চট্টগ্রামের আড়তে সবজির দাম কম হলেও খুচরায় কেন বেশি
Published: 16th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের আড়ত ও পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম কমলেও খুচরা বাজারে কমেনি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আড়তে সবজি ভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। তবে চট্টগ্রাম নগরের কাঁচা বাজারগুলোয় এর প্রভাব পড়েনি। তদারকি না থাকার সুযোগে অনেক বাজারে বিক্রেতারা খেয়ালখুশি অনুযায়ী সবজির দাম রাখছেন।
চট্টগ্রাম নগরের রাহাত্তারপুল এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জুবায়ের বাজার করতে গিয়েছিলেন দুই নম্বর গেট এলাকায়। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সবজি বিক্রেতার সঙ্গে দর-কষাকষি করছিলেন তিনি। একপর্যায়ে না কিনেই ফিরে যান।
মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ব্যক্তিগত কাজ শেষে বাসায় ফেরার সময় সবজি কিনতে এসেছিলেন বাজারে। তবে অস্বাভাবিক দাম দেখে আর কেনেননি। জানালেন, একদিন আগেও ঢ্যাঁড়স কিনেছেন ২০ টাকা কেজি দরে। অথচ এখানে ৫০ টাকা চাওয়া হচ্ছিল। আর এই ঢ্যাঁড়স আড়ত পর্যায়ে কেজি প্রতি ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ পাইকারি বাজারের চেয়ে কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের ওই বিক্রেতা কেজিতে অন্তত ৪০ টাকা বেশি চেয়েছেন মোহাম্মদ জুবায়েরের কাছ থেকে।
চট্টগ্রামে সবজির সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত রিয়াজউদ্দিন বাজার। এ ছাড়া বহদ্দারহাট, চকবাজার ও কর্নেল হাটবাজারেও পাইকারি পর্যায়ে সবজি বিক্রি হয়ে থাকে। এর বাইরে কাজির দেউড়ি, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স, কর্ণফুলী মার্কেট, স্টিল মিল বাজারসহ আরও ১৫ থেকে ২০টি বাজারে খুচরা পর্যায়ে সবজি বিক্রি হয়। অধিকাংশ ক্রেতাই খুচরা পর্যায়ে বাজার করেন।
রিয়াজউদ্দিন বাজারে আড়তদারদের তথ্য অনুযায়ী, গরমের কারণে প্রায় সব সবজির দাম এখন কম। বাজারে আলু, লাউ, পটোল, ঢ্যাঁড়স, করলা, ঝিঙে, কাঁচা মরিচ, টমেটোসহ অধিকাংশ সবজির দাম প্রতিকেজি ১০ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। কেবল বেগুন, শিম ও ফুলকপির দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বাজারে সরবরাহও পর্যাপ্ত। তবে গরমের কারণে সবজি নষ্ট হচ্ছে, তাই দাম কমতির দিকে।
নগরের কাজীর দেউড়ি, চকবাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, আড়তের তুলনায় খুচরা বাজারে অনন্ত ২০ টাকা বেশি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। যেমন বাজারে লাউ, করলা, ঝিঙে, বেগুন—এসব সবজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। আবার কাঁচা পেঁপে, কাঁকরোল, শসা, গাজর—এসব বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকার বেশি দামে। অথচ আড়তে দাম ২০ থেকে ২৫ টাকার আশপাশে।
রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী বলেন, গরমে সব সবজির দামই এখন কম। খুচরা বিক্রেতাদের কিছু সবজি নষ্ট হয়। তাই হয়তো দাম সমন্বয় করে বিক্রি করছেন। তবে এত বেশি হওয়ার কথা না। দাম প্রতিদিনই ওঠা-নামা করে। সরবরাহ মোটামুটি আছে। কৃষকদের কিছু ফসল নষ্ট হয়েছে গরমের কারণে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কমপ ল ক স সবজ র দ ম দ ম কম পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে পদ্মায় ধরা পড়ল ৪২ কেজি ওজনের বাগাড়, বিক্রি হলো ৬২ হাজার টাকায়
ফরিদপুরের পদ্মা নদীতে জেলের বড়শিতে ধরা পড়েছে প্রায় ৪২ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন প্রজাতির একটি বাগাড় মাছ। মাছটি দেখতে সকাল থেকে ভিড় জমায় এলাকার মানুষ। পরে মাছটি ৬২ হাজার ২০০ টাকায় কিনে নিয়ে ভাগ করে নেন স্থানীয় ৩৮ জন ক্রেতা।
রোববার সকালে মাছটি বিক্রির জন্য চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের চর হাজীগঞ্জ বাজারে নিয়ে আসেন জেলে। বিশাল আকৃতির এই মাছ দেখতে বাজারে ভিড় করেন এলাকাবাসী। মেপে দেখা যায়, মাছটির ওজন ৪১ দশমিক ৯ কেজি।
আরও পড়ুনপদ্মা নদীতে ধরা পড়েছে ৫০ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড়, ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি২০ ঘণ্টা আগেমাছটি ধরা পড়ে চর হরিরামপুর ইউনিয়নের চর সালেপুর পশ্চিম এর হাজার বিঘের এলাকার বাসিন্দা আদু শেখের বড়শিতে। মাছটি ধরা পড়ে চর হাজীগঞ্জ বাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তরে পদ্মা নদীতে। পরে আদু শেখ অন্য জেলেদের সহযোগিতায় মাছটি নৌকায় তোলেন।
আদু শেখ বলেন, ‘আমি বহু বছর ধরে পদ্মায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরি। তবে জীবনে এই প্রথম এত বড় বাগাড় মাছ ধরতে পারলাম।’
চর হাজীগঞ্জ বাজারের আড়তদার বিশ্বনাথ মন্ডল বলেন, মাছটি সকাল সাতটার দিকে হাজীগঞ্জ বাজারে সুকুমার মালোর আড়তে আনা হয়। সেখানে ৬২ হাজার ২০০ টাকা মূল্যে কিনে নেন ইউনিয়নের ব্যাপারী গ্রামের মোশারফ হোসেন। পরে মাছটি ৩৮ জন ক্রেতা ভাগ করে নেন।
আড়তদার সুকুমার মালো বলেন, তিনি ২০ বছর ধরে চর হাজীগঞ্জ বাজারে মাছের আড়তদারি করছেন। প্রায়ই ২৫ থেকে ২৬ কেজি ওজনের বাগাড় এ বাজারে ওঠে। তবে এত বড় বাগাইড় মাছ তিনি এ পর্যন্ত এ বাজারে উঠতে দেখেননি।
চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাঈম হোসেন বলেন, পদ্মা নদীসহ বড় নদীগুলোতে এখন পানি বাড়ছে, যা মাছের চলাচলের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে। বাগাড় সাধারণত গভীর পানিতে থাকে, তবে খাবারের খোঁজে কম গভীর জায়গায় চলে আসে। তখনই এটি জেলেদের জালে বা বড়শিতে ধরা পড়ে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি অব্যাহত আছে।
বিষয়টি নজরে আনা হলে মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাঈম হোসেন বলেন, ‘বাগাড় সাধারণত বৃহৎ আকারের হয়। জাটকা বা ছোট বাগাড় মাছের ক্ষেত্রে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। তবে বড় বাগাড় মাছ ধরার বিষয়ে আইনি শিথিলতা রয়েছে।’