংসদীয় গণতান্ত্রিক দল হিসেবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ৩১ দফা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে নেতা নির্বাচন হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে। দলকে সুসংগঠিত করা আর গণতান্ত্রিক চর্চায় হাটছে বিএনপি।”

এসময় অন্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর আহমেদ ফেরদৌস মানিক, জেলা কৃষক দলের সহসভাপতি বদরুল আলম শ্যামল।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ