আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 14th, May 2025 GMT
বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র অবগত আছে জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (১৩ মে) প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র টমি পিগট।
তিনি বলেন, “আমরা জানি যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছে, যতক্ষণ না দল এবং এর নেতাদের বিচার কার্যক্রম শেষ না হয়। আমরা বাংলাদেশের কোনো একক রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। আমরা একটি মুক্ত, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ন্যায়সংগত এবং আইনি আচরণে বিশ্বাস করি।”
আরো পড়ুন:
সৌদি আরব পৌঁছেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
৯০ দিনের জন্য পারস্পরিক শুল্ক প্রত্যাহারে সম্মত যুক্তরাষ্ট্র-চীন
টমি পিগট আরো বলেন, “আমরা বাংলাদেশসহ সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং সব সংগঠনের স্বাধীনতাকে সম্মান করে।”
তিনি বলেন, “আমরা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বকে মূল্যবান বলে মনে করি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করে আমাদের অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এদিকে, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংবাদিক সম্মেলনে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “কোনো উপযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ না করেই আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি উদ্বেগজনক ঘটনা।”
তিনি আরো জানান, (বাংলাদেশে) গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা যেভাবে খর্ব করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক পরিসর (পলিটিক্যাল স্পেস) সংকুচিত হয়ে আসছে তাতে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত স্বভাবতই উদ্বিগ্ন বোধ করছে।
একই সঙ্গে বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করার দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র আওয় ম ল গ গণত ন ত র ক স ব ধ নত র জন ত ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ নৃত্যের অপেক্ষায় থাকা নেইমার ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে যা জানালেন
ইনজুরি যেন ছায়ার মতো পেছন ছাড়ছে না ব্রাজিলিয়ান ফুটবল জাদুকর নেইমারের। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যতবারই মাঠে ফিরেছেন, ততবারই ছন্দপতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চোট। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে মাঠে তার উপস্থিতি গোনা যেন কঠিন হয়ে পড়েছে ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য। তাই প্রশ্ন উঠছে এই ছন্দভাঙা পথ পেরিয়ে তিনি কি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন?
এই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি এক ঘরোয়া সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেন নেইমার। জানান, যতদিন নিজের পারফরম্যান্সে নিজে সন্তুষ্ট থাকবেন, ততদিন খেলবেন। নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই তার বিদায়ের। শৈশবের ক্লাব সান্তোসের সঙ্গে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নতুন চুক্তি করেছেন নেইমার, যেখানে ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার সুযোগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সাক্ষাৎকারে স্ত্রী ব্রুনা বিয়ানকার্ডির প্রশ্নের উত্তরে নেইমার বলেন, “ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাই আমাকে প্রতিদিন নতুন করে অনুপ্রাণিত করে। আমি যতদিন নিজের খেলায় আত্মবিশ্বাস পাই, ততদিন খেলে যাব। এই ভালোবাসা কোনোদিন ফুরাবে না। তবে যেদিন মনে হবে নিজের সেরা ফর্মে নেই, সেদিনই থেমে যাব।”
আরো পড়ুন:
রূপান্তরের আভাস দিয়ে আনচেলোত্তির ব্রাজিল দল ঘোষণা
চিকিৎসক প্রেসিডেন্ট ও কোচিং কিংবদন্তিতে নতুন অধ্যায় ব্রাজিলে
কেবল ফুটবলে নয়, নেইমার প্রায়ই আলোচনায় থাকেন তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও। জীবনযাপন নিয়ে নানা সমালোচনার মুখে পড়লেও নিজের অবস্থানে অনড় তিনি, “যারা আমাদের চেনে না, তারা যা খুশি তাই বলে। এসবের প্রভাব ফেলার সুযোগ আমি দিই না। অনলাইনে কী লেখা হলো তাতে আমি নাড়া খাই না।’’
নিজের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কিছুটা আক্ষেপের সুরও শোনা যায় তার কণ্ঠে, “আমি চাই মানুষ মাঠে আমার খেলা দেখে বিচার করুক। সোশ্যাল মিডিয়া এখন খেলোয়াড়দের মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে। আমাকে এমনভাবে মূল্যায়ন করা হয়, যেন আমি শুধুই ক্যামেরার জন্য বেঁচে থাকি। অথচ, পরিবার আর নিজের ভবিষ্যতের জন্য আমি কতটা নিবেদিত, তা কজনই বা জানে?”
নেইমার জানিয়ে দেন, ফুটবল থেকে একদিন বিদায় নেবেন ঠিকই, কিন্তু তার চিহ্ন থেকে যাবে ইতিহাসের পাতায়, “আমার ক্যারিয়ার শেষ হবে একদিন। নতুন প্রজন্ম আসবে, কেউ হয়তো আমাকেও ছাপিয়ে যাবে। কিন্তু যাদের ভালোবাসা আমি পেয়েছি, যারা আমাকে সত্যিকারে চেনেন, তাদের হৃদয়ে আমার নাম থাকবে।”
বার্সেলোনা, পিএসজি ও আল-হিলালের মতো জায়ান্ট ক্লাবে খেলা এই ফরোয়ার্ড দেশের জার্সিতে ১২৮ ম্যাচে করেছেন ৭৯ গোল। যা ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে বারবার ইনজুরিই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার সম্ভাবনার পথে। ২০২৩ সালের বড় ইনজুরি এসিএল ও মেনিসকাস ছিঁড়ে যাওয়া তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ছিটকে দেয়।
তবে সবকিছুর পরও নেইমার ফিরেছেন নিজের শিকড়ে, সান্তোস ক্লাবে। এখানেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন নতুন করে বাঁচার আশ্রয়, “সান্তোস আমার ঘর, আমার শিকড়। এখানেই আমি স্বপ্ন দেখা শিখেছি। এবার সেই সব অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ করতে চাই এখানেই।’’
আর ২০২৬ বিশ্বকাপ? নেইমারের চোখে সেটিই হতে যাচ্ছে তার ‘শেষ নৃত্য’, “আমি নিজেকে পুরোপুরি উজাড় করে দেব। যদি এটিই হয় আমার শেষ বিশ্বকাপ, তাহলে আমি চাই বিদায়টা হোক গর্বের, ভালোবাসার এবং ফুটবলের প্রতি আমার দায়বদ্ধতার প্রতিচ্ছবি।”
ঢাকা/আমিনুল