দাকোপ উপজেলা ও চালনা পৌর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার
Published: 13th, May 2025 GMT
খুলনার দাকোপ উপজেলা ও চালনা পৌর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে চালনা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেন এবং পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আইয়ুব আলী কাজীকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে খুলনা নগরের কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে ডাকা এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টুর সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনখুলনায় খাল ইজারা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৯৫ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কোনো ব্যক্তিবিশেষের অপকর্মের দায়ভার দল নেবে না। দলের জন্য ত্যাগী, পরীক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের জনসম্পৃক্ত নেতা-কর্মীদের নিয়ে খুলনা জেলা বিএনপির তৃণমূল পর্যায় থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম নূর প্রথম আলোকে বলেন, দাকোপ উপজেলা ও চালনা পৌর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। চালনা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হয়েছে। চালনা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আইয়ুব আলীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাঁকে কেন চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হবে না, তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত কুমার সাহাকে রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া উপজেলার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দাকোপ-বটিয়াঘাটার সাংগঠনিক দলে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল সোমবার দাকোপে খালের ইজারাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে সঙ্গে জড়িত ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে গতকালের ঘটনায় চালনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব ইফতেখারুল কবির (বাপ্পি) এবং দাকোপ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানকে আজ কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। তাঁদের দুই দিনের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গতকালের ওই সংঘর্ষে দাকোপ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আজাহার উদ্দিনসহ অন্তত ৯ জন আহত হন। এ ঘটনায় আজ দাকোপ থানার এসআই নূর মোহাম্মদ শাহিদ বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশের কাজে বাধা, হত্যাচেষ্টার অভিযোগসহ ছয়টি ধারায় ওই মামলা করা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন চালনা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাকিল আহমেদ, দাকোপ উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবদুল মান্নান খান, চালনা পৌর বিএনপির সদস্যসচিব আল-আমিন সানা, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আইয়ুব আলী কাজী। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ক প উপজ ল প র ব এনপ র র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান।
তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত
ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।
তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।
দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।
অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।
ঢাকা/রাসেল