নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন এ অভিযান পরিচালনা করেন। সওজের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার মধ্যে আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ফলের ও মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ছিল।
ইউএনও ফারজানা রহমানের নেতৃত্বে অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুর মোর্শেদ, কাঁচপুর সার্কেলের সহকারী কমিশনার সেগুফতা মেহনাজ, ওসি মফিজুর রহমান, কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ অভিযানে অংশ নেন। 
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও তদারকির অভাবে সপ্তাহখানেক পর ফের দখলে চলে যায়। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব দোকানপাট টাকার বিনিময়ে গড়ে তোলা হয়। বিষয়টি তদারকি করে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারিতে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তিন মাসের মধ্যে ফের দখল হয়ে যায়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সওজের জায়গা দখল করে তিনটি কাঁচাবাজারসহ দুই হাজারের অধিক অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলেন প্রভাবশালীরা। স্থানীয় লোকজন বলছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে একটি চক্র মহাসড়কের জমি ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা পালানোর পর আরেক পক্ষ একই পন্থায় টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি।
সরেজমিন গেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুদিন পর পর লোক দেখানো অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করেন। বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালীদের টাকা দিয়ে ফের দোকানপাট গড়েন তারা। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যাদের টাকা দেওয়া হয়, তাদের নাম প্রকাশ করলে পরবর্তী সময়ে সেখানে তাদের ব্যবসা করতে দেওয়া হয় না।
তারা বলছেন, জায়গার অগ্রিম বাবদ ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা আর দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া বাবদ আদায় করেন। ভাঙা-গড়ার খেলায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হন প্রভাবাশালীরা। এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদ বলেন, মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফের দোকান বসালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়, এমন অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, আগে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তিন মাসের ব্যবধানে দখল হয়ে গেছে। প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ীভাবে দোকান বরাদ্দের চেষ্টা করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় র র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনওর কাছে ‘নালিশ’ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সহকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী শিক্ষকের দাবি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে বিদ্যালয়ের বারান্দায় মারধর করা হয়।

অভিযোগকারী শিক্ষকের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এস এম মজনুর রহমান। তিনি আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মণিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের উপজেলা প্রতিনিধি ও মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি।

মারধরের ঘটনায় মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল রাতে মণিরামপুর থানা, জেলা প্রশাসক এবং মণিরামপুরের ইউএনওর কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রবিউল ইসলাম।

থানায় লিখিত অভিযোগে রবিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, সহকারী শিক্ষক মজনুর রহমান বিদ্যালয়ের কোনো নিয়মনীতি মানেন না। গতকাল সকালে তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বাড়িতে চলে যান। এরপর ইউএনও বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এলে খবর পেয়ে তিনি আবার বিদ্যালয়ে ফেরেন। তখন বিষয়টি ইউএনওকে মৌখিকভাবে জানান রবিউল ইসলাম। ইউএনও বিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার পর বেলা একটার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের সামনে সব শিক্ষক–শিক্ষার্থীর সামনে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন মজনুর। একপর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে লাঠি এনে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।

এসব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে মজনুর রহমান বলেন, ‘রবিউল ইসলাম ইউএনওর কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ করেছেন। আমি বিষয়টি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে রবিউল মাথায় আঘাত লেগেছে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার দাবি করেন, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করা নিয়ে শিক্ষক রবিউল ও মজনুরের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

মারধরের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ইউএনও নিশাত তামান্না ও মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী। তাঁরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউএনওর কাছে ‘নালিশ’ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ