পৌনে এক ঘণ্টা পর শাহবাগ ছেড়েছে ছাত্রদল, যান চলাচল স্বাভাবিক
Published: 20th, May 2025 GMT
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ের সড়ক ছেড়ে দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তারা শাহবাগ অবরোধ করে। পৌনে এক ঘণ্টা অবরোধের পর ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা সড়ক ছেড়ে দেন।
বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার পর শাহবাগ মোড় দিয়ে আবার যান চলাচল শুরু হয়েছে। অবরোধ চলাকালে ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার চাই’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দেন। বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা শাহবাগে অবস্থান করেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন ছাত্রদলের এই অবরোধ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। শাহবাগ ছাড়ার আগে নাছির উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশে ছাত্রদলের আর কোনো নেতা–কর্মীর ওপর যদি আঘাত করা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন নাছির উদ্দীন। শাহরিয়ার হত্যার এতদিন পরেও কেন ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা যায়নি, সেই প্রশ্নও রেখেছেন তিনি।
শাহরিয়ার হত্যা মামলার তদন্তে ‘গাফিলতি’র প্রতিবাদ এবং ‘প্রকৃত’ হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গত রোববার বিকেলেও পৌনে দুই ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে ছাত্রদল। সেই কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা। শাহরিয়ার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারে সরকারের সদিচ্ছার অভাব দেখা গেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাও করার হুমকিও দিয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যার বিচার চেয়ে আবার শাহবাগ অবরোধ ছাত্রদলের১ ঘণ্টা আগেগত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য নিহত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্নাতকোত্তর করছিলেন।
শাহরিয়ার হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই তিনজনকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র র শ হব গ হত য র অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।