মহাসড়ক ও আশপাশে ২১৭ পশুহাট, আশঙ্কা যানজটের
Published: 13th, May 2025 GMT
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কের ওপর ও আশপাশে প্রতি বছর কোরবানির পশুর হাট বসে ২১৭টির মতো। এ কারণে ঈদযাত্রায় যানজটের ভোগান্তি থাকে। এই ভোগান্তি ঠেকাতে এবারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সড়কের ওপর বসানো যাবে না হাট। হাটের প্রবেশপথ মহাসড়কের বিপরীত দিকে নির্মাণ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কোথায় কতটুকু জায়গায় হাট বসানো হবে, তার যথাযথ ম্যাপ ও স্কেচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। ঈদে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে গতকাল দুপুরে বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত সভা শেষে এসব নির্দেশনা দেন সড়ক ও রেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সভায় জানানো হয়, আগামী ২১ মে ঈদযাত্রার ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। এ বছর ঈদে ১০ দিনের সরকারি ছুটি শুরু হবে ৪ জুন থেকে। ঈদের অন্তত তিন দিন আগেই বন্ধ হবে সরকারি অফিস-আদালত। দীর্ঘ ছুটির কারণে গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রা ছিল স্বস্তির। এবার কোরবানির ঈদ হবে বর্ষার শুরুতে। টানা বৃষ্টি হলে ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।
সড়ক-মহাসড়কে যানজটপ্রবণ স্পটের সংখ্যা ১৪৯টি। ঈদুল ফিতরে যা ছিল ১৫৫। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪৯, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে ৫৪, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছয়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৪২ এবং ঢাকা-পাটুয়ারিয়া-আরিচা মহাসড়কে আটটি স্থানে যানজটের শঙ্কা রয়েছে।
অতিরিক্ত ভাড়া, পশু পরিবহনকারী গাড়িতে চাঁদাবাজি বন্ধে নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির।
ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখে যানজটে পড়তে হয়। এ বিষয়ে কী করা হবে– এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, হানিফ ফ্লাইওভারে যানজট হয়। টোল কীভাবে দ্রুত আদায় করা যাবে, সে উপায় বের করতে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আগের সরকারের সময় ঈদযাত্রায় যেসব অনিয়ম চলত, তা অনেক কমিয়ে আনতে পেরেছি।
জানা যায়, গত বছর ঈদের আগে-পরে তিন দিন করে মহাসড়কে পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রাখা, কারখানায় ধাপে ধাপে ছুটিসহ ২৭ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোরবানির হাটে পশু নামানো ও বিক্রয় করা পশু গাড়িতে ওঠাতে হাটের মধ্যেই আলাদা জায়গা রাখতে হবে। জায়গা না থাকলে কাজগুলো হাট থেকে দূরে নিয়ে করতে হবে।
এবার ট্রেনে আসন ৩৩ হাজার
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২১ মে ঈদযাত্রার আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে ৩১ মে তারিখের টিকিট। এভাবে পর্যায়ক্রমে ২৭ জুন পর্যন্ত বিক্রি হবে। ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৩০ জুন। এদিন বিক্রি হবে ৯ জুনের টিকিট। এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হবে। পশ্চিমাঞ্চলের সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টায় ও পূর্বাঞ্চলের টিকিট দুপুর ২টা থেকে বিক্রি করা হবে।
রেল উপদেষ্টা জানান, ঢাকা থেকে বহির্গামী ৪৩টি আন্তঃনগর ট্রেনের মোট আসন ৩৩ হাজার ৩১৫টি। ঈদের আগে-পরে ৯ দিন পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র ক রব ন র উপদ ষ ট ঈদয ত র সরক র য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
শুক্রবার রথযাত্রা উৎসব, লক্ষাধিক ভক্ত সমাগমের আশা ইসকনের
চলতি বছরের রথযাত্রা উৎসব ঢাকাসহ সারাদেশে অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার। এ উপলক্ষে পর্যটক ও ভক্তদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে প্রশাসন। এরইমধ্যে প্রশাসন থেকে রথযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুধবার ঢাকার স্বামীবাগ আশ্রমে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব উপলক্ষে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরে ঢাকার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, কোষাধ্যক্ষ শ্রী জ্যোতিশ্বর গৌর দাস ব্রহ্মচারী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শ্রী বিমলা প্রসাদ দাস, শ্রী হৃষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস, শ্রী নন্দন আচার্য্য দাস ও ইসকনের উত্তরা আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রী শুভ নিতাই দাস।
চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, এবারও সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা হবে। এরইমধ্যে ইসকনের অধীনে ১২৮টি রথযাত্রা উৎসব হবে। এবার রথযাত্রা উৎসবে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম আশা করা হচ্ছে। মহোৎসব সফল করতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শোভাযাত্রায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। এ ছাড়া শোভাযাত্রাসহ উৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তায় নিজস্ব পাঁচ শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবেন।
উৎসব ও শোভাযাত্রায় সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য সনাতন সম্প্রদায়সহ ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুর ৩টায় রথযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। স্বামীবাগ থেকে রথের শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ইত্তেফাক মোড়, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা হয়ে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট পার হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে হাইকোর্টের মোড় হয়ে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। ৯ দিন পর ৫ জুলাই একই রাস্তা দিয়ে রথ ফিরে আসবে স্বামীবাগ মন্দিরে। একে উল্টো রথযাত্রা বলা হয়।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, ঢাকার রথযাত্রা পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রথযাত্রা উৎসব। শুক্রবার স্বামীবাগ আশ্রমে সকাল ৮টায় বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুরু হবে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন হবে। এবার উৎসবের উদ্বোধনের প্রধান অতিথি এখনও নির্ধারণ হয়নি।
প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। এর ৯ দিনের মাথায় হয় উল্টো রথযাত্রা। রথযাত্রা বিভিন্ন নামে পরিচিত। পুরী জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার প্রচলন হয়। বাংলাদেশেও রথযাত্রা হিন্দুদের একটি পবিত্র উৎসব। শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা। এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদাবলি কীর্তন, ধর্মীয় নাটকসহ আট দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবের মূল আকর্ষণ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।