আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ
Published: 11th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঢাকায় আয়োজিত কর্মসূচি শেষে ফেরার সময় কয়েকজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ রোববার ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। প্রতিবাদে রাত পৌনে আটটার দিকে দিনাজপুর স্টেশনে ট্রেনটি অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে নির্ধারিত গন্তব্য পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দিনাজপুরে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ১৭ জন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত শনিবার আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। কর্মসূচি শেষে রোববার সকাল সোয়া ১০টায় কমলাপুর স্টেশনে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন তাঁরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর টিটিই (ট্রাভেল টিকিট এক্সামিনার) তাঁদের কাছে টিকিট দেখতে চান। এ সময় টিটিইকে তাঁরা জানান যে তাড়াহুড়ো করে তাঁরা ট্রেনে উঠে পড়েছেন। এই মুহূর্তে তাঁদের কাছে টাকা নেই। সময় দিলে তাঁরা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু টিটিই তাঁদের সামনের স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাসে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সিরাজগঞ্জ স্টেশনে এসে আবার তাঁদের কাছে টিকিট দেখতে চান। এ সময় পুলিশের এক সদস্য ও টিটিই ওয়াসিবুর রহমান (শুভ) তাঁদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেন। এ সময় রাসেল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী পড়ে গিয়ে বাঁ হাতের কনুইয়ে আঘাত পান। পরে তাঁরা আবার ট্রেনে ওঠেন।
অভিযোগকারী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা কেন গেছি ঢাকায়? এ ধরনের প্রশ্ন করে আমাদের চার্জ করেছেন ওই পুলিশ ও টিটিই। তাঁরা আওয়ামী লীগের দোসর। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করেছেন। আমরা ওই পুলিশ ও টিটিইর বিচার দাবি করি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে টিটিই ওয়ারসিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেন থেকে কাউকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে দিনাজপুর রেলস্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেন, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে দায়িত্ব পালনকারী দুজনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে সন্ধ্যায় দিনাজপুর রেলস্টেশনে তাঁরা ট্রেনটি আটকে দেন। শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”
সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”
তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী