প্রচণ্ড খরা, দীর্ঘদিন ধরে নেই বৃষ্টির দেখা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করেই নেমে আসে বৃষ্টি। মাত্র ১০ মিনিটের বৃষ্টিতে পাকা সড়কে পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এমন দৃশ্য দেখা যায় জয়পুরহাটের কালাই পৌরশহরে প্রাণকেন্দ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কালাই-ক্ষেতলাল সড়কে। 

নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পরও ওই এলাকায় জমে আছে পানি। ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালক, শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। তাদের ভাষ্য, রাস্তার দুই পাশে অপরিকল্পিত বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণ, সেইসঙ্গে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতেই তলিয়ে যায় সড়ক। শুধু তাই নয়, জমে থাকা পানি নামতেও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। 

জানা যায়, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় শহরে। এছাড়া জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়ক ও কালাই-ক্ষেতলাল সংযোগ সড়কেও চলাচল করেন অনেক মানুষ। এই সড়ক হয়ে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কালাই সরকারি মহিলা কলেজ, কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাকলি শিশু নিকেতন ও বৃহৎ কালাই হাট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থাকায় প্রতিদিন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে এই সড়কে। 

এসএসসি পরীক্ষা সম্প্রতি শেষ হলেও শুরু হয়েছে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। শনিবার সকালে এই সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পরেন শিক্ষার্থীরা। পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র কালাই বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পাকা রাস্তার দুই পাশে ভবনগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা এবং পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে অল্প পানিতেই জমে হয় এক হাঁটু। দীর্ঘদিন ধরে এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পৌরবাসী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, যানবাহনের চালক ও পথচারীরা।

কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (বারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বকুল বলেন, একটি শহরে যা কিছু থাকা প্রয়োজন, বলতে গেলে তার সবই এই সড়কে অবস্থিত। শহরে যারা আসবেন, তাদের অধিকাংশই কোনো না কোনো কাজে এই সড়কে চলাচল করতে হয়। সড়কে পানি জমে থাকার সমস্যা আজকের নয়, এটি দীর্ঘদিনের। অনেকবার বলেছি, কোনো লাভ হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, আজ থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। সড়কে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর কাপড় ও জুতা ভিজে গেছে। এ সমস্যা সমাধানের আবারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।  

কথা হয় কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে। তারা বলেন, এই সড়ক হয়ে সবাইকেই চলাচল করতে হয়। কেননা হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ও হাট রয়েছে। তাছাড়া এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা হয়ে আশপাশের জেলাগুলোতেও যাতায়াত করে যানবাহনগুলো। অথচ এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

ওই সড়কের পাশে ইউনিক লাইব্রেরির মালিক প্রভাষক ছানাউল হক বলেন, ‘দিনদিন এ এলাকার পরিবেশ অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পাকা সড়কে জমে পানি। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনাও জমে থাকে। আসলে বলে কোনো লাভ হয় না।’

আরেক ব্যবসায়ী বাবু বলেন, ‘এ সড়ক নির্মাণ হয়েছে অনেক আগে, দুই পাশে ভবন নির্মাণ হয়েছে অনেক পড়ে। নকশা ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই, এ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সবাইকে।’

আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মাত্র ১০ মিনিটের বর্ষণে এ সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শুধু এখানেই নয়, উপজেলা পরিষদের ভিতরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস চত্বরেও একই দৃশ্য দেখা যায়। অফিস বন্ধের কারণে ওই চত্বরে লোকজন তেমন না দেখা গেলেও উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে সড়কে। এতে করে শিক্ষার্থী ও রোগী ও যানবাহনের চালকরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, সেই সাথে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শহরের ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মিশে সড়কে বৃষ্টির পানি আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে। এই অস্বাস্থ্যকর পানির ওপর দিয়ে মানুষকে রাস্তা পার হতে দেখা গেছে। যানবাহনগুলোও ধীর গতিতে পারাপার হতে দেখা গেছে। 

কালাই পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ সমস্যা একদিনের নয়, চাইলেই সমাধান করা যাবে না। বেশ কয়েকবার কাজ করতে গিয়ে ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ীদের বাঁধার মুখে পড়ে ফিরে আসতে হয়েছে। তারপর আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই এই সমস্যা সমাধান করতে হবে। তা না পারলে পৌরবাসীকে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ পর ক ষ সরক র উপজ ল সমস য ই সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করা আমার দায়িত্ব নয়: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌ পরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‍“জাতীয় নির্বাচন হবে কি হবে না, সেটা  আমার বিষয় না। নির্বাচন নিয়ে যাদের চিন্তা করার কথা তারা করবে। ইলেকশন কমিশন আছে তারা দেখবে। এ  নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই, আমার দায়িত্ব না। আমার বিষয় হলো, আমি চা শ্রমিকদের নিয়ে চিন্তা করব।”

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রম দপ্তরে চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “চা শ্রমিকদের বেতন ভাতা যা আছে, তা যথেষ্ট না। বাগানে চা উৎপাদনের খরচের চেয়ে অকশনে (নিলাম) চায়ের দাম কম পাচ্ছেন বাগান মালিকরা। এখন মালিকদের পকেটে যদি টাকা না থাকে তবে, জোর করে বেতন ভাতা আদায় করা যাবে না।”     

আরো পড়ুন:

‌‘পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সময় এসেছে’

কোরবানির সব হাটেই বসবে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক: ফরিদা আখতার

তিনি  বলেন, “চা বাগান পরিদর্শনে আসা পর্যটকদের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করতে হবে। এই প্রবেশ ফির অর্থ ব্যয় হবে চা শ্রমিকদের কল্যাণে।”

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওমর মো. ইমরুল মহসিন,  শ্রম অধিপ্তরের  অতিরক্তি পরিচালক শাহ আব্দুল তারিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, পুলিশ সুপার মো. এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা তপন দত্ত, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজার, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, গীতা রানী কানু ও লশমী গোয়ালা।

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ