আমতলীতে শিক্ষার্থীদের বহন করা বাসে হামলার ঘটনায় এক শিক্ষক ও আট শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নতুন বাজার চৌরাস্তা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। 

দুই বাসের হেলপারদের মারামারিতে ছালমান নামে একজন আহত হওয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটে। আহত বাসের হেলপার ছালমানকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৬৫ শিক্ষার্থী স্কাউট ইউনিট লিডার বেসিক এবং অ্যাডভান্সড কোর্সে অংশ নিতে ১০ মে আঞ্চলিক স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বরিশালে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউনিভার্সিটির সহকারী পরিচালক ও রেজিস্ট্রার ফারহান রহমান। প্রশিক্ষণ শেষে সকাল ৯টায় তারা কাশিপুর স্কাউট ভবনের সামনে থেকে শ্যামলী পরিবহনের দুটি রিজার্ভ বাসে কুয়াকাটার উদ্দেশে রওনা করেন। বেলা ১১টার দিকে বাস দুটি আমতলীর নতুন বাজার চৌরাস্তা মোড়ে পৌঁছলে যানজটের সৃষ্টি হয়। ছাত্রদের একটি বাসের চালক  উচ্চ শব্দে হর্ন বাজালে বরিশাল-কুয়াকাটা রুটের বিসমিল্লাহ বাসের হেলপার মো.

ছালমান নিষেধ করেন। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। 

এক পর্যায়ে ড্যাফেডিলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বিসমিল্লাহর হেলপার ছালমানকে বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তাঁকে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর জের ধরে উত্তেজিত জনতা শিক্ষার্থীদের বহন করা দুটি বাসে হামলা-ভাঙচুর করে। 

বিসমিল্লাহর চালক মো. জাহিদ বলেন, আমার হেলপার ছালমানকে শ্যামলীর হেলপার ছালাম ও ছাত্ররা মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই। 

শ্যামলী পরিবহনের হেলপার মো. আব্দুস ছালাম বলেন, আমার সঙ্গে বিসমিল্লাহর হেলপারের মারামারি হয়েছে। ছাত্ররা এর সঙ্গে জড়িত নয়। 

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপপরিচালক সহকারী রেজিস্ট্রার ফারহান রহমান বলেন, দুই বাসের হেলপাররা মারামারি করেছে। সেখানে শিক্ষার্থী যায়নি। উল্টো লোকাল বাসের কয়েকজন স্টাফ শিক্ষার্থীদের বহন করা দুটি বাসে ভাঙচুর চালায়। কাচের আঘাতে সাত শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষক আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অনেকে ট্রমার মধ্যে আছে।
 
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, বাস মালিক, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে ভুল বোঝাবুঝির অবসান করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত র চ লক র বহন

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।

বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।

সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ