১০ মিনিটের বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি, ভোগান্তি
Published: 17th, May 2025 GMT
প্রচণ্ড খরা, দীর্ঘদিন ধরে নেই বৃষ্টির দেখা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করেই নেমে আসে বৃষ্টি। মাত্র ১০ মিনিটের বৃষ্টিতে পাকা সড়কে পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এমন দৃশ্য দেখা যায় জয়পুরহাটের কালাই পৌরশহরে প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কালাই-ক্ষেতলাল সড়কে।
নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পরও ওই এলাকায় জমে আছে পানি। ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালক, শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। তাদের ভাষ্য, রাস্তার দুই পাশে অপরিকল্পিত বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণ, সেইসঙ্গে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতেই তলিয়ে যায় সড়ক। শুধু তাই নয়, জমে থাকা পানি নামতেও দীর্ঘ সময় লেগে যায়।
জানা যায়, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় শহরে। এছাড়া জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়ক ও কালাই-ক্ষেতলাল সংযোগ সড়কেও চলাচল করেন অনেক মানুষ। এই সড়ক হয়ে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কালাই সরকারি মহিলা কলেজ, কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাকলি শিশু নিকেতন ও বৃহৎ কালাই হাট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থাকায় প্রতিদিন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে এই সড়কে।
এসএসসি পরীক্ষা সম্প্রতি শেষ হলেও শুরু হয়েছে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। শনিবার সকালে এই সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পরেন শিক্ষার্থীরা। পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র কালাই বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পাকা রাস্তার দুই পাশে ভবনগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা এবং পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে অল্প পানিতেই জমে হয় এক হাঁটু। দীর্ঘদিন ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পৌরবাসী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, যানবাহনের চালক ও পথচারীরা।
কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (বারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বকুল বলেন, একটি শহরে যা কিছু থাকা প্রয়োজন, বলতে গেলে তার সবই এই সড়কে অবস্থিত। শহরে যারা আসবেন, তাদের অধিকাংশই কোনো না কোনো কাজে এই সড়কে চলাচল করতে হয়। সড়কে পানি জমে থাকার সমস্যা আজকের নয়, এটি দীর্ঘদিনের। অনেকবার বলেছি, কোনো লাভ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। সড়কে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর কাপড় ও জুতা ভিজে গেছে। এ সমস্যা সমাধানের আবারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
কথা হয় কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে। তারা বলেন, এই সড়ক হয়ে সবাইকেই চলাচল করতে হয়। কেননা হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ও হাট রয়েছে। তাছাড়া এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা হয়ে আশপাশের জেলাগুলোতেও যাতায়াত করে যানবাহনগুলো। অথচ এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ওই সড়কের পাশে ইউনিক লাইব্রেরির মালিক প্রভাষক ছানাউল হক বলেন, ‘দিনদিন এ এলাকার পরিবেশ অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পাকা সড়কে জমে পানি। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনাও জমে থাকে। আসলে বলে কোনো লাভ হয় না।’
আরেক ব্যবসায়ী বাবু বলেন, ‘এ সড়ক নির্মাণ হয়েছে অনেক আগে, দুই পাশে ভবন নির্মাণ হয়েছে অনেক পড়ে। নকশা ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই, এ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সবাইকে।’
আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মাত্র ১০ মিনিটের বর্ষণে এ সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শুধু এখানেই নয়, উপজেলা পরিষদের ভিতরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস চত্বরেও একই দৃশ্য দেখা যায়। অফিস বন্ধের কারণে ওই চত্বরে লোকজন তেমন না দেখা গেলেও উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে সড়কে। এতে করে শিক্ষার্থী ও রোগী ও যানবাহনের চালকরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, সেই সাথে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শহরের ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মিশে সড়কে বৃষ্টির পানি আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে। এই অস্বাস্থ্যকর পানির ওপর দিয়ে মানুষকে রাস্তা পার হতে দেখা গেছে। যানবাহনগুলোও ধীর গতিতে পারাপার হতে দেখা গেছে।
কালাই পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ সমস্যা একদিনের নয়, চাইলেই সমাধান করা যাবে না। বেশ কয়েকবার কাজ করতে গিয়ে ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ীদের বাঁধার মুখে পড়ে ফিরে আসতে হয়েছে। তারপর আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই এই সমস্যা সমাধান করতে হবে। তা না পারলে পৌরবাসীকে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ পর ক ষ সরক র উপজ ল সমস য ই সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যায়বিচার হয়েছে, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ: সালাহউদ্দিন আহমদ
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় যে রায় হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই বিচার, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ।
আজ সোমবার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে আসামিদের অপরাধের তুলনায় এই সাজা যথেষ্ট কম। কিন্তু আইনে এর ওপরে কোনো সাজা নাই।
আজ বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে কয়েকটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যত শক্তিশালী হোক, যত দীর্ঘদিনই রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে পরিচালিত করুক, ক্ষমতা ভোগ করুক, একদিন না একদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাঁদের দাঁড়াতেই হবে।
আরও যেসব মামলা আছে, সেই মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু এটা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নয়, সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ। ভবিষ্যতে যাতে এই রাষ্ট্রে কেউ আর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম না করতে পারে, ফ্যাসিস্ট না হয়ে উঠতে পারে, একনায়কতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয়, তার একটি উদাহরণ। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটা শিক্ষা। শুধু অতীতের জন্য বিচার নয়, এটা মনে রাখতে হবে।