গরমেও খুশকির সমস্যা বাড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। অতিরিক্ত ঘাম, ধুলা, তাপ এবং মাথার ত্বকে তৈলাক্ত ভাব থেকে খুশকি সৃষ্টি হয়। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি এবং নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
কী করবেন-

চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন : গরমে ঘাম ও ধুলা জমে মাথার ত্বকে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয় বলে খুশকি সৃষ্টি হয়। এ কারণে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার মাইল্ড অ্যান্টিড্যানড্রাফ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। স্যালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করলে মাথার ত্বক শুষ্ক হয় না এবং চুলও রুক্ষ হয় না।

নিয়মিত নারকেল তেল বা চুলে তেল ম্যাসাজ করুন: নারকেল তেলে থাকা অ্যান্টিফাংগাল গুণ খুশকির জীবাণু দূর করে। হালকা গরম করে তেল মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। সেই সঙ্গে মাথার ত্বক হাইড্রেটেড থাকে।

টী ট্রি অয়েল ব্যবহার করুন : অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিফাংগালযুক্ত টি ট্রি অয়েল খুশকির জন্য খুবই কার্যকর। কয়েক ফোঁটা টী ট্রি অয়েল নারকেল বা জোজোবা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান এবং ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।

খুশকির জন্য টী ট্রি অয়েল ব্যবহার করুন : টী ট্রি অয়েল অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিফাংগাল হওয়ায় এটি খুশকির জন্য খুবই

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন : সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খুশকি রোধে সাহায্য করে। ভিটামিন বি, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার যেমন বাদাম, মাছ, ডিম ও দই খেলে মাথার ত্বক সুস্থ থাকে এবং খুশকি কমে।

ধুলো ও রোদ থেকে মাথা বাঁচান: বাইরে বের হলে স্কার্ফ বা হালকা ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। এতে ধুলোবালি ও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে মাতার ত্বক সুরক্ষিত থাকে। এর ফলে খুশকি হতে পারে না। 

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করুন: পানির সঙ্গে সামান্য অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে ব্যবহার করে মাথার ত্বকে লাগান। কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু করুন।

গরমে অতিরিক্ত হেয়ার ড্রায়ার বা স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে স্ক্যাল্প আরও শুষ্ক হয়ে খুশকি বাড়াতে পারে। তাই যতটা সম্ভব প্রাকৃতিকভাবে চুল শুকোন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: খ শক ব যবহ র কর ম থ র ত বক

এছাড়াও পড়ুন:

কারপাল টানেল সিনড্রোম

কারপাল টানেল সিনড্রোম একটি স্নায়বিক সমস্যা। আমাদের কবজির মধ্য দিয়ে যাওয়া ‘মিডিয়ান নার্ভ’-এর ওপর চাপ পড়লে এই সমস্যা দেখা দেয়। হাতের মিডিয়ান নার্ভ হাতের তালু, আঙুল ও আরও কিছু অংশের অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই নার্ভ যদি কবজির সরু ‘কারপাল টানেল’ নামক পথের মধ্যে কোনো কারণে চাপে পড়ে, তখন হাতে ব্যথা, অবশভাব বা ঝিঁঝি ধরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

কেন হয়

আগেই বলা হলো যে মিডিয়ান নার্ভে অতিরিক্ত চাপ পড়াই এ রোগের কারণ। এই চাপ নানাভাবে সৃষ্টি হতে পারে। যেমন বারবার একই ধরনের কাজ করা, যেমন দীর্ঘ সময় ধরে টাইপ করা, মাউস ব্যবহার করা বা হাতের কবজিকে একইভাবে বারবার নাড়ানো। কবজিতে কোনো আঘাত বা প্রদাহ।

গর্ভাবস্থায় হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে নার্ভের চারপাশে পানি জমে এই রোগ হতে পারে। ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। তবে কিছু মানুষ স্বাভাবিকভাবেই সরু কারপাল টানেল নিয়ে জন্মায়।

কীভাবে বুঝবেন

হাত ও আঙুলে অবশভাব বা ঝিঁঝি ধরা (বিশেষ করে বৃদ্ধাঙ্গুল, তর্জনী ও মধ্যমা আঙুলে)। কবজিতে ব্যথা, যা কনুই বা কাঁধ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোনো জিনিস ধরতে অসুবিধা বা হাত থেকে পড়ে যাওয়া। রাতে বা ঘুমের মধ্যে এই উপসর্গগুলো বাড়ে।

প্রতিকার কী

কারপাল টানেল সিনড্রোম দেখা দিলে প্রথম দিকে যদি চিকিৎসা নেওয়া না হয়, তাহলে সমস্যাটি গুরুতর হতে পারে। কিছু সাধারণ প্রতিকার নিচে দেওয়া হলো—

হাতের বিশ্রাম: যেসব কাজ হাতের ওপর চাপ ফেলে, তা এড়িয়ে চলা বা কমিয়ে দেওয়া। যেমন খুন্তি নাড়া, টাইপ করা ইত্যাদি।

স্প্লিন্ট ব্যবহার: স্প্লিন্টের ব্যবহার কবজি সোজা রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে রাতে এটির ব্যবহার বেশ কাজে দেয়।

ঠান্ডা সেঁক: প্রদাহ বা ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।

ব্যায়াম: কবজির হালকা ব্যায়াম স্নায়ুর ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।

ওষুধ: ব্যথা কমাতে আইবুপ্রোফেন বা অন্য অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ ব্যবহার করা যায়।

স্টেরয়েড ইনজেকশন: প্রদাহ কমাতে ইনজেকশন স্টেরয়েড দেওয়া যেতে পারে।

সার্জারি: যদি অন্যান্য চিকিৎসায় উপকার না হয়, তবে কারপাল টানেল রিলিজ নামক অস্ত্রোপচার করা হয়।

কারপাল টানেল সিনড্রোম খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডা. মো. মেহেদী হাসান, অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও ট্রমা সার্জন, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর)

সম্পর্কিত নিবন্ধ