শেষ হলো ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ দফার পারমাণবিক আলোচনা
Published: 11th, May 2025 GMT
ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চতুর্থ দফার পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনা রবিবার শেষ হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আলোচনাকে ‘কঠিন কিন্তু কার্যকর’ বলে বর্ণনা করেছে।
রবিবার প্রায় তিন ঘন্টা আলোচনার পর মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেছেন, এটি “একে অপরের অবস্থান আরো ভালভাবে বুঝতে এবং পার্থক্যগুলো সমাধানের জন্য যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবসম্মত উপায় খুঁজে বের করার জন্য কঠিন কিন্তু কার্যকর আলোচনা” ছিল।
এক্স- এ এক পোস্টে তিনি বলেছেন, “পরবর্তী দফার সমন্বয় এবং ঘোষণা দেবে ওমান।”
আলোচনা শুরু হওয়ার আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ইরানের বেসামরিক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের আইনি অধিকার রয়েছে যা কোনো চুক্তির আওতাভুক্ত হতে পারে না।
২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে তেহরানের সঙ্গে ছয় জাতির চুক্তি হয়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ওই চুক্তিতে ইরানকে তার বেসামরিক পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে তেহরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে বিরত রাখতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।
আরাঘচি বলেছেন, “ইরানি জাতির অর্জন এবং সম্মানের মধ্যে একটি হলো সমৃদ্ধকরণ। সমৃদ্ধকরণের জন্য আমরা অনেক মূল্য দিয়েছি। এই অর্জনের জন্য আমাদের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের রক্ত ঝরানো হয়েছে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ হলো এক ছাদের নিচে ৩ খাতের প্রদর্শনী
দেশের আবাসন, নির্মাণ, পানি ও বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আজ শনিবার শেষ হয়েছে। এতে ২০ দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান এক ছাদের নিচে তিন খাতের প্রায় সব ধরনের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করেছে।
প্রদর্শনীটির আয়োজন করে সেমস গ্লোবাল। এতে ওয়ালটন, এসিআই, রহিমআফরোজ, ওমেরা, এসএসজিসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো তাদের সর্বশেষ পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করেছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ প্রদর্শনী প্রতিদিনই ব্যবসায়ী, গ্রাহক ও দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় বলে জানান আয়োজকেরা।
আজ প্রদর্শনীতে গিয়ে স্টলগুলোতে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা দেখা যায়। সবাই ক্রেতা–দর্শনার্থীকে নিজেদের পণ্যসেবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। একই সঙ্গে আগ্রহীদের নাম, মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখছিলেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। আয়োজকেরা জানান, প্রদর্শনীতে সব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক বুথ ও আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়ন ছিল।
ওয়ালটনের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি তাদের নতুন কেব্ল পণ্য প্রদর্শন করছে। এ বছরের জানুয়ারিতে কেব্লের ব্যবসায়ে আসে দেশীয় টেক ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠানটি। এখন দেশের বাজারের পাশাপাশি ৭টি দেশে কেব্ল রপ্তানি করছে বলে জানান ওয়ালটনের বিপণন কর্মকর্তা ইদ্রিস মোল্লা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কাসহ সাত দেশে আমাদের পণ্য যাচ্ছে। আমাদের পণ্যের মধ্যে এলিভেটর এবং ক্রেনে ব্যবহার করার কেব্ল রয়েছে। তা ছাড়া ফায়ার অ্যালার্ম কেব্লও আছে আমাদের।’ প্রদর্শনীতে তাদের লিফটও দেখছেন ক্রেতারা।
এসিআইয়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের ভ্রমণপিপাসুদের কথা চিন্তা করে পোর্টেবল এসির প্রদর্শনী করছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে যাঁরা তাঁবু টাঙিয়ে ক্যাম্প করতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য ৫ থেকে ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় তাঁবুর পরিবেশ ঠান্ডা এ গরম করার ব্যবস্থা থাকবে। দেড় ঘণ্টার চার্জে এটি টানা ৮ ঘণ্টা ব্যবহার করা যাবে। তবে পণ্যটি এখনো বাজারে আসেনি। তাই এর দাম সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী নাবিল মোর্শেদ। প্রথম আলোকে তিনি জানান, পণ্যটি চীনে ব্যাপক চলছে। চায়না ইকো ফ্লো কোম্পানির একক পরিবেশক হিসেবে দেশের বাজার যাচাই করার জন্য প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে ১৫ কেজি ওজনের যন্ত্রটি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি চীনের তৈরি ৫০০ ওয়াটের ১ ঘণ্টা ব্যাকআপের আইপিএস প্রদর্শনীতে নিয়ে আসে। এটির দাম ৭৭ হাজার ৯০০ টাকা।
সুপার স্টার কোম্পানি সৌরচালিত সেচপাম্প প্রদর্শনীতে নিয়ে আসে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিরা জানান, খরচ কমে আসায় এখন কৃষিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই সোলার পাম্প।
ওমেরা সোলার তাদের তৈরি সোলার প্যানেল নিয়ে আসে। ওমরা সেলারের প্রধান ডিজাইনার আমির হামজা প্রথম আলোকে জানান, এখন দেশের বাজারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় তাদের সোলার প্যানেল রপ্তানি হচ্ছে। দেশের মধ্যে পাহাড়ি এলাকায় ছোট আকারের সোলার প্যানেল বেশি বিক্রি হচ্ছে।
প্রদর্শনীর আবাসন অংশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রকল্পগুলো নিয়ে আসে। তাদের আবাসিক ভবন ছাড়াও বিভিন্ন হোটেল এবং রিসোর্টে বিনিয়োগের জন্য ক্রেতা–দর্শনার্থীদের নানা অফার দিতে দেখা যায়। কুয়াকাটায় পাঁচ তারকা মানের হোটেল তৈরি করছে ম্যানগ্রোভ ইকো রিসোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ৫০ শতাংশ শেয়ারের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার ইউনিটের মালিকানা বিক্রি করছে তারা। ৪ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকায় এই হোটেলের মালিকানা নেওয়ার অফার করা হয় প্রদর্শনীতে।
প্রদর্শনীর পানির অংশে বিভিন্ন পণ্যের সমাহার দেখা যায়। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে অফিস কিংবা কারখানার সুপেয় পানি বিশুদ্ধকরণের নানা প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছিল বিভিন্ন কোম্পানি। ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিভিন্ন মানের পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানগুলো।