মহাসড়কে আ.লীগ কার্যালয়সহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
Published: 15th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন এ অভিযান পরিচালনা করেন। সওজের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার মধ্যে আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ফলের ও মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ছিল।
ইউএনও ফারজানা রহমানের নেতৃত্বে অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুর মোর্শেদ, কাঁচপুর সার্কেলের সহকারী কমিশনার সেগুফতা মেহনাজ, ওসি মফিজুর রহমান, কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ অভিযানে অংশ নেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও তদারকির অভাবে সপ্তাহখানেক পর ফের দখলে চলে যায়। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব দোকানপাট টাকার বিনিময়ে গড়ে তোলা হয়। বিষয়টি তদারকি করে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারিতে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তিন মাসের মধ্যে ফের দখল হয়ে যায়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সওজের জায়গা দখল করে তিনটি কাঁচাবাজারসহ দুই হাজারের অধিক অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলেন প্রভাবশালীরা। স্থানীয় লোকজন বলছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে একটি চক্র মহাসড়কের জমি ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা পালানোর পর আরেক পক্ষ একই পন্থায় টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি।
সরেজমিন গেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুদিন পর পর লোক দেখানো অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করেন। বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালীদের টাকা দিয়ে ফের দোকানপাট গড়েন তারা। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যাদের টাকা দেওয়া হয়, তাদের নাম প্রকাশ করলে পরবর্তী সময়ে সেখানে তাদের ব্যবসা করতে দেওয়া হয় না।
তারা বলছেন, জায়গার অগ্রিম বাবদ ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা আর দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া বাবদ আদায় করেন। ভাঙা-গড়ার খেলায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হন প্রভাবাশালীরা। এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদ বলেন, মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফের দোকান বসালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়, এমন অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, আগে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তিন মাসের ব্যবধানে দখল হয়ে গেছে। প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ীভাবে দোকান বরাদ্দের চেষ্টা করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে দুর্ঘটনায় আহতদের বাঁচাতে ইউএনও’র দৃষ্টান্ত স্থাপন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গুরুতর আহত তিনজনের জীবন রক্ষায় মানবিক ও দ্রুত তৎপরতার নজির স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাজ্জাত হোসেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার বিশনন্দি ইউনিয়নের তালতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মদনপুর থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজি অটোরিকশা বিশনন্দি ফেরিঘাটের দিকে যাচ্ছিল। তালতলা মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা গ্যাসভর্তি একটি ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞাতনামা দুইজন পুরুষ নিহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন— কুমিল্লার রাবেয়া (৬০), মদনপুর এলাকার সিএনজি চালক আবুল বাশার (৪৫), অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ, এক নারী ও এক ১২ বছরের শিশু। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সারতি রানী রায় জানান, আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এ সময় স্থানীয় সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি ইউএনও মো. সাজ্জাত হোসেনকে অবহিত করেন। খবর পাওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে ইউএনও হাসপাতালে পৌঁছে নিজ খরচে চারটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঢাকায় নেওয়ার পর আরও দুইজন মারা যান। তবে বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন এবং তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানা গেছে।
মানবিক ভূমিকা সম্পর্কে ইউএনও মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, "মানবিক দায়িত্ব থেকেই আমি দ্রুত হাসপাতালে গিয়েছি। তখন আহতদের জীবন বাঁচানোই ছিল প্রধান কাজ। আশা করছি, তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।"
স্থানীয়রা ইউএনও'র এ উদ্যোগকে ‘সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত’ এবং ‘প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।